রাতে এসে মাছি নিয়ে গেল টাটকা ক্ষীরকদম
বাবা, মাছি সন্দেশ খাচ্ছে!
বাবা বললেন মাছি তো রোজই খায়। কত আর খাবে, খাক গে...
সব সন্দেশ সাফ করে গোপাল ভাঁড় চোখ মটকে চলে যাওয়ার পরে দুপুরের ভাত-ঝিমুনি কাটিয়ে উঠে ময়রার চোখ কপালে! ছেলের পিঠে চ্যালাকাঠ ভাঙলেন বলে!
কিন্তু বিষ্ণুপুরের আনন্দ মণ্ডল চ্যালাকাঠ ভাঙবেন কার পিঠে? তাঁর দোকানে মাছি তো দুপুরে ঢোকেনি, ঢুকেছিল রাতদুপুরে। সে কেমনতর মাছি রোগা না মোটা, কালো না ধলো, টেকো না বাবরি চুল খোদায় মালুম। সকালে দোকানে এসে তাঁর শুধু মালুম হয়েছে, আস্ত এক থালা ক্ষীরকদম উধাও।
তবে বৃহস্পতিবার নিশুতিরাতে শুধু ক্ষীরকদম চাখতেই যে মাছি এসেছিল, তেমনটা নয়। ক্যাশবাক্সও সাফ। শুধু আনন্দবাবুর আনন্দই নয়, বিষ্ণুপুর স্টেশন ঘেঁষা সত্যজিৎ স্ট্যাচু এলাকায় সাতটা দোকানের হরেক মাল সাবড়ে সে হাওয়া। শুক্রবার সকালে ঝাঁপ তুলতে এসে দোকানিদের আর কপাল চাপড়ানো ছাড়া গতি কী?
দোকানের তালা ভাঙা দেখেই আনন্দবাবু বুঝেছিলেন, কার পায়ের ধুলো পড়েছে। দোকানে এ দিক-ও দিক চেয়ে হিসেব মিলিয়ে নিচ্ছিলেন ক্যাশবাক্সে ১০ টাকার বান্ডিলটা কাল রাতেও ছিল, এখন নেই। রসের গামলায় রসগোল্লা, পান্তুয়া কালকের মতো হাবুডুবু খাচ্ছে। কিন্তু আগের রাতে ঠান্ডার মধ্যে ১২টা পর্যন্ত যে ক্ষীরকদম বানালেন, তা গেল কোথায়? শো-কেস থেকে ট্রে-সুদ্ধু হাপিস।
অঙ্কন: সুমিত্র বসাক।
কাঁচুমাচু মুখে আনন্দবাবু বলেন, “শুক্রবার বন দফতরের বরাত ছিল। তাই ৫০টা ক্ষীরকদম তৈরি করে রেখে গিয়েছিলাম। দাম তিন টাকা করে।” রাতে দোকানে তালা মারতে-মারতে ভেবেছিলেন, কাজ মিটল। সকালে আর খদ্দের সামলানোর পাশাপাশি মিষ্টি গড়ার হ্যাপা পোয়াতে হবে না। “ও বাবা, এসে দেখি সব চোরের পেটে গিয়েছে।” সব্বোনাশ! বন দফতরের বাবুরা এ বার খাবেন কী?
সাধের ক্ষীরকদমের জন্য যে একটু হাত-পা ছড়িয়ে দুখ্খু করবেন, সেই সৌভাগ্য অতএব আনন্দবাবুর হয়নি। বরং একটু সামলে উঠেই তিনি ফের ছানা জোগাড় করার জন্য হাঁকডাক জুড়ে দেন। খবর পেয়ে পরে পুলিশ এসেছিল। তারাই বিষ্ণুপুর স্টেশনের কাছে ক্ষীরকদমের ফাঁকা ট্রে খুঁজে পায়। ফিরে পেয়ে মনটা ফের হু-হু করে ওঠে আনন্দবাবুর।
কাছেই দাদার সঙ্গে স্টেশনারি-পান-বিড়ির দোকান চালান বুবাই দত্ত। তেতো গলায় বুবাই বলে, “ছোট কৌটোয় খুচরো পয়সা ছিল। চোর ব্যাটা তা তো নিয়েইছে, প্যাকেট-প্যাকেট সিগারেটও নিয়ে পালিয়েছে। ক্ষীরকদম সাঁটিয়ে এখন বসে ফুঁকছে বোধহয়।” বিষ্ণুপুর থানার আইসি স্বপন দত্ত বিড়বিড় করেন, “কম দিন তো চোর-পুলিশ খেলছি না। মিষ্টি নিয়ে চোর পালায়, জন্মে শুনিনি!”
কী করেই বা শুনবেন? স্বপনবাবু তো আর গোপাল ভাঁড়ের কৃষ্ণনগরে কোতোয়াল হয়ে জন্মাননি!



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.