নানা অভিযোগে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে সোমবার দুপুরে ঘেরাও করে টিএমসিপি। গভীর রাতে মুচলেকা দেন অধ্যক্ষ। এরপর ঘেরাও ওঠে।
মালদহের চাঁচল কলেজে সোমবারের দুপুর ১২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ঘেরাও-বিক্ষোভ চলে। রাত বাড়তেই ওই ঘটনার কথা পৌঁছায় শিক্ষা মন্ত্রীর কাছেও। দ্রুত অধ্যক্ষকে ঘেরাও মুক্ত করতে হবে বলে জেলা নেতৃত্বের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রীর বার্তা পৌঁছয় স্থানীয় নেতৃত্বের কাছে। রাত সাড়ে ১২টায় অধ্যক্ষ মুচলেকা দেন। ঘেরাও তোলা হয়।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গাহুল আমিন মুচলেকায় লেখেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ সম্বলিত চিঠিটি তিনি উপাচার্যকে পাঠাবেন। তাঁর দোষ প্রমাণিত হলে তিনি শাস্তি মাথা পেতে নেবেন। মুচলেকা দিয়ে ঘেরাও মুক্ত হয়ে মাঝরাতে মালদহের বাড়ির দিকে রওনা হন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। পরে তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে পক্ষপাত ও দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন। অন্যায় দাবি মানতে চাইনি বলেই ১২ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।” তাঁর ক্ষোভ, “টেবিল চাপড়ে কলেজ পরিচালনা সংক্রান্ত নথি ছাত্র সংগঠন চাইলেই কী সঙ্গে সঙ্গে তা দিতে হবে? সে জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হবে। কিন্তু রাতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। তা ছাড়া ওই পরিস্থিতিতে আমার মুচলেকা লিখে দেওয়া ছাড়া কিছু করারও ছিল না। রাজি না থাকলেও বাধ্য হয়েই তা করতে হয়েছে।” জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সভাপতি প্রসেনজিৎ দাস দাবি করেছেন তাঁরা ঘেরাও করেননি। তিনি বলেন, “অধ্যক্ষকে ঘেরাও করিনি। দুর্নীতির প্রতিবাদে আন্দোলন হয়েছে। অধ্যক্ষ সদুত্তর দিতে পারলে তাঁকে অযথা বসে থাকতে হতো না।”
টিএমসিপি-র অভিযোগ, কলিগ্রাম, চাঁচল ও কনুয়া এলাকার বিএ প্রথম বর্ষের অকৃতকার্য় ৩ ছাত্রকে কলেজ কর্তৃপক্ষ বেআইনি ভাবে একই ক্লাসে ভর্তি করিয়েছেন। কলেজে নবীন বরণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য টাকা নিয়েও করানো হয়নি। কলেজ তহবিলের ১ কোটি ৪১ লক্ষ টাকার হিসেবে গরমিল ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মীপদে ২ জনের নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে। উপরন্তু, ছাত্র সংসদ ভোটের ভোটার তালিকা বিলিতে পক্ষপাতিত্ব হয়েছে বলেও তাদের অভিযোগ।
চাঁচলের কংগ্রেস বিধায়ক তথা কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি আসিফ মেহবুব বলেন, “টিএমসিপি যা শুরু করেছে তাতে কলেজের পরিস্থিতি আগামীতে ভয়ঙ্কর হয়ে পড়বে।” সিপিএম নেতা আজিজুর রহমান বলেন, “নিয়োগ বা টাকা পয়সা সংক্রান্ত হিসেব চেয়ে ওইভাবে ঘেরাও করাটা ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে পড়ে কি না তা ভেবে দেখা উচিত।” |