|
|
|
|
ফের নয়া পরিকল্পনার পথে সিটিসি, এ বার চক্র-ট্রাম
অশোক সেনগুপ্ত |
এসপ্লানেডে চক্র-ট্রাম চালাতে চায় ক্যালকাটা ট্রাম কোম্পানি (সিটিসি)। সংস্থার একের পর এক পরিকল্পনা সফল হয়নি। লোকসানে চলা সংস্থায় তা হলে কেন ফের নয়া পরিকল্পনা? কর্তৃপক্ষের দাবি, এলাকার সৌন্দর্যায়ন ও হেরিটেজ-রক্ষা, এই দু’টি বিষয় মাথায় রেখেই হবে চক্র-ট্রাম।
শীতকাল ছাড়া যাত্রী পায় না হেরিটেজ ট্রাম। সফল হয়নি পৃথক মহিলা ট্রামের ভাবনা। খরচ করে চালু করা অন্তত তিনটি প্রদর্শনী ট্রামেও জোটেনি যথেষ্ট দর্শক। তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন এসপ্লানেডে চক্র-ট্রাম। এর জন্য শুরু হয়েছে নির্মাণ-প্রস্তুতি। খরচ হবে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা।
কেমন হবে এই চক্র-ট্রাম?
প্রস্তাবিত এই ট্রাম চলবে কার্জন পার্কের পাশে প্রায় আধ কিলোমিটার চক্রপথে। ওখানে সিটিসি-র কন্ট্রোল রুমের আশপাশে কিছুটা জমি রয়েছে। সেখানেই ঘুরবে এটি। পুরনো একটি ট্রামকে সাজিয়ে সংগ্রহশালার রূপ দেওয়া হবে। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত করা হবে কামরা। ট্রামেই থাকবে চা-কফি পানের ব্যবস্থাও। ২০১৪-এ ট্রামের ১৩৫ বছরপূর্তি উপলক্ষে এটি চালু করা হবে।
প্রকল্পে কত খরচ হবে, কবে থেকে চক্র-ট্রাম চলবে তার আন্দাজ দিতে পারেননি সিটিসি-র এম ডি নীলাঞ্জন শান্ডিল্য। তিনি বলেন, “মূলত পর্যটকদের কথা মাথায় রেখেই এটা প্রকল্প।” ভারপ্রাপ্ত কর্মীরা জানান, ট্রামে থাকবে দু’টি কামরা। যার একটিতে রেস্তোঁরা, অপরটিতে সংগ্রহশালা হবে। সেকালের ট্রামের আকর্ষণীয় ছবি ছাড়াও থাকবে কিছু পুরনো যন্ত্রপাতি। আগ্রহীরা তা ঘুরে দেখতে পারবেন।
প্রস্তাবিত এলাকা দিয়ে সর্বদাই পথচারীরা যাতায়াত করেন। প্রাকৃতিক কাজও চলে ফাঁকফোকরে। এই অবস্থায় সেখানে পর্যটক টানার এই প্রকল্প কতটা সফল হবে, প্রশ্ন উঠছে নিগমেই। কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, প্রকল্পে ব্যবহৃত জমির ওই অংশটিকে আরও পরিচ্ছন্ন করা হবে।
প্রশ্ন উঠছে সিটিসি-র ‘হেরিটেজ ট্রামের’ সাফল্য নিয়েও। কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করেছেন, ‘চরৈবতি’ নামে হেরিটেজ ট্রামটি গ্রীষ্ম ও বর্ষায় যথেষ্ট যাত্রী না পেলেও শীতকালে ভাল যাত্রী পাচ্ছে। এই ট্রাম সকাল সাতটায় যায় ময়দান-খিদিরপুর অঞ্চলে তিন ঘণ্টার সফরে। বিকেল-সন্ধ্যায় তিন বার যায় মধ্য ও উত্তর কলকাতার স্মৃতিবিজড়িত বিভিন্ন অঞ্চলে। সেগুলি মিনিট পঁয়তাল্লিশের সফর।
রবীন্দ্রনাথ ও স্বামী বিবেকানন্দ উপর ওঁদের ছবি-সহ বিশেষ ট্রাম বার করেছিল সিটিসি। রবীন্দ্রনাথের নোবেল জয়ের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে সাজানো ট্রামও বেরিয়েছিল। ওই সব ট্রামে কত জন উঠেছিলেন, তার কোনও তথ্য নেই নিগম-কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে দর্শক যে যথেষ্ট হয়নি, পরোক্ষে তা স্বীকার করেছেন ট্রামকর্মীরা। মহিলা-ট্রাম ‘মা সারদা’র একটি কামরা ছেড়ে দিতে হয়েছে পুরুষ যাত্রীদের জন্য। ওই ট্রামের মহিলা কামরায় এখনও যাত্রীর অভাব। অথচ তার মধ্যেই চলছে চক্র-ট্রামের মতো নতুন চমকের পরিকল্পনা।
পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র অবশ্য দাবি করেন, “বাম আমল থেকে কঠিন রোগে ভুগছে নিগম। আমরা নানা ভাবে রোগ দূর করার চেষ্টা করছি।” তাঁর দাবি, এক বগির ট্রাম চালু করে সুফল মিলেছে। নোনাপুকুর ট্রাম ডিপোয় তৈরি হচ্ছে এক কামরার আরও দু’টি ট্রাম। এর একটি হবে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত।
|
পুরনো খবর: চালকের অভাব, ডিপোয় বসে বহু নতুন বাস |
|
|
|
|
|