|
|
|
|
লিঙ্ক বিকল, দুর্ভোগে বিমানযাত্রীরা
নিজস্ব সংবাদদাতা |
আবার বিগড়ে গেল কম্পিউটার যোগাযোগ (লিঙ্ক-ফেলিওর)। আবার চূড়ান্ত হয়রানি হল যাত্রীদের। এমনিতে সকালে কুয়াশার কারণে বেশিরভাগ উড়ানই কমবেশি দেরিতে চলছে। তার উপরে বৃহস্পতিবার সকাল সওয়া এগারোটা থেকে পৌনে দু’টো পর্যন্ত দেশের ২৫টি বিমানবন্দরে এয়ার ইন্ডিয়া এবং জেট এয়ারওয়েজের চেক-ইন কাউন্টারের কম্পিউটার থেকে আচমকা উড়ে গেল যোগাযোগ ব্যবস্থা।
কলকাতা ব্যতিক্রম নয়। যে সংস্থা এই যোগাযোগের দায়িত্বে, সেই ‘সিটা’ সূত্রে খবর, এ দিন সকালে মুম্বইয়ে এমটিএনএল লাইনে সমস্যা দেখা দেয়। তার পরেই আচমকা উড়ে যায় যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফলে কলকাতা-সহ দেশের ২৫টি বিমানবন্দরে (দিল্লি ও হায়দরাবাদ বিমানবন্দরে এই ব্যবস্থার দায়িত্ব রয়েছে অন্য সংস্থার হাতে। তাই সেখানে অসুবিধা হয়নি) এই সমস্যা দেখা দেয়। জেট ও এয়ার ইন্ডিয়া ছাড়া বাকি বিমান সংস্থার ক্ষেত্রে যদিও কোনও সমস্যা হয়নি।
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এই দুই বিমানসংস্থার কাউন্টারে এই সময়ে দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। যাত্রীদের বোর্ডিং কার্ড হাতে লিখে দেওয়া হয়। হাতে লেখা হয় যাত্রীদের মালপত্রে নম্বর-ট্যাগ। গন্তব্যে পৌঁছে কোনও কারণে সেই মাল হারিয়ে গেলে, যাতে খুঁজে পাওয়া যায় তার জন্য এই নম্বরটি দেওয়া হয়। সেই ট্যাগ-নম্বরটি কম্পিউটার থেকে বেরিয়ে আসে এবং কম্পিউটার ব্যবস্থা মারফত জানা যায় সেই নম্বর সম্বলিত মালটির অবস্থান।
এ দিন কম্পিউটার বিকল হয়ে যাওয়ায় সেই নম্বর কম্পিউটারে নথিভুক্ত করা যায়নি। বেসরকারি সংস্থার অফিসার তাপস রায় এ দিন দুপুরে কলকাতা থেকে মুম্বই যান জেটের বিমানে। জেটের উড়ানেই মুম্বই থেকে তাঁর যাওয়ার কথা ইনদওর। সাধারণত এই সব ক্ষেত্রে যাত্রী তাঁর মাল সরাসরি গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তাপসবাবু বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছে জেটের চেক-ইন কাউন্টারে পৌঁছে সেই অনুরোধই করেন। তাঁকে বলা হয়, যেহেতু যোগাযোগ ব্যবস্থা কাজ করছে না, তাই প্রথমে মুম্বই পর্যন্ত তাঁর মাল পৌঁছে দেওয়া হবে। মুম্বই বিমানবন্দর থেকে সেই মাল তিনি নিজে সংগ্রহ করে নিয়ে আবার সেখান থেকে ইনদওর-এ যেন বুক করে দেন।
এ দিন বিকেলে মুম্বই পৌঁছনোর পরে দু’ঘণ্টা খুঁজেও নিজের ব্যাগ পাননি তাপস রায়। ফোনে তিনি বলেন, “ব্যাগে ট্যাগ-নম্বর আছে। কিন্তু, যেহেতু কম্পিউটারে সেই নম্বর নথিভুক্ত করা নেই, মুম্বই-এর জেট-কর্মীরা বলছেন, তাঁরা আমার ব্যাগ খুঁজে পাচ্ছেন না। ইনদওর-এর উড়ান ছিল ৬টা ১০ মিনিটে। সেটি তিন ঘণ্টা দেরিতে ছাড়বে। তাই, কিছুটা সময় পেয়ে আমি ব্যাগ খুঁজে যাচ্ছি।”
এ দিন রাত পর্যন্ত সেই ব্যাগ খুঁজে পাননি তিনি। তাপসবাবুকে বলা হয়, তাঁর ইনদওর-এর উড়ান ছাড়ার আগে যদি তাঁর ব্যাগ খুঁজে পাওয়া যায় তা হলে তা তুলে দেওয়া হবে ইনদওর-এর উড়ানে। আর ইনদওর-এ পৌঁছেও যদি তিনি ব্যাগ না পান, তা হলে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপুরণ দিয়ে দেওয়া হবে। তাপসবাবু বলেন, “জেটের অনেক যাত্রীর অবস্থাই আমার মতো। যাঁরা ইম্ফল থেকে গুয়াহাটি হয়ে মুম্বই পৌঁছেছেন, কলকাতা থেকে মুম্বই ঘুরে গোয়া যাচ্ছেন, তাঁদের অনেকেই মালপত্র খুঁজে পাচ্ছেন না। তাঁদের সকলেরই ব্যাগের সঙ্গে নম্বর-ট্যাগ হাতে লিখে দেওয়া হয়েছে।”
এয়ার ইন্ডিয়া সূত্রের খবর, এ দিন সকালে কলকাতায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিগড়ে যাওয়ার পরে হায়দরাবাদ, বাগডোগরা ও আইজলের উড়ান ছাড়ে। এই তিন উড়ানের যাত্রীরা এসে ভিড় জমান চেক-ইন কাউন্টারে। তাঁদের বোর্ডিং কার্ড ও ব্যাগেজ-ট্যাগ হাতে লিখে দেওয়া হয়। তবে, এয়ার ইন্ডিয়া যাত্রীদের মালপত্র হারিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
এয়ার ইন্ডিয়ার এক অফিসার বলেন, “গত মাসেও একবার এ ভাবে বিগড়ে গিয়েছিল যোগাযোগ ব্যবস্থা। শুধু যাত্রীরা নন, এর ফলে সমস্যায় পড়ছেন বিমান সংস্থার কর্মী-অফিসারেরাও।” |
|
|
|
|
|