ঘরেই পেঁয়াজ সংরক্ষণের উদ্যোগ জেলায়
নাসিক মডেলে চাষিদের ঘরেই এ বার পেঁয়াজ সংরক্ষণের উদ্যোগ করল জেলা উদ্যান পালন দফতর। চলতি বছরের ১৫ মার্চের মধ্যে ওই সংরক্ষণশালা তৈরির জন্য ‘আমার ফসল আমার গোলা’ প্রকল্পে বহু চাষিকে খরচের অর্ধেক ভর্তুকি দেওয়া হবে বলেও ওই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
বর্ধমানে প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে সুখসাগর জাতীয় শীতকালীন পেঁয়াজের চাষ হয়। এর মধ্যে কালনা মহকুমাতেই প্রায় ১৪০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়। চাষিরা প্রথমে বীজতলা তৈরি করেন। পরে নভেম্বর নাগাদ জমিতে পেঁয়াজ চারা পোঁতা হয়। তবে পেঁয়াজ চাষে জেলার চাষিদের উৎসাহ না থাকার মূল কারণ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকা। চাষিদের দাবি, জমি থেকে পেঁয়াজ তোলার পরেই যা দাম মেলে তাতেই বিক্রি করে দিতে হয়। হিমঘর থাকলে ফসল মজুত করে বাজার বুঝে বিক্রি করা যায়। এই সমস্যা মেটাতেই উদ্যোগী হয়েছে জেলা উদ্যান পালন দফতর। ওই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নাসিকে যে মডেলে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা হয় তা চাষিদের শেখানো হবে। নিজের বাড়ি, খামার-সহ যে কোনও খোলা জায়গায় সংরক্ষণশালা তৈরি করে পাঁচ থেকে তিনশো মেট্রিক টন পর্যন্ত পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারবেন চাষিরা। ন’ফুট উচ্চতার ছোট সংরক্ষণশালা তৈরি করতে লাগবে বাঁশ ও খড়। তিনটি স্তরে তা তৈরি হবে। প্রতিটি স্তরেই পেঁয়াজ রাখা হবে। সংরক্ষণশালা তৈরি হবে পূর্ব বা পশ্চিম দিকে, যাতে দক্ষিণের হাওয়া সহজে বের করে দেওয়া যায়। ত্রিভুজাকৃতি এই সংগ্রহশালায় পেঁয়াজ পাঁচ থেকে ছ’মাস ভাল থাকবে বলে জেলা উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিকদের দাবি। ওই দফতরের আধিকারিক সজলেন্দু শীট বলেন, “ছোট সংরক্ষণশালা তৈরি করতে প্রায় ১২ হাজার টাকা খরচ হবে। কীভাবে বানাতে হবে তা চাষিদের পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে শিখিয়ে দেওয়া হবে। বহু চাষিকেই ‘আমার ফসল আমার গোলা’ প্রকল্পে সংরক্ষণশালা তৈরির অর্ধেক খরচ ভতুর্কি দেওয়া হবে। তবে সংখ্যাটা এখনও ঠিক করা যায়নি।” তিনি আরও বলেন, “বড় প্রকল্পের ক্ষেত্রেও অর্ধেক ভতুর্কি দেওয়া হবে। সেখানে অনেক চাষির পেঁয়াজ রাখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তবে এটি হবে কংক্রিটের। বাতাস নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে।” কালনা থেকে দু’জন উদ্যোগপতি বড় সংরক্ষণশালা তৈরিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন বলেও তিনি জানান। সজলেন্দুবাবু জানান, গত কুড়ি বছরের পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে অগস্টের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত পেঁয়াজের দাম ভাল থাকে। এ সময় বিক্রি করলে চাষিরা লাভ পাবেন।
জেলা উদ্যান পালন আধিকারিক সজলেন্দুবাবু জানান, বহু বছর ধরে শীতকালে সুখসাগর-সহ কয়েকটি প্রজাতির পেঁয়াজ চাষ করা হচ্ছে। এত বছর চাষের ফলে এই প্রজাতিগুলির মধ্যে কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি দেখা যাচ্ছে। তাই সরকারি উদ্যোগে নাসিক থেকে বিশেষ ধরণের পেঁয়াজ আনা হচ্ছে এ বার। বিমানে পাঁচ কোটি টাকার বীজ আনা হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলাগুলিতে বিলিও করা হয়েছে। নতুন বীজটি কেমন ফল দেয়, তা পরীক্ষা করে দেখতেই এই উদ্যোগ। শুধু উদ্যান পালন দফতরই নয়, জেলা কৃষি দফতরও আমার ফসল আমার গোলা প্রকল্পে বহু চাষিকে ভর্তুকিতে ধানের গোলা দেবে। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি দু’টি বৈঠকও হয়েছে।
জেলার এক কৃষি কর্তা বলেন, “কোন মহকুমার কত চাষি ভর্তুকিতে ধানের গোলা পাবেন, তা নিয়ে মহকুমা কৃষি দফতরগুলিতে দ্রুত নির্দেশিকা পাঠানো হবে। ওর সঙ্গেই নিয়মকানুন জানিয়ে দেওয়া হবে।” জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লক কৃষি আধিকারিক, বিডিও ও বিপণন আধিকারিক উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি করবে। তা অনুমোদন করবেন জেলাশাসক, জেলা উপ-কৃষি অধিকর্তা, জেলা উদ্যান পালন আধিকারিক ও বিপণন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে গড়া কমিটি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.