রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন প্রতিটি ব্লকে কৃষি বাজার বা কিষান মান্ডি তৈরি করা হবে। যেখানে চাষিরা তাঁদের উৎপাদন নায্য দামে বেচতে পারবেন। কিন্তু চাষিদের স্বার্থে ঘোষিত ওই প্রকল্পের অগ্রগতি একেবারেই সন্তোষজনক নয় দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। জেলার দুই মহকুমা ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপে বেশিরভাগ ব্লকেই জমি জটে আটকে গিয়েছে কিষান মান্ডি তৈরির কাজ।
রাজ্যের কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, “রাজ্যে ৩৪১টি ব্লকের মধ্যে ইতিমধ্যে ১০৫টি ব্লকে কৃষি বাজারের জন্য ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব ব্লকেই কাজ শুরু হবে। এক একটি বাজারের নির্মাণ খরচ ধরা হয়েছে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকা।” |
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ দুই মহকুমা মূলত কৃষিপ্রধান এলাকা। এলাকার চাষিরা তাঁদের উৎপাদিত ফসল সঠিক দামে বিক্রি করতে পারেন, ফড়েদের কাছে যাতে প্রতারিত না হন সে জন্য রাজ্য সরকার প্রতিটি ব্লকে কৃষি বাজার তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। ডায়মন্ড হারবারের ৯টি ব্লকের মধ্যে ডায়মন্ড হারবার-২ ব্লকে চেওড়া গ্রামের কাছে প্রায় তিন একর জমিতে এবং মথুরাপুর-১ ব্লকে মথুরাপুর রেলগেটের কাছে ৬ একর জমিতে কৃষি বাজারের জন্য ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। বাকি ৭টি ব্লক ডায়মন্ড হারবার-১, মগরাহাট-১ ও ২, ফলতা, মন্দিরবাজার, কুলপি ও মথুরাপুর-২ তে জমি না পাওয়ার কারণে কাজই শুরু হয়নি।
অন্যদিকে কাকদ্বীপ মহকুমার সাগর, নামখানা, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা এই চারটি ব্লকের মধ্যে সাগরে রুদ্রনগরের কাছে এবং পাথরপ্রতিমা গঞ্জের বাজারের কাছে জমি পাওয়া গেলেও এখনও নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি।
ঠিক হয়েছে কৃষি বাজারগুলিতে থাকবে হিমঘর, সেখানে চাষিরা তাঁদের উৎপাদিক অতিরিক্ত সবজি রাখতে পারবেন। হিমঘরের অভাবে উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ার কারণে প্রতি বছর চাষিদের অনেক সব্জি পচে নষ্ট হয়। এতে তাঁদের ক্ষতি হয়। কিষান মান্ডি তৈরি হলে সেই ক্ষতি থেকে তাঁরা বাঁচতে পারবেন। তা ছাড়া ফড়েদের দাপট থেকেও রেহাই পাবেন। কিন্তু অধিকাংশ ব্লকেই এখনও কিষান মান্ডি বা কৃষি বাজার তৈরি না হওয়ায় কবে চাষিরা নতুন ব্যবস্থার সুফল পাবেন তা অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। |