|
|
|
|
ক্ষতিপূরণের তালিকায় গরমিল, নালিশ
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
বন্যায় বাড়ি ভেঙেছে। তবু ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় নাম ওঠেনি। অন্য দিকে বাড়ির ন্যূনতম ক্ষয়ক্ষতি না হওয়া সত্ত্বেও অনেকের নাম তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে। কারচুপির এমন অভিযোগ নিয়ে মাঝেমধ্যেই ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছেন কেশিয়াড়ির বহু মানুষ।
অতিবৃষ্টি ও গালুডি ব্যারাজের ছাড়া জলে গত অক্টোবরে দু’বার বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল কেশিয়াড়িতে। বন্যায় নছিপুর ও বাঘাস্তি এলাকায় বহু কাঁচা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বৃষ্টিতে অনেক বাড়ি ধসে যায়। ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে তালিকা তৈরি করা হয়। সেই তালিকা পৌঁছয় ব্লক প্রশাসনের কাছে। তারপর জেলা স্তরে তালিকা অনুমোদিত হয়। সেই চূড়ান্ত তালিকাতেই গরমিলের অভিযোগ উঠেছে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর পুজোর আগে ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় অতিবৃষ্টিতে দু’বার বহু কাঁচাবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া ঝাড়খণ্ডের গালুডি ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ায় সুবর্ণরেখার পাড় বরাবর নছিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাডরা, হরিপুরা, ডেম্বুরকোলা, ভসরাঘাট এবং বাঘাস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের কুলবনি, রঙ্গীদাস-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। স মিলিয়ে কয়েক হাজার মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাজ্য সরকার ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করে। স্থির হয় যাদের বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত সেই সকল পরিবারকে ১৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। আর যাঁদের বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত তাঁদের ৩২০০ টাকা দেওয়া হবে। গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের নাম ব্লকে পাঠানো হয়। সেই তালিকা ব্লক থেকে জেলা এবং সবশেষে রাজ্যে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়।
সম্প্রতি সেই তালিকার একটি অংশ রাজ্য থেকে অনুমোদন হয়ে ফের ব্লকে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রীর জঙ্গলমহল সফরের মধ্যেই সেই তালিকায় থাকা ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট মারফত টাকা মেটাতে ব্লক প্রশাসন তৎপর হয়েছে। তবে সেই তালিকায় অনেক ‘ভুয়ো’ ব্যক্তিদের নাম রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত সাত দিনে ব্লকের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিডিও-র কাছে প্রায় ১৫০ জন এই নিয়ে অভিযোগ করেছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। উত্তর ডেম্বুরকোলার বিনয় বেরা বলেন, “আমাদের বাড়ি ভেঙে যাওয়ার পর ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করেছিলাম। এখন দেখছি তালিকায় আমাদের নাম নেই। যাঁদের বাড়ি ভাঙেনি তাঁদের অনেকের নামই তালিকায় দেখছি। বিডিও অফিসে এবিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছি।”
ব্লক সূত্রে খবর, রাজ্য থেকে অনুমোদিত তালিকায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ৮২১ জন ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ৬৭০৩ জনের নাম রয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে এখনও এক হাজার মানুষ বাকি রয়েছেন বলে খবর। কেশিয়াড়ির ব্লক তৃণমূল সভাপতি জগদীশ দাস বলেন, “আমরাও শুনেছি তালিকায় অনেক ভুয়ো লোকের নাম এসেছে।” বিডিও অসীমকুমার নিয়োগী বলেন, “আমার কাছে অনেকেই এ বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। তালিকাটি তাড়াতাড়ি হওয়ায় আমরা পুনরায় সমীক্ষার সময় পাইনি। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|