মার্কিন প্রশাসনের তরফে ফের ধাক্কা খেলেন ভারতীয় কূটনীতিক দেবযানী খোবরাগাড়ে।
দেবযানীকে অভিযুক্ত করার প্রক্রিয়া এক মাস পিছিয়ে দেওয়ার জন্য দু’দিন আগেই আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী ড্যানিয়েল আরশ্যাক। কিন্তু আজ সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন মার্কিন ম্যাজিস্ট্রেট সারা নেটবার্ন। ফলে এই পরিস্থিতিতে ১৩ জানুয়ারি বা তার আগে দেবযানীকে আদালতে হাজির হতেই হবে।
পরিচারিকার ভিসায় বেতন সংক্রান্ত ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগে ১২ ডিসেম্বর গ্রেফতার করা হয়েছিল প্রাক্তন ডেপুটি কনসাল জেনারেল দেবযানীকে। তার এক মাস পর তাঁর বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। নিয়মানুযায়ী তাই ১৩ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন।
আইনজীবী ড্যানিয়েল আরশ্যাক আদালতের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে জানান, ফের আবেদন করতে পারেন দেবযানী। এর পাশাপাশিই দেবযানীর বিরুদ্ধে মামলা কী ভাবে দ্রুত মিটিয়ে নেওয়া যায়, তার জন্য আরশ্যাক এবং সরকার পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে নিউ ইয়র্কের জেলা আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সারা নেটবার্নের বক্তব্য, যে কারণে দেবযানী প্রক্রিয়াটি পিছোতে চান, তাতে তাঁরই অসুবিধা। ফলে গোটা বিষয়টি থেকে দেবযানীর অব্যাহতি পেতে দেরি হবে।
পরিচারিকার বেতন সংক্রান্ত বিতর্কে খোবরাগাড়েকে নিউ ইয়র্কের ডেপুটি কনসাল জেনারেলের পদ থেকে সরিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতীয় দূতাবাসে নিয়োগ করা হয়। কিন্তু আমেরিকা এখনও দেবযানীর ভিসার আবেদনে ছাড়পত্র দেয়নি। ভারতীয় কূটনীতিককে ওই ভিসা (জি -ভিসা ) দেওয়া হলে পরবর্তীকালে যে কোনও ধরনের গ্রেফতারি এড়ানো সম্ভব হবে তাঁর পক্ষে। ভারতের অভিযোগ, ২০ দিন পার হয়ে গেলেও আমেরিকা জানিয়েছে ভিসা সংক্রান্ত কাগজপত্র তারা এখনও খতিয়ে দেখছে।
দেবযানীকে নিয়ে ভারত আমেরিকার কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের জেরে আগামী সপ্তাহের প্রস্তাবিত ভারত সফর বাতিল করে দিয়েছেন মার্কিন শক্তিসম্পদ সচিব আর্নেস্ট মনিজ। কিন্তু গত বছরই সেপ্টেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের বৈঠকের পর শক্তি সংক্রান্ত আলোচনায় মনিজের ভারত সফর ঠিক করা হয়েছিল। শক্তি ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং ভারতে মার্কিন গ্যাস রফতানি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হওয়ার কথা ছিল।
দু’দেশের সম্পর্কে চাপানউতোরের মধ্যেই আমেরিকায় পৌঁছেছে ইসরোর প্রতিনিধি দল। শুরু হয়েছে মহাকাশ অভিযান সংক্রান্ত দু’দিনের অনুষ্ঠান। হাজির ৩০টি দেশের মহাকাশ সংস্থার গবেষকরা। মূলত সংস্থা -প্রধানরাই এসেছেন প্রতিনিধি হিসেবে। কিন্তু ভারতের হয়ে যোগ দেননি ইসরোর ডিরেক্টর কে রাধাকৃষ্ণণ। নেই মন্ত্রী -স্তরের প্রতিনিধিও। বরং দেখা গিয়েছে তুলনায় কম গুরুত্বপূর্ণ মুখ। তাই জল্পনা শুরু হয়েছে এ নিয়েও। দেবযানী -বিতর্কের জেরেই কি এমন প্রতিক্রিয়া ভারতের? উঠছে প্রশ্ন।
|