ডিসেম্বর বা জানুয়ারির শীতল সন্ধ্যাগুলোয় নিয়ম করে নাটক দেখা ক্রমশ একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে মফস্সলের মানুষদের। কল্যাণী, রানাঘাট, শান্তিপুর বা কৃষ্ণনগরে প্রতি শীতে আয়োজিত বিভিন্ন নাট্য উৎসব ঘিরে স্থানীয় মানুষের মধ্যে বেড়ে চলা আগ্রহ সে রকমটাই বলছে। আগ্রহ এতটাই যে কোথাও টিকিট বিক্রি শুরু হতে না হতেই শেষ। আবার কোথাও প্রিয় নাটকের অতিরিক্ত শো’-এর জন্য দাবী উঠছে উদ্যোক্তা বা খোদ নাট্য দলের কাছেই।
শীতের নদিয়ার অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠেছে কল্যাণী নাট্য চর্চা কেন্দ্রের নাট্য উৎসব, যা এবার ১৯ বছরে পা দিল। ডিসেম্বরের ১৭ থেকে ২৬ পর্যন্ত চলা এই নাট্য উৎসব তুমুল সারা ফেলেছে দর্শকদের মধ্যে। স্থানীয় দল এবং কলকাতার নামী দল একই মঞ্চে উপস্থাপনা করেছেন নাটক শেষে শীতের রাতেও বিতর্কে তেতে উঠেছে কল্যাণী ঋত্বিক সদনের সামনের চায়ের দোকান। ‘ক্যালিগুলা’ নাকি ‘ওথেলো’, ‘নাচনি’ নাকি ‘রাজার খোঁজে’ নিয়ে।
এই নাট্য উৎসবের উদ্যোক্তা তথা কল্যাণী নাট্য চর্চা কেন্দ্রের পরিচালক-অভিনেতা কিশোর সেনগুপ্ত বলেন, “ঠিক এই জন্যেই নাট্য উৎসব শুরু করে ছিলাম। যাতে কলকাতায় না গিয়েও নাটক দেখা যায় নিয়মিত এবং নিজের মত করে সেই সব নাটক নিয়ে নিজের শহরে বসেই চর্চা করা যায়। সেটা কিছুটা হলেও করতে পারা গিয়েছে।” প্রতি বছর ডিসেম্বরের প্রথম দিন থেকে এই উৎসবের টিকিট বিক্রি শুরু করেন উদ্যোক্তারা। এবার সেদিন ছিল রবিবার। যার ফল প্রথম দিনেই অধিকাংশ টিকিট বিক্রি হয়ে যায়।
১৯তম নাট্য উৎসবে স্থানীয় দল হিসেবে যোগদান করেছিল কল্যাণী উদয়ন। তাদের প্রযোজনা ছিল দেবল গুহরায় পরিচালিত ‘ব্ল্যাকআউট’। এছাড়া ছিল সায়কের ‘ধ্রুবতারা’, অন্য থিয়েটারের ‘ছোট ছোট বাড়ি’, নান্দীপটের ‘কৃষ্ণপুরের রূপকথা’, স্বপ্নসন্ধানীর ‘থানা থেকে আসছি’, রঙরূপের ‘নীল রঙের ঘোড়া’, নয়ে নাটুয়ার ‘ওথেলো’, প্রাচ্যের ‘ক্যালিগুলা’, নান্দীকারের ‘নাচনী’, সংস্তবের ‘স্পর্ধাবর্ণ’ এবং বহুরূপীর ‘রাজার খোঁজে’। উদ্যোক্তা সংস্থা কল্যাণী নাট্য চর্চা কেন্দ্র এই উৎসবে এবার দুটি নাটক মঞ্চস্থ করেছে। একটি তাদের পুরোনো নাটক ‘মেয়েটি’ অন্যটি ‘গোড়ায় গলদ’। দুটি নাটকেরই পরিচালক কিশোর সেনগুপ্ত। |