মেট্রো প্রকল্পের জন্য রাস্তার মাঝে বুলেভার্ড থেকে সরানো হয়েছিল বৈদ্যুতিন খুঁটি। চার বছর পার। মেট্রো চলাচলের জন্য উড়ালপুলও তৈরি হয়েছে। তবু বসল না খুঁটি। ঘটনাস্থল সল্টলেকের অফিসপাড়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। আর এর জেরে সল্টলেকের দত্তাবাদ থেকে জে কে সাহা সেতুর মাঝে প্রতিদিন একাধিক জায়গা অন্ধকারে ডুবে থাকে। যার মধ্যে অফিসপাড়ার রাস্তাও রয়েছে।
এ দিকে, কেন বৈদ্যুতিন খুঁটি বসল না, তা নিয়ে বিধাননগর পুরসভা ও ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষের মধ্যে শুরু হয়েছে চাপান-উতোর। মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই বৈদ্যুতিন খুঁটি বসানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ পুরসভাকে দিয়েছেন তাঁরা। সেই দাবি খারিজ করে বিধাননগর পুরসভার পাল্টা দাবি, বৈদ্যুতিন খুঁটি সরানো, প্রকল্প এলাকায় দু’টি মোড়ে ‘আইল্যান্ড’ তৈরির মতো কিছু কাজের জন্য মেট্রো টাকা দিয়েছিল। নতুন করে বৈদ্যুতিন খুঁটি বসানোর জন্য দেয়নি।
পথচারী থেকে স্থানীয় বাসিন্দা সকলেরই অভিযোগ, সিটি সেন্টার থেকে করুণাময়ী হয়ে জে কে সাহা সেতু পর্যন্ত রাস্তার একাধিক জায়গায় আলো থাকে না। দীর্ঘ দিন একই অবস্থা। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। |
এখনও বিদ্যুৎহীন রাস্তা। ছবি: শৌভিক দে। |
সূত্রের খবর, বিধাননগরে তিনটি জায়গায় মেট্রোর স্টেশন তৈরি হয়েছে। যে সব স্টেশনের কাজ হয়নি, সেগুলির নীচে বৈদ্যুতিন খুঁটি না বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। তা জানানো হয় বিধাননগর পুরসভাকেও। সম্প্রতি সে সব জায়গায় আলো সরবরাহের জন্য মেট্রো কর্তৃপক্ষ বিধাননগর পুরসভাকে জানান। সে অনুযায়ী সম্ভাব্য ব্যয় বরাদ্দের হিসেব পাঠায় পুরসভা। তা নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত। কারণ, ওই হিসেবের সঙ্গে স্টেশন ছাড়াও প্রকল্প এলাকায় একাধিক অংশে বৈদ্যুতিন খুঁটি লাগানোর ব্যয়ের হিসেব পাঠায় পুরসভা।
এক মেট্রো-কর্তার দাবি, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জন্য বিধাননগরের দত্তাবাদ থেকে জে কে সাহা সেতু এলাকা হয়ে এ কে-এ এল ব্লক পর্যন্ত মোট ১২০টি বৈদ্যুতিন খুঁটি সরানো হয়েছিল। পুনরায় তা লাগাতে বছর চার আগেই পুরসভাকে দু’টি ভাগে মোট ৩৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। মেট্রো স্টেশন ছাড়া বাকি অংশে পুরসভার বৈদ্যুতিন খুঁটি বসানোর কথা। তা হলে কেন সে সব জায়গার জন্য পুরসভা আবার ব্যয়ের হিসেব পাঠাবে?
মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, চার বছর আগের দেওয়া টাকায় কী কাজ হল, তা পুরসভার কাছে জানতে চেয়ে বিধাননগর পুরসভার কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যদিও পুরসভার তরফে সদুত্তর মেলেনি।
অবশ্য বৈদ্যুতিন খুঁটির কারণে টাকা দেওয়ার দাবি খারিজ করেছেন বিধাননগর পুর-কর্তৃপক্ষ। চেয়ারম্যান পারিষদ অশেষ মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, বৈদ্যুতিন খুঁটি বসাতে এ রকম কোনও টাকা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানেন না। মেট্রো প্রকল্প এলাকায় বিদ্যাসাগর ও সিটি সেন্টার মোড়ে দুটি আইল্যান্ড তৈরির খরচের টাকা দিয়েছিল মেট্রো।
তবে তিনি জানান, মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা বৈদ্যুতিন খুঁটি বসিয়ে আলো সরবরাহের জন্য টাকা দেবেন। সে অনুযায়ী কাজও শুরু হয়েছে। যদিও মেট্রোর এক কর্তার দাবি, যে কাজের জন্য এক বার টাকা দেওয়া হয়েছিল, পুনরায় তার জন্য টাকা দিতে গেলে দফতরের কাছে কাজের হিসেব দেখাতে হবে। আর এ প্রসঙ্গে বিধাননগর পুর-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখা হবে। |