উত্‌সব বানচালের ডার্বি
মোগাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ ওডাফা
জেমস মোগার নাম শুনে ওডাফা ওকোলির উন্নাসিক জবাব, “একা মোগাকে নিয়ে ভাবতে যাব কেন? ওর দলে আরও অনেক ফুটবলারই রয়েছে। চিডি, সুয়োকা....।”
আর ওডাফার প্রসঙ্গ উঠতেই মোগার তির্যক মন্তব্য, “ওডাফা মানুষ হিসেবে কেমন সে প্রসঙ্গে আমি যাব না। তবে ও খুব ভাল মানের স্ট্রাইকার। গোলটা চেনে।”
আজ শনিবারের কলকাতা ডার্বিতে ওডাফা বনাম মোগার লড়াই দেখার জন্য মুখিয়ে আছে ময়দান। কারণ দু’জনের মাঠের বাইরের সম্পর্ক এবং পুরানো প্রেক্ষাপট। পুণেতে গত বছর দু’জনের একে অন্যকে তেড়ে যাওয়া, দেখে নেওয়ার হুমকি মনে আছে অনেকেরই। কলকাতায় আসার পর পারতপক্ষে মাঠের বাইরে মোহন অধিনায়কের মুখোমুখি হতে চাননি লাল-হলুদের মোগা। ওডাফার জন্যই নাকি দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত শপিং মল লাগোয়া বিলাসবহুল আবাসনে থাকতে রাজি হননি তিনি। পুণেতে ঝামেলার পর দু’জনে দু’বার মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু ‘বড়’ কিছু ঘটেনি। দু’জনেই সংযত থেকেছেন। নিজেদের মুড়ে রেখেছেন পেশাদারি মোড়কে।
মাঠের বাইরে যে শত্রুতাই থাকুক, ম্যাচের নব্বই মিনিট নাকি ব্যক্তিগত রাগ মাথায় রাখেন না দু’জনেই! তখন শুধু মাথায় ঘোরে ক্লাবের সাফল্যের কথা। ওডাফা বলছিলেন, “শুধু ডার্বি নয়, যে কোনও ম্যাচেই ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব বা শত্রুতার কথা ভুলে নিজের দলকে সাফল্য এনে দেওয়াটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য থাকে।” পাশাপাশি মোগারও মন্তব্য, “কারও ওপর বদলা নিতে মাঠে নামি না। মাঠে নামি নিজের টিমকে জেতাতে।”

ভরসার জায়গায় করিমের চোখ। ছবি: উত্‌পল সরকার।
“শুধু ডার্বি নয়, যে কোনও ম্যাচেই ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব বা শত্রুতার কথা ভুলে
নিজের দলকে সাফল্য এনে দেওয়াটাই লক্ষ্য থাকে।” —
“কারও উপর বদলা নিতে মাঠে নামি না। নামি টিমকে জেতাতে।” —
এই মরসুমেই আই লিগের প্রথম ডার্বিতে মুখোমুখি হয়েছেন ওডাফা এবং মোগা। কিন্তু দু’জনের কেউই সফল হননি। এ বার অবশ্য পরিস্থিতি আলাদা। দুই স্ট্রাইকারই গোলের মধ্যে রয়েছেন। আজকের ডার্বিতে গোল করার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন দু’জনেই। এডে চিডির মতোই ওডাফা এ দিন বললেন, “পকেটে ডার্বির গোল নিয়ে ঘুরছি।” কিছুক্ষণ পর মোগা পাল্টা বললেন, “গত বার ডার্বিতে যে গোলগুলো মাঠে ফেলে রেখে এসেছিলাম, সেগুলো এ বার আর নষ্ট হবে না।”
ওডাফা আর মোগার মধ্যে কে বেশি ভয়ঙ্কর? দু’দলের কিপার এবং ডিফেন্ডারদের ভোটে এগিয়ে রয়েছেন নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকারই। মোহন কিপার সন্দীপ নন্দী বললেন, “বক্সের সামনে মোগার তুলনায় ওডাফা সব সময়ই বেশি ভয়ঙ্কর।” লাল-হলুদ কিপার গুরপ্রীত সিংহ-র দাবি, “দু’জনেই খুব ভাল স্ট্রাইকার। তবে ওডাফার দক্ষতা কিছুটা বেশি।” শিল্টন পাল এবং অর্ণব মণ্ডলের ভোটও পাচ্ছেন ওডাফাই।
ডার্বির আগের দিন সকালে হঠাত্‌-ই মোহনবাগানে তাঁবুতে হাজির হয়েছিলেন ফুটবলার ও কোচ হিসাবে বহু ডার্বি খেলা সুব্রত ভট্টাচার্য। যাওয়ার আগে বলে গেলেন, “আমি কাল ওডাফাকেই এগিয়ে রাখব।”
শুক্রবার সকালে মোহনবাগান অনুশীলনে গিয়ে দেখা গেল, ওডাফা প্রচণ্ড সিরিয়াস। রোজকার মতো সতীর্থদের সঙ্গে ঠাট্টা-তামাশা করতেও দেখা গেল না তাঁকে। ওডাফার আচরণেই পরিষ্কার, ডার্বি জিততে কতটা মরিয়া তিনি। প্র্যাকটিসের সময় বাঁ চোখে আঘাত পেলেন মোহন-অধিনায়ক। কিন্তু তাতে ভ্রুক্ষেপ না করে একের পর এক বল গোলে মেরে চললেন। প্র্যাকটিস শেষে চোখে বরফ ঘষতে দেখা গেল তাঁকে। পরে বললেন, “কলকাতা লিগ হাতছাড়া হওয়ার জন্যই যে শুধুমাত্র ডার্বি জিততে মুখিয়ে রয়েছি তা নয়। ডার্বির গুরুত্ব সব সময় আলাদা। এই ম্যাচে জিতলে ফেড কাপের আগে আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যাবে।”
মোগাকে অবশ্য প্র্যাকটিসে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই পাওয়া গেল। ডার্বিতে প্রথম একাদশে শুরু করবেন কিনা জানেন না। তবে সুযোগ পেলেই গোল করে লাল-হলুদ সমর্থকদের হার্টথ্রব হয়ে উঠতে চান। শুনতে চান ‘মোগা, মোগা’ স্লোগান।
এখন দেখার আজকের ডার্বির পর কার নামে স্লোগান দেন সমর্থকরা— ওডাফা না মোগা! না কি অন্য কেউ!




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.