শীতমেয়ে
কনক ঠাকুর
শীত কি তুই দুষ্টু মেয়ে
শীত ছড়িয়ে দিস
ঠান্ডাতে কী হাড়কাঁপুনি ইস!
তোর কথা তো মা বলেছে
ভালই তোকে চেনে
শীত দিয়েছিস কোথার থেকে এনে?
শোন না রে তুই শীতমেয়েটা
রোদ দিবি একমুঠো
দিলে কিন্তু লজেন্স পাবি দুটো।
একটুখানি রোদ যদি পাই
লাগবে ভাল তোকে
শীতমেয়ে তুই মিষ্টি সবার চোখে। |
শীতকন্যা
চৈতন্য দাশ
যেই না রাতে ঘুমিয়েছি পুবের জানলা খুলে
শীতকন্যাও ঢুকল ঘরে দিব্যি হেলেদুলে।
হেমন্তটা বেজায় পাজি, কিচ্ছুটি না বলে
জানলা গলে চুপিচুপি হঠাত্ গেল চলে!
কপাল জুড়ে দিয়ে হাজার চুমো
বললে, এ বার লেপটা মুড়ে ঘুমো।
রাতের ছুটি, ভোর জেগেছে মাঠে
মা ও আমি উঠে বসি খাটে।
সূর্য তখন কালার-ব্যাঙ্কে গিয়ে
রঙের ছোপে মুচকি হাসি নিয়ে
রঙে রঙে দেয় ভরিয়ে আলো
পিছু হাঁটে শীতের ভুলোকালো।
সূর্য হাসল—বইল আলোর বন্যা
গোমড়া মুখে চলল শীতের কন্যা। |
শীতের পরিচয়
দীপঙ্কর গোস্বামী
নদীর জলে উঠছে ধোঁয়া
জয়নগরে সাজছে মোয়া
খেজুর গাছে ঝরছে রস
ক্রিকেট খেলায় হচ্ছে টস
কমলালেবু ছাইছে বাজার
মরশুমি ফুল ফুটছে হাজার
গন্ধে মাতায় নলেন গুড়
হিমেল হাওয়া ফুরফুর
পিঠেপুলি স্বাদে ভরা
এ সময়ই তো হবে গড়া
মিঠে কড়া দুষ্টু রোদ
ছুঁয়ে দেবে স্বস্তি বোধ
কারণটা যে আর কিছু নয়
দিচ্ছে শীত তার পরিচয়। |
শীতকালটা
সুনীতি মুখোপাধ্যায়
ছায়ার এখন মন্দা বাজার,
রোদের বাজার সবজি,
রোদ-নদীতে ডোবাই শরীর,
ঠান্ডা হাঁটু-কব্জি।
ছায়ায় ঢাকা পথগুলোতে
না হাঁটলেই স্বস্তি,
আইসক্রিমের কমতি কদর,
চা-কফিতেই মস্তি।
তবে কিনা, পিঠে পুলি
নলেন গুড়ের গন্ধ,
এ সব মিলে শীতকালটা
লাগে না খুব মন্দ। |
শীতের মজা
জয়নাল আবেদিন
শীতের মজা চোখ ঢুলঢুল কমলালেবুর কোয়া
শীতের মজা মাঠে ক্রিকেট লেপের ভেতর শোয়া।
শীতের মজা গরম জামা খেজুর বসের গন্ধ
শীতের মজা চড়ুইভাতি শিশির পড়ার ছন্দ।
শীতের মজা পালং কপি শীতের পিঠে পুলি
শীতের মজা আগুনের ওম উড়ন্ত বকগুলি।
শীতের মজা ফুলের বাহার সার্কাস হইচই
শীতের মজা দুব্বো ঘাসে ছড়িয়ে থাকা খই। |