আত্রেয়ীদের খুনের তদন্তে এ বার সিআইডির গোয়েন্দারা এলেন বহরমপুরে। শুক্রবার সিআইডি-র স্পেশাল সুপারিনটেন্ডেন্ট চিরন্তন নাগের নেতৃত্বে ৬ জনের একটি দল বহরমপুর আসেন। চিরন্তনবাবু ছাড়াও ওসি (হোমিসাইড), ফটোগ্রাফার, আঙুলের ছাপ বিশেষজ্ঞরা ওই দলে রয়েছেন। এদিন সকালে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখার পাশাপাশি আবাসিকের সঙ্গেও তাঁরা কথা বলেন। তবে ওই খুন প্রসঙ্গে চিরন্তনবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ওই খুনের তদন্তে জেলা পুলিশ সুপারকে সহযোগিতা করতেই রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের ওই দল পাঠানো হয়েছে।”
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজয়াদেবীর স্বামীকে পুরী থেকে আটক করে আনার পরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। ২০০৪ সালে বহরমপুরের ফ্ল্যাটে আসার আগে সপরিবারে বিজয়াদেবীরা কলকাতায় থাকতেন। দিদি ইরাদেবী বলেন, “বিজয়ার স্বামী কলকাতায় বিভিন্ন জনের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা ধার নিয়ে ফেরত দেয়নি। পাওনাদারদের চাপে বাড়ি থেকে বের হতে পারত না। তখন প্রভাপিসির পরামর্শে রাতের অন্ধকারে বিজয়া ও মামকে (আত্রেয়ী) সঙ্গে নিয়ে বহরমপুরে চলে আসে সে। পরে ২০০৪ সালে ওই প্রভাপিসি নিজের টাকায় বতর্মান ফ্ল্যাটটি কেনেন। ২০০৬ সালে ওই ফ্ল্যাটটি বিজয়ার নামে লিখে দেন।” |
বহরমপুরের ওই ফ্ল্যাটে পিসির সঙ্গে বিজয়াদেবী ও আত্রেয়ী থাকতে শুরু করে। আর একটি কোম্পানির কাজ নিয়ে বিজয়াদেবীর স্বামী নাগপুর চলে যান। পরে বিজ্ঞাপন দেখে বহরমপুরের একটি নার্সিংহোমে ম্যানেজার পদের জন্য আবেদন করেন এবং চাকরিটি পান। ইরাদেবীর অভিযোগ, “বহরমপুরে থাকতে শুরু করার কয়েক বছর পরেই কলকাতার মত বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা ধার নিতে থাকে। বাড়িতে বাড়তে থাকে পাওনাদারদের চাপ। সেই সঙ্গে প্রভাপিসির সই নকল করে ব্যাঙ্ক থেকে প্রায় ৬৩ হাজার টাকাও হাতিয়ে নেয় সে। এর পরেই তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় বিজয়া।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বহরমপুর থেকে চলে যাওয়ার পর বিজয়াদেবীর স্বামী পুরী চলে যান এবং সেখানকার একটি হোটেলে ম্যানেজার পদে কাজ করতে থাকেন। এদিকে খুনের ঘটনার পরে পুলিশও তাঁর খোঁজ শুরু করে। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার তাকে আটক করে নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, স্ত্রী, মেয়ে ও পিসিশাশুড়ি খুনের ঘটনায় ওই ব্যক্তি সরাসরি জড়িত নন। তবে সন্দেহের ঊর্ধ্বেও তাঁকে রাখা হচ্ছে না। খুনের ষড়যন্ত্রে ওই ব্যক্তি কোনও ভাবে জড়িত কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ দিনও ইরাদেবী বলেন, “বিজয়ার স্বামী নিজে খুন না করলেও, লোক লাগিয়ে খুন করিয়েছে।”
পুলিশের অনুমান খুনি ওই পরিবারের খুবই পরিচিত ছিল। পুলিশের এক কর্তা বলেন, “খুনি অত্যন্ত বুদ্ধিমান। |