হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন বিড়ার নির্যাতিতা তরুণী। কিন্তু বাড়ি ফিরতে না চাওয়ায় শনিবার তাঁকে হৃদয়পুরে সরকারি হোমে পাঠানো হয়। তাঁর পড়াশোনা ও ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়েছে রাজ্য সরকার। তরুণীর পরিবাররের জন্য পাকা বাড়ি এবং তাঁর মাকে পঞ্চায়েত অফিসে অস্থায়ী নিয়োগের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত বছর ২৫ জুন সঞ্জয় ব্যাপারী নামে এক প্রতিবেশী যুবক বাড়িতে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। বাঁচাতে গেলে তাঁর ভাইকে ভোজালি দিয়ে কোপানো হয়। এলাকার লোকজন যুবকটিকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। নভেম্বরে জামিনে ছাড়া পেলেও সে পাকাপাকি ভাবে এলাকায় ফেরেনি। তরুণীর অভিযোগ, সঞ্জয়ের মা শ্যামলী ও ভাই বাপি তাঁকে নানা ভাবে ভয় দেখাচ্ছিল। মামলা না তুললে তাঁদের খুনের হুমকিও দেওয়া হচ্ছিল। পুলিশের বক্তব্য, মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরেই মঙ্গলবার রাতে ইঁদুর মারার বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই তরুণী। শ্যামলী ও বাপিকে গ্রেফতার করা হলেও সঞ্জয় এবং তার বাবা এখনও পলাতক।
শুক্রবার হাবরার বিধায়ক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বারাসত জেলা হাসপাতালে তরুণীকে দেখতে গেলে তিনি বলেন, বাড়ি ফিরতে তাঁর ভয় করছে। সেখানে আর ফিরতে চান না। তাঁর বাড়ির লোকজনও সহমত হন। তরুণীর ভাইয়ের কথায়, “সঞ্জয় আর তার বাবা গ্রেফতার হয়নি। দিদি বাড়ি এলে তারা প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। প্রতিবেশীদের নানা প্রশ্নের মুখে দিদি মানসিক ভাবে ভেঙেও পড়তে পারে।”
মন্ত্রী তরুণীর পরিবারকে আশ্বাস দিয়েছিলেন, তাঁরা চাইলে সরকারি সহায়তায় মেয়েটিকে হোমে রাখার ব্যবস্থা করা হবে। তরুণীর মা সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সঞ্জয় বনশলের কাছে আবেদন করেন। সেই মতো তাঁকে হৃদয়পুরের সরকারি হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। দুপুরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি হোমে যান। সঙ্গে ছিলেন জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ জ্যোতি চক্রবর্তী।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজ্য সরকার হোমেই মেয়েটির পড়াশোনার ব্যবস্থা করবে। সমাজকল্যাণ দফতরের এক অফিসার তাঁর কাউন্সেলিং করবেন বলে জানিয়েছেন।” মন্ত্রীর আশ্বাস, সোমবার থেকে স্থানীয় রাউতারা গ্রাম পঞ্চায়েতে মেয়েটির মা অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করবেন, জেলা পরিষদের তরফে দ্রুত তাঁদের পাকা বাড়িও করে দেওয়া হবে। তরুণীর দিদি বলেন, “বোন হোমে যাওয়ায় আমরা এখন অনেকটা নিশ্চিন্ত।” তরুণী জানান, পড়াশোনা করে তিনি নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান। |