|
|
|
|
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৃণমূলে, পঞ্চায়েতই মিড ডে মিল চালাচ্ছে স্কুলে
নিজস্ব সংবাদদাতা • খানাকুল |
তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদের জেরে খানাকুল-১ ব্লকের ঘোষপুর ইউনিয়ন নেতাজি বিদ্যাপীঠে এক বছর ধরে বন্ধ ছিল মিড ডে মিল। বিডিও-র হস্তক্ষেপে সম্প্রতি পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ওই প্রকল্প চালু হলেও এতে পরিস্থিতি জটিল হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
প্রধান শিক্ষক তরুণকান্তি কোঁয়ার বলেন, “স্কুল পরিচালন সমিতিকে বাদ দিয়ে কী ভাবে এবং কত দিন এ ভাবে মিড ডে মিল চালানো যাবে বুঝতে পারছি না। ওই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ টাকা বা চাল-ডাল সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে স্কুলের সম্পাদকের স্বাক্ষর লাগে। আমরা চেয়েছিলাম সমস্যার সুষ্ঠু মীমাংসা করে বিদ্যালয়ের সার্বিক পরিবেশ ফেরাক প্রশাসন। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমশ আরও জটিল হল বলে মনে হচ্ছে।”
বিডিও গোবিন্দ হালদার বলেন, “প্রায় ন’মাস আগে চাল পাঠানো হয়েছে। বারবার মিড ডে মিল চালু করতে বলা সত্ত্বেও স্কুল পরিচালন সমিতি তা করছিল না। ৩০০ কুইন্ট্যাল চাল পড়ে থেকে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। সে কারণেই আমি পঞ্চায়েতকে নির্দেশ দিয়েছি। সরকারি প্রকল্প থেকে ছাত্রছাত্রীদের বঞ্চিত করা যাবে না। সুষ্ঠুু সমাধানের জন্য আলোচনায় বসা হবে।”
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক বছর আগে ওই স্কুলে মিড ডে মিল চালু করার নির্দেশ দেয় প্রশাসন। মেলে আর্থিক বরাদ্দ এবং চাল। কিন্তু চালু হয়নি প্রকল্প। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্যই প্রকল্পটি চালু হচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে অভিভাবক এবং গ্রামবাসীরা স্কুলে এবং ব্লক অফিসে বিক্ষোভও দেখান। বিডিও-র নির্দেশে গত ৩ জানুয়ারি থেকে ঘোষপুর পঞ্চায়েতের তত্ত্বাবধানে মিড ডে মিল পাচ্ছে প্রায় ৯০০ ছাত্রছাত্রী।
ওই স্কুলের সম্পাদক স্থানীয় তৃণমূল নেতা কোরবান আলি খান। তাঁর সঙ্গে বিরোধ রয়েছে এলাকার আর এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা ইলিয়াস চৌধুরীর। ইলিয়াস ঘোষপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান।
কোরবানের অভিযোগ, “আগে মিড ডে মিল চালানোর জন্য যত বার সভা ডেকেছি, আমাকে স্কুলের ফটক থেকেই তাড়িয়ে দিয়েছে ইলিয়াসের লোকজন। মারধরও করে। ওদের বাধাতেই চালু করা যায়নি এই প্রকল্পটি। ওরাই প্রকল্পটি চালাতে চায়। কিন্তু পঞ্চায়েত বেআইনি ভাবে মিড ডে মিল চালাতে পারে না। বিষয়টি আমি প্রশাসনকে জানিয়েছি।”
এ বিষয়ে যাবতীয় অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন ইলিয়াস। তাঁর দাবি, “এই স্কুলের উন্নয়ন নিয়ে এলাকারই কিছু মানুষজনের ক্ষোভ আছে। তার জেরে স্কুল সম্পাদকের কাছে কয়েক বার ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁরা। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের মিথ্যা গল্প বলে মিড ডে চালু করছিলেন না তিনি। বিষয়টা আমরা বিডিও-কে জানাতে তিনি পঞ্চায়েতকে প্রকল্পটি চালানোর নির্দেশ দেন।”
গোটা বিষয়টি নিয়ে হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, মিড ডে মিল নিয়ে ওই স্কুলে গোলমালের কথা জানতে পেরে তিনি খানাকুলের দলীয় বিধায়ক ইকবাল আহমেদকে সমস্যা মেটানোর দায়িত্ব দিয়েছেন। |
|
|
|
|
|