জেলা প্রশাসনের নির্দেশের তোয়াক্কা না করে প্রশাসনিক ভবনের দু’শো মিটারের মধ্যেই মাইক বাজিয়ে সভা করেছিল শাসক দল। ‘জবাব’ দিতে দু’দিনের ব্যবধানেই ওই নির্দেশ ভেঙেই দলীয় সভার আয়োজন করেছিল মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস।
ক্ষুব্ধ জেলা প্রশাসন বিষয়টি ভাল চোখে দেখেনি। নির্দেশ ‘অমান্য’ করার নালিশ জানিয়ে একই সঙ্গে শাসক দল এবং কংগ্রেসের বেশ কয়েক জন নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতের কাছে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমতি চাইল পুলিশ। অভিযুক্তদের তালিকায় শাসক দলের মন্ত্রী সুব্রত সাহা-সহ বেশ কয়েক জন জেলা তৃণমূলে নেতা যেমন রয়েছেন তেমনই রয়েছেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীও।
এ দিন পুলিশের অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের কার্যনির্বাহী সভাপতি হুমায়ুন কবীর অবশ্য নির্বিকার গলায় বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে।” আর, রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর জবাব, “গাঁধী মূর্তির পাদদেশে যেখানে সভা করা হয়েছে সেখানে সামবেশ করা বহরমপুরের মানুষের জন্মগত অধিকার। জেলে গেলেও সেই অধিকার আমি ছাড়তে পারব না।”
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে অভিযোগ দায়ের করার পরেও আদালতের অনুমতির প্রয়োজন হচ্ছে কেন?
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের ব্যাখ্যা, নেতা মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি ছিল ধর্তব্যযোগ্য নয় বা নন কগনিজেবল অপরাধ। ওই অপরাধ জামিন অযোগ্যও নয়। ফলে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হলে আদালতের অনুমতি নেওয়া কাম্য। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, সরকারি বিধি ভাঙা সত্ত্বেও জেলা পুলিশ এমন ‘লঘু’ ধারায় অভিযোগ দায়ের করল কেন।
জেলা পুলিশ কর্তাদেরই একাংশের অভিযোগ, যেহেতু ওই বিধি ভাঙার ঘটনায় শাসক দল ও তাদের মন্ত্রীরা জড়িত তাই ধর্তব্যযোগ্য নয় এমন ধারায় অভিযোগ দায়ের করেছে বহরমপুর থানার পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “আদালত যা নির্দেশ দেবে সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।”
কিছু দিন আগে, মুর্শিদাবাদের জেলাশাসকের দফতর থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়, কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ভবনের দু’শো মিটারের মধ্যে মাইক বাজিয়ে সভা-সমাবেশ করা যাবে না। তবে সে নির্দেশ অমান্য করে ৬ জানুয়ারি প্রশাসনিক ভবনের গায়ে, সুইমিং পুল চত্বরে রীতিমতো মঞ্চ বেঁধে, সজোরে মাইক বাজিয়ে সভা করে জেলা যুব তৃণমূল। দু’দিন পরেই ওই সভাস্থলের সামান্য তফাতে একই ভাবে সভা করে জেলা কংগ্রেস। |