মেটিয়াবুরুজের মতো ঘিঞ্জি এলাকার অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা দমকলের মাত্র দু’টি ইঞ্জিনের উপরে নির্ভরশীল। এই অঞ্চলটি পোশাক তৈরির অন্যতম জায়গা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকার সবচেয়ে কাছের দমকল কেন্দ্র হচ্ছে আলিফনগরে। সেখানে দু’টি ইঞ্জিন থাকে। বিশাল এই অঞ্চলের পক্ষে তা যথেষ্ট নয় বলে তাঁদের অভিযোগ।
দমকলসূত্রে খবর, আলিফনগর দমকল কেন্দ্রে দীর্ঘ দিন কোনও চালক নেই। আগুনের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য প্রয়োজনীয় কর্মী এবং উপযুক্ত সরঞ্জামেরও অভাব রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দমকলকর্মী বলেন, মেটিয়াবুরুজ এলাকায় আগুন লাগলে আলিফনগরের সাধারণ কর্মীরা ঘটনাস্থলে ইঞ্জিন নিয়ে যান। দীর্ঘ দিন ধরে এ ভাবেই চলছে।
গত ২৪ ডিসেম্বর মেটিয়াবুরুজের আক্রা রোডে একটি বাড়ির তিনতলায় কাপড়ের গুদামে আগুন লাগে। ওই বাড়িতে একটি ব্যাঙ্কও রয়েছে। প্রায় ১৫ ঘণ্টা লড়াই চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কালঘাম ছুটে গিয়েছিল দমকল কর্মীদের। এলাকার ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানান, বার বার এই সমস্যার কথা জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। এই এলাকায় জলাশয়েরও অভাব রয়েছে। তাই আগুন লাগলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। এলাকার বাসিন্দা শাহজাদা হুসেন বলেন, “সে দিন বাড়ির পিছনে ডোবাটা না থাকলে গোটা বাড়িটাই ছাই হয়ে যেত।” |
মেটিয়াবুরুজ অঞ্চল। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য। |
বাসিন্দাদের অভিযোগ, গোটা মেটিয়াবুরুজ এলাকাই বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। এখানে প্রায় প্রতি ঘরেই পোশাকশিল্পের কোনও না কোনও কাজ হয়। রয়েছে পোশাক তৈরির প্রচুর কারখানা। এলাকার বাসিন্দারা জানান, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অগ্নিনির্বাপণের কোনও ব্যবস্থা নেই। এই বিষয়ে দমকলের নিয়মিত কোনও নজরদারিও নেই বলে অভিযোগ করেন একাধিক ক্ষুব্ধ বাসিন্দা।
মেটিয়াবুরুজের বিধায়ক এবং ১৪০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মমতাজ বেগম বলেন, ‘‘মেটিয়াবুরুজ এলাকা পোশাক শিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অথচ এই এলাকার অগ্নিনির্বাপণ-ব্যবস্থা মাত্র দু’টি ইঞ্জিনের উপরে নির্ভরশীল। তাই এই এলাকায় দমকলের ইঞ্জিন আরও বাড়ানোর জন্য দমকল দফতরের কাছে আবেদন জানাব।”
দমকল মন্ত্রী জাভেদ খান বলেন, “খিদিররপুর আর মহেশতলায় নতুন করে দমকল কেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনা করেছি। জায়গাও দেখা হয়েছে। ওই দু’টি দমকল কেন্দ্র হয়ে গেলে মেটিয়াবুরুজ এলাকায় আর অগ্নিনির্বাপণের সমস্যা থাকবে না।” |