লাল টি-শার্ট কি প্রতীকী? দক্ষিণ আফ্রিকায় ভরাডুবির পর ভারতীয় দলের ক্রিকেটাররা রবিবার সাত সকালে নিউজিল্যান্ডের বিমানে উঠবেন এই লাল টি-শার্ট পরেই। যা গায়ে চাপিয়ে শনিবার বিকেলে সাংবাদিকদের সামনে এলেন ভারত অধিনায়ক। নিউজিল্যান্ডের জন্য এটা কি কোনও ‘রেড অ্যালার্ট’?
ক্যাপ্টেন কুল অবশ্য মুখে বলছেন অন্য কথা। তাঁর বক্তব্য, “লাল রং বলে তেমন কিছু ভাববেন না আবার। আমাদের প্র্যাকটিস টি-শার্টও তো লাল আর কালো। এটা কিছু না। দলে নতুন স্পনসর, তাই। এ ছাড়া আমাদের কিছু পরিবর্তন হয়নি।” নিউজিল্যান্ডে ভারতীয় দলের পারফরম্যান্সে কোনও পরিবর্তন হবে কি? ধোনির উত্তর, “নিউজিল্যান্ডে আমরা খারাপ খেলার জন্য যাচ্ছি এমনটা ভাবছেন কেন? যে ‘ট্যাগ’-টা (ঘরে বাঘ) জুড়ে দেওয়া হচ্ছে আমাদের দলের সঙ্গে, সেটাও মেনে নিতে পারছি না। মিডিয়া অবশ্য আমাদের গায়ে এই তকমাগুলো সাঁটতে ভালবাসে। তবে নিউজিল্যান্ডে ভাল সিরিজ হবে। আগেও ওখানে ভাল খেলেছি। দেখবেন, এ বারও তাই হবে।” |
নতুন চুলের ছাঁট নিয়ে ধোনি চললেন হ্যাডলির দেশে। শনিবার মুম্বইয়ে এক সেলুন উদ্বোধনে। ছবি: পিটিআই। |
স্টেইনদের দেশে ব্যর্থতার সাফাই গেয়ে বললেন, “দক্ষিণ আফ্রিকাতে তো খারাপ খেলিনি আমরা। বিশেষ করে টেস্টে। শেষ টেস্টে দু-আড়াই ঘন্টার একটা সেশন খারাপ খেলেছি। তাতেই গণ্ডগোল হয়েছে। কিন্তু বাকিটুকুর কথা ভাবুন, আমাদের পারফরম্যান্স মোটেই খারাপ হয়নি।” স্যর রিচার্ড হ্যাডলির দেশে পা দেওয়ার আগে যে এই ধারণাটাই তাঁদের আত্মবিশ্বাস জোগাবে, তা অধিনায়কের কথাতেই স্পষ্ট।
এ বার নিউজিল্যান্ডে গিয়েও এমনই ভাল খেলবেন ভারতীয়রা? কোরি অ্যান্ডারসন, জেসি রাইডাররা যেমন অপেক্ষা করে রয়েছেন শামিদের জন্য, তেমন কাইল মিলস, ম্যাকলেনাঘানদের মতো পেসাররা রয়েছেন কোহলি, রোহিত, ধবনদের অপেক্ষায়। ধোনি বলছেন, “ওখানে এখন অনেক ভাল ভাল ক্রিকেটাররা খেলছে। ওখানকার মাঠগুলোও একটু অন্য রকমের। ফিল্ড প্লেসিং করতে খুব অসুবিধা হয়। ওখানে গিয়ে সেগুলো ঠিক করে নিতে হবে আমাদের। তার আগে আমাদের সমস্যাগুলো মেটানো দরকার।” কী সেই সমস্যা? ধোনির বক্তব্য, “বিশেষ করে টেল এন্ডারদের ব্যাট করতে না পারাটা বড় সমস্যা। আট থেকে এগারো নম্বরকে অন্তত উইকেটে টিকে থেকে লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের সাহায্য করতে হবে। আমার নিজের এই সমস্যাটা হচ্ছে। ব্যাট করতে নেমে দেখছি উল্টো দিক থেকে টেল এন্ডাররা একের পর এক ফিরে গেল। এ জন্য আমার অবদানেও খামতি থেকে যাচ্ছে। এই জায়গাটা আমাদের ঠিক করতেই হবে।”
খোশ মেজাজেই ছিলেন ক্যাপ্টেন কুল। আগের দিন মুম্বইয়ে ইন্টারন্যাশনাল বাইক ফেস্টিভালের উদ্বোধন করেছেন। ক্রিকেট ছাড়া যা তাঁর সবচেয়ে প্রিয় বিষয়। কিন্তু রঞ্জি ট্রফিতে তাঁর দলের ক্রিকেটারদের খেলতে দেওয়া নিয়ে রাহুল দ্রাবিড় যে দাবি সম্প্রতি তুলেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন করতেই সেই মেজাজটা উধাও হয়ে গেল। প্রথমে বললেন, “আমি ঘরোয়া ক্রিকেট দেখিনি, খবরও রাখিনি।” তার পরের সংযোজনটুকু ব্যাঙ্গের। বললেন, “কোয়ার্টার ফাইনালটা কবে থেকে যেন?” রবিবারই যে শেষ দিন, সেটা মনে করিয়ে দিতে বললেন, “তা হলে আপনারাই বলুন, কালই তো আমাদের যাওয়া। ওরা তা হলে আমাদের সঙ্গে যেত কী করে? দুটো সফরের মধ্যে যে দশ দিনের ফারাক, সেই সময়ে তো ওদের বিশ্রাম দিতেই হবে। এমনিতেই শিডিউলের চাপ থাকে। তার উপর এটুকু বিশ্রাম না দিলে চলে?” যেমন হাসিমুখে এসেছিলেন, সাংবাদিক বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তেমন হাসি কিন্তু ধোনির মুখে দেখা গেল না! |