|
|
|
|
মইলিও এলেন, পস্কোও ছাড় পেল
সংবাদ সংস্থা • নয়াদিল্লি
১০ জানুয়ারি |
ওড়িশায় আট বছরের বেশি সময় ধরে আটকে থাকা পস্কো প্রস্তাবিত ইস্পাত প্রকল্পকে আচমকাই আশার আলো দেখালেন কেন্দ্রের নতুন পরিবেশ মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলি। দক্ষিণ কোরীয় ইস্পাত সংস্থাটিকে জগৎসিংহপুরে কারখানা গড়ার জন্য শর্ত সাপেক্ষে ছাড়পত্র দিল তাঁর মন্ত্রক। গত সপ্তাহেই ওই ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে বলে শুক্রবার জানান মইলি নিজেই। তবে ওড়িশার নিয়মগিরি পাহাড়ে বেদান্ত-র বিতর্কিত বক্সাইট প্রকল্পে এ দিনও সায় দেয়নি পরিবেশ মন্ত্রক।
সপ্তাহ খানেক পরেই ভারতে আসছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গিউন হি। তার আগে এখনও পর্যন্ত ভারতে পস্কোর প্রস্তাবিত বৃহত্তম এই প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির পথ পরিষ্কার করার উদ্যোগকে অবশ্য অনেকেই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন।
এ দিকে, কয়েক দিন আগেই রাজ্যের লাঞ্জিগড়, রায়গড়া এবং কালাহাণ্ডি জেলার এই পাহাড়ে ওড়িশা মাইনিং কর্পোরেশন ও বেদান্ত-র শাখা স্টারলাইটের বক্সাইট খনন প্রকল্পে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সংশ্লিষ্ট এলাকার গ্রাম-সভাগুলির সায় না পেলে সেখানে খনন করা যাবে না বলেই জানিয়েছে তারা। গ্রাম-সভাগুলিকে তিন মাসের মধ্যে নিজেদের মতামত জানাতেও নিদের্শ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এই অবস্থায় বন সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সুপারিশ মেনেই প্রকল্পটিকে ছাড়পত্র দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে পরিবেশ মন্ত্রক। উল্লেখ্য, ওড়িশায় অ্যালুমিনা কারখানার চাহিদা মেটাতে ওই অঞ্চলে বক্সাইট খননের প্রস্তাব রেখেছিল বেদান্ত।
পস্কোর ক্ষেত্রেও ছাড়পত্র দিতে বেশ কিছু শর্ত রাখা হয়েছে। সংস্থার প্রস্তাবিত ইস্পাত ও বন্দর প্রকল্প দু’টিকে আলাদা করে দিতে হয়েছে। ছাড়পত্র মিলেছে শুধু ইস্পাত প্রকল্পের জন্যই। পাশাপাশি, এই প্রকল্পে মোট লগ্নির ৫% সামাজিক কাজেও লাগাতে হবে সংস্থাকে। ফলে প্রাথমিকভাবে ১,২০০ কোটি ডলার (বর্তমান হিসাবে ৭৪,৪০০ কোটি টাকা) লগ্নির কথা থাকলেও এ বার খরচ বাড়বে আরও ৬০ কোটি ডলার (৩,৭২০ কোটি টাকা)।
এ দিন ছাড়পত্রের কথা স্বীকার করে পস্কোর মুখপাত্র আই জি লি জানান, এখন ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের সায়ের অপেক্ষায় তারা। আশা, শীঘ্রই ওড়িশা সরকারের সঙ্গে নতুন করে লিজ চুক্তিও হবে। তার পর পুরো জমি পেলেই কারখানা তৈরি শুরু হবে। সে ক্ষেত্রে প্রথম পর্যায়ের কারখানা শুরু হতে ২০১৮ হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে ১,২০০ কোটি ডলার (তখনকার হিসাবে ৫২ হাজার কোটি টাকা) লগ্নিতে জগৎসিংহপুরে ১.২ কোটি মেট্রিক টন ক্ষমতার কারখানা তৈরির প্রস্তাব আনে পস্কো। প্রয়োজন ছিল ৪,০০৪ একর জমি। কিন্তু গত আট বছর জমি জট ও পরিবেশ ছাড়পত্র সংক্রান্ত নানা ঝামেলায় কাজ এগোয়নি। ২০০৭-এ মিলেছিল পরিবেশ মন্ত্রকের প্রাথমিক ছাড়পত্র। ২০১১-এ চূড়ান্ত অনুমতিও দেয় তারা। কিন্তু পরের বছরই পরিবেশ সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক নিয়ে আপত্তি তুলে সেই ছাড়পত্র বাতিল করে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল।
এর সঙ্গেই জগৎসিংহপুর ও সংলগ্ন অঞ্চলের অধিবাসীদের এক বড় অংশ প্রকল্পের জন্য জমি নেওয়ার বিরোধিতায় পথে নামেন। ফলে জমি পেতেও বহু সময় গড়িয়ে যায়। আর এর মধ্যেই ফুরিয়ে যায় পস্কো ও ওড়িশা সরকারের লিজ চুক্তির মেয়াদ। তাই বেদান্তের প্রকল্প আটকে থাকলেও, পরিবেশ মন্ত্রকের এই ছাড়পত্র পাওয়ায় অন্তত পস্কো ঘিরে নতুন আশার সঞ্চার হল বলেই মনে করছে শিল্পমহল। |
|
|
|
|
|