|
|
|
|
সিপিএমের মতো কৌটো হাতে রাস্তায় বিজেপিও
স্বপন সরকার • পটনা
১০ জানুয়ারি |
একটি টাকা, একটি ভোট— সিপিএমের পথে হেঁটে এ বার মানুষের দরজায় দরজায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল বিহার বিজেপি।
লোকসভা ভোটের আগে বিহারে নিজেদের জমি কতখানি শক্ত তা খতিয়ে দেখতেই এই ব্যবস্থা। এত দিন কোনও পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে ‘মার্কেট সার্ভে’ করানোটাই ছিল বিজেপি-র রেওয়াজ, দস্তুর। এ বার সেই পথ থেকে সরে এসে দলীয় সদস্য-কর্মীদের দিয়ে গোটা বিহারের প্রতিটি পরিবারে গিয়ে নাড়ি টিপে পরিস্থিতি যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলের বিহার নেতৃত্ব।
মানুষের মনোভাব বুঝতে বিহার বিজেপি-র এই ‘এক টাকা, এক ভোট’ স্লোগান নিয়ে কৌটোয় অর্থ সংগ্রহ যেমন হবে, তেমনই এর মাধ্যমে জনসংযোগ স্থাপনের কাজটাও সম্পন্ন হবে। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপি-র নন্দকিশোর যাদব জানান, এই অভিযানে বিজেপি কর্মীরা কৌটো নিয়ে প্রতিটি ঘরে যাবেন। এক থেকে হাজার টাকা, যে যা দেবেন, সেই অর্থ সংগ্রহ করবেন। ’৬০, ’৭০ বা ’৮০-র দশকে পশ্চিমবঙ্গে গণ-সংযোগের উদ্দেশে সিপিএম কৌটোর মাধ্যমে অর্থসংগ্রহ করত। ক্ষমতায় দীর্ঘ দিন থাকার সুবাদে ক্রমশ সিপিএমে এই প্রক্রিয়াটাই প্রায় লুপ্ত হয়ে যায়। মাঝেমধ্যে অর্থ সংগ্রহ অভিযানে কুপনের ব্যবহার শুরু করে সিপিএম। কার্যত সিপিএমের সেই গণ-সংযোগ পদ্ধতিই অনুসরণ করতে চলেছে বিহার বিজেপি।
আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিহার বিজেপি-র এই অর্থ সংগ্রহ তথা জনসংযোগ অভিযান চলবে। এর জন্য প্রতিটি বুথ ধরে ধরে বুথ কমিটি গঠনের কাজ চলছে। চলতি মাসের মধ্যে বুথ কমিটি তৈরি হয়ে যাবে। প্রতিটি বুথ কমিটিতে ১০ থেকে ১৫ জন সদস্য থাকবে। বিজেপি-র হিসেব অনুযায়ী প্রতিটি বুথে গড়ে এক হাজার ভোটার আছে। অর্থাৎ গড়ে ২৫০টি পরিবার। বুথ কমিটি প্রতিটি ঘরে কৌটো নিয়ে অর্থ সংগ্রহে যাবে। সঙ্গে থাকবে দলের প্রতীক চিহ্ন পদ্ম ফুল এবং নরেন্দ্র মোদীর ছবি। টাকা যাঁরা দেবেন বা দেবেন না, বা এক টাকার পরিবর্তে যাঁরা বেশি টাকা দেবেন, তাঁদের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করবেন সদস্য-সংগ্রাহকরা। তার ভিত্তিতে বুথওয়াড়ি কতজন বিজেপি-র প্রতি অনুগত, কতজন সাধারণ সহানুভূতিক, কতজন মুখে কিছু না বললেও ভোট দেবেন না— ইত্যাদি তথ্য লিপিবদ্ধ করবে। সেই দিনলিপি বিশ্লেষণ করলে বুথওয়াড়ি দলের অবস্থা কী সেটা বোঝা যাবে বলে নন্দকিশোরবাবু জানান। তাঁর বক্তব্য, “ওই সমীক্ষার উপরে ভিত্তি করেই পরবর্তী ক্ষেত্রে আমরা দুর্বল জায়গাগুলিতে বাড়তি জোর দিতে পারব। মানুষকে বোঝানোর কাজটা নিবিড় করতে পারব।” তিনি বলেন, “শুধু মাত্র বড় সভার উপর আমরা ভরসা রাখতে চাইছি না। বিজেপি কর্মীদের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছতে হবে। সেই লক্ষ্যেই আমরা ঠিক করেছি, সভা নয়, মানুষের ঘরে যাওয়া, তাদের মনোভাব বোঝা। সমর্থন আদায় করতে প্রতীক হিসেবে অর্থ সংগ্রহ করা।” |
|
|
|
|
|