সেই চিঠি লিখিনি, কমিশনে দাবি সুদীপ্তর
সিবিআই-কে লেখা যে চিঠির জেরে সারদা-কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসা, গোটা দেশে তোলপাড়, সেই চিঠি তিনি লেখেনইনি বলে দাবি করলেন সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন। বুধবার বিচারপতি শ্যামল সেন কমিশনের সামনে হাজির হয়ে এ কথা বলেছেন সুদীপ্ত।
সারদার ব্যবসা কেন মার খেল, কে কে কথার খেলাপ করেছেন ইত্যাদি বিবরণ দিয়ে গত বছরের ৬ এপ্রিল সুদীপ্ত সেনের লেটারহেডে লেখা ১৮ পাতার একটি চিঠি পাঠানো হয়েছিল সিবিআই-এর কলকাতা দফতরে। সেই চিঠির প্রতিটি পাতায় সুদীপ্ত সেনের নাম সই করা ছিল। শেষ পাতায় স্বাক্ষরের নীচেও বন্ধনী দিয়ে টাইপ করা ছিল সুদীপ্ত সেনের নাম। এই চিঠির কথা প্রকাশ্যে আসতেই জানাজানি হয় সারদা-কেলেঙ্কারির কথা। সুদীপ্ত তত দিনে কলকাতা ছেড়ে উধাও হয়ে গিয়েছেন। তাঁকে কাশ্মীর থেকে গ্রেফতার করে আনার পরে পুলিশ সূত্র থেকে দাবি করা হচ্ছিল, ওই চিঠি সুদীপ্তরই লেখা। জেরার মুখে সে কথা স্বীকারও করেছেন তিনি।
বস্তুত, সেই চিঠির সূত্র ধরে তদন্তও এগিয়েছে। সুদীপ্ত সেনের বয়ানে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়, একটি সংবাদমাধ্যম সুদীপ্তর সঙ্গে চুক্তি করার আগ্রহ দেখিয়েছিল। তাঁকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, চুক্তি মতো কাজ করলে ব্যবসার ক্ষেত্রে রাজ্য ও কেন্দ্রের সহায়তা মিলবে। কিন্তু পরে তারা প্রতারণা করে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের দুই সাংসদ এবং ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তাঁর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ আনেন সুদীপ্ত। পরবর্তী কালে কেন্দ্রীয় অর্থ দফতরের গুরুতর আর্থিক অপরাধ সংক্রান্ত বিভাগ (এসএফআইও) ওই চিঠিতে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের অনেককেই জেরা করে।
কিন্তু এ দিন কমিশনের সামনে আচমকা উল্টো কথাই বললেন সুদীপ্ত।
গত ২০ সেপ্টেম্বরের পর এ দিন ফের শ্যামল সেন কমিশনে হাজির করানো হয়েছিল সুদীপ্ত সেনকে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে তাঁকে জেরা করেন বিচারপতি শ্যামল সেন এবং কমিশনের অপর দুই সদস্য অম্লান বসু ও যোগেশ চট্টোপাধ্যায়। এজলাসে সুদীপ্তর আইনজীবীরাও হাজির ছিলেন। আইনজীবী সূত্রেরই খবর, সিবিআই-কে লেখা ওই চিঠির কিছু বিষয় নিয়ে সুদীপ্তকে প্রশ্ন করা হলে তিনি এ দিন বলেন, “সিবিআই-কে আমি কোনও চিঠি দিইনি।” তা হলে ওই চিঠি সিবিআই-কে পাঠাল কে? এই প্রশ্নের জবাবে সুদীপ্ত কমিশনের সামনে বলেন, ওই চিঠির ব্যাপারে তাঁর কিছু জানা নেই।
এ দিন সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার ওই চিঠি পাঠানোর কথা অস্বীকার করায় নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে। আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন, পরিকল্পনা করেই এখন ওই চিঠির কথা অস্বীকার করছেন সুদীপ্ত। চিঠিতে যাঁদের নামে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, সুদীপ্ত তাঁদেরই এখন বাঁচাতে চাইছেন। আইনজীবীদের অন্য একটি অংশ অবশ্য মনে করছেন, কমিশনের কাছে দেওয়া সুদীপ্তর বক্তব্যের মধ্যে সত্যতা থাকলেও থাকতে পারে। সারদা কেলেঙ্কারির পিছনে একটি গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও মনে করছেন ওই আইনজীবীরা। সুদীপ্তের ওই চিঠির কথা প্রকাশ্যে আসার পরে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিল বিরোধীরা। এখন খোদ সারদা-কর্তার দাবির কথা জেনে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দেবের প্রতিক্রিয়া, “সুদীপ্ত সেনকে দিয়ে ওই চিঠি তৃণমূল লিখিয়েছিল। তৃণমূলের এক সাংসদই সেই দাবি করেছেন। গোটাটার তদন্ত হোক। তখনই দেখা যাবে।” আর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের বক্তব্য, “বিষয়টি বিচারাধীন। তাই কোনও মন্তব্য করতে চাই না।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.