বিমান ও ট্রেন রুখে খলনায়ক কুয়াশাই
বিমান ওড়া তো দূরের কথা, ঘন কুয়াশায় দু’হাত দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটাকেও দেখা যাচ্ছিল না! এই অবস্থায় শুক্রবার সকালে কলকাতা বিমানবন্দরে সাড়ে তিন ঘণ্টারও বেশি উড়ান চলাচল বন্ধ থাকে। বিমানবন্দরের খবর, কুয়াশায় রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের হেলিকপ্টারেরও উড়তে দেরি হয়েছে। সকাল ৯টা পর্যন্ত লোকাল এবং দূরপাল্লার ট্রেনও চলেছে দেরিতে। হাওড়া ও শিয়ালদহমুখী রাজধানী এক্সপ্রেসের সফরও বাগড়া দেয় কুয়াশা। মধ্য ভারতের নতুন একটি ঘূর্ণাবর্তের জেরেই কুয়াশার এই দাপট বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর।
ঘূর্ণাবর্ত এ বার মরসুমের সূচনা থেকেই শীতের শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবহবিদেরা বলছেন, আগের ঘূর্ণাবর্ত বিদায় নিতে না-নিতেই নতুনটির দাপটে বাতাসে জলীয় বাষ্প বাড়ছে। সেই জলীয় বাষ্পই সম্পৃক্ত হয়ে তৈরি করছে কুয়াশা। পরিবেশবিদেরা অবশ্য গাঢ় কুয়াশার জন্য বাতাসে ক্রমবর্ধমান ধূলিকণাকেও দায়ী করছেন।
উড়ানে বিঘ্ন ঘটায় এ দিন সকালে কয়েকশো যাত্রী বিমানবন্দরে আটকে পড়েন। কুয়াশার জন্য কলকাতায় নামতে না-পেরে অন্য শহরে চলে যেতে বাধ্য হয় তিনটি বিমান। “দৃশ্যমানতা কমতে কমতে প্রায় শূন্যে পৌঁছে গিয়েছিল,” বললেন বিমানবন্দরের এক অফিসার। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ভোরে কুয়াশার মধ্যেই জেট এয়ারওয়েজের একটি ছোট বিমান (এটিআর) শিলচর উড়ে যায়। তার পর থেকে আর কোনও বিমান উড়তে পারেনি। কম দৃশ্যমানতা ছোট বিমানের ওড়ার পথে বিশেষ বাধা হয় না। কিন্তু কুয়াশা বেশি হলে বড় বিমান উড়তে পারে না। এ দিন সকালে কলকাতা থেকে আর কোনও ছোট বিমান ছিল না।
অনেক সময় দৃশ্যমানতা কম থাকলেও বিমান উড়তে পারে। কিন্তু সে-ক্ষেত্রে ওড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোনও বিপত্তি ঘটলে যাতে জরুরি অবতরণ করা যায়, সেটাও মাথায় রাখতে হয় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বা এটিসি-কে। জরুরি অবতরণের জন্য ইনস্ট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম (আইএলএস) রয়েছে কলকাতা বিমানবন্দরে। তার সাহায্যে ৩৫০ মিটার দৃশ্যমানতাতেও বিমান নামতে পারে। কিন্তু এ দিন দৃশ্যমানতা ৩৫০ মিটারেরও নীচে নেমে যাওয়ায় আইএলএস দিয়েও বিমান নামানো যেত না। “কুয়াশার মধ্যে ওড়ার অনুমতি না-দেওয়ার এটাও অন্যতম কারণ,” বলেন এক এটিসি অফিসার। কুয়াশার জন্য চেন্নাই থেকে কলকাতার মাথার উপরে এসেও ভুবনেশ্বর উড়ে যায় স্পাইসজেটের একটি বিমান। দিল্লি থেকে কলকাতায় এসেও ফের দিল্লি ফিরে যেতে হয় গো-এয়ারের বিমানকে। বেঙ্গালুরু থেকে কলকাতামুখী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান চলে যায় ভুবনেশ্বরে। সকালের কুয়াশার ধাক্কায় সারা দিনই কলকাতা থেকে বিমান ওঠানামায় দেরি হয়েছে বলে বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে। সকাল পৌনে ৯টা নাগাদ আস্তে আস্তে পরিষ্কার হতে শুরু করে আকাশ। বেলা ১১টা ১০ মিনিটে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে মালদহের চাঁচল যাওয়ার কথা ছিল রাষ্ট্রপতির। কিন্তু কলকাতার আকাশ তত ক্ষণে পরিষ্কার হয়ে গেলেও মালদহে কুয়াশা না-কাটায় কপ্টারের ওড়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ খবর রাষ্ট্রপতিকে জানিয়ে দেওয়ায় তিনি রাজভবনেই অপেক্ষা করেন। মালদহের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরে, বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে বিমানবন্দরে পৌঁছন তিনি। তার দু’মিনিটের মধ্যে তাঁর হেলিকপ্টার মালদহের উদ্দেশে উড়ে যায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.