রাজ্য সরকার ভর্তুকির টাকা দেওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় বেতন পেলেন উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের (এনবিএসটিসি) কর্মীরা। নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্থার প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কর্মীর বেতন বাবদ ফি মাসে গড়ে ৮ কোটি টাকা দরকার হয়। যার ৭৫ শতাংশ রাজ্য সরকার ভতুর্কি দেয়। গত ডিসেম্বর মাসের বেতন মেটানোর জন্য গত ৩১ ডিসেম্বর রাজ্য সরকার ভর্তুকি বাবদ ৬ কোটি ৪ লক্ষ টাকা দেয়। অথচ মঙ্গলবার নিগমের কর্মীরা হাতে বেতন পেয়েছেন। আধিকারিকের একাংশের গাফিলতিতে ভর্তুকির টাকা সময়মত পাঠানোর পরে সঠিক সময়ে বেতন মেলেনি বলে কর্মীদের অভিযোগ। পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রের কাছে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইনটাকের ওয়ার্কাস ইউনিয়ন।
নিগম সূত্রের খবর, এক বছরের বেশি সময় থেকে ফি মাসে পুরো বেতন না মেলায় নিগমের কর্মীদের বকেয়া বেতনের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে। ২৭ কোটি টাকা মঙ্গলবার বকেয়া বেতন মেটানর ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গড়িমসির অভিযোগ তুলে সংস্থার কোচবিহার ডিপোর সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করে সিটু অনুমোদিত নিগমের এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন। এনবিএসটিসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জয়দেব ঠাকুর অবশ্য বলেন, “বরাদ্দ ফেলে রাখা বা গড়িমসির ব্যাপার নেই। ৩১ ডিসেম্বর রাতে ভতুর্কি বরাদ্দ অনুমোদন হলেও ট্রেজারিতে বিল জমা, ডিভিসন ভিত্তিক বরাদ্দ বন্টন, ব্যাঙ্কে চেক পাঠান সহ পদ্ধতিগত কাজে কিছুটা সময় লাগে। তার মধ্যে আবার ১ জানুয়ারি ও রবিবার মিলিয়ে দু’দিন ছুটি ছিল। সোমবারই সমস্ত ডিভিসনে বরাদ্দ পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বেতন বাবদ বকেয়া পড়ে যাওয়া টাকাও পর্যায়ক্রমে মেটানর চেষ্টা হচ্ছে।’’ পরিচালন বোর্ড সদস্য আবদুল জলিল আহমেদ অবশ্য বলেন, “রাজ্য সরকার চরম আর্থিক সমস্যার মধ্যে নির্ধারিত সময়ে ভর্তুকির বরাদ্দ দেবার পরেও বেতন দিতে এমন দেরি হওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক।” নিগমের বিভিন্ন কর্মী সংগঠনের অভিযোগ, ২০১২ সালের মে মাস থেকে সংস্থার কর্মীরা ফি মাসে পুরো বেতন পাচ্ছেন না। মঙ্গলবার তারা ডিসেম্বরের বেতন বাবদ ৭২ শতাংশ টাকা হাতে পেয়েছেন। ফি মাসে ওই বকেয়া বেড়ে হয়েছে ২৭ কোটি। ইনটাকের এনবিএসটিসি ওয়ার্কাস ইউনিয়নের আহ্বায়ক সুজিত সরকার বলেন, “এক বছরের বেশি সময় ধরে পুরো বেতন দেওয়া হচ্ছে না। এবার রাজ্য সরকারের ভর্তুকি আসার পরেও এক সপ্তাহের মাথায় বেতন হল। কর্মীরা হাতে ৭২ শতাংশ পেলেন। সব মিলিয়ে দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির বাজারে সাধারন কর্মীদের সংসার চালান মুশকিল হয়ে পড়ছেয় অথচ কর্তৃপক্ষের হেলদোল নেই। বিষয়টি আমরা পরিবহণ মন্ত্রীর নজরে আনছি।” সিটুর এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সম্পাদক জগতজ্যোতি দত্ত জানান, আন্দোলনে নামা হবে। সংস্থা সূত্রেই জানা গিয়েছে, সংস্থায় গড়ে ৩৮৫টি বাস রাস্তায় চলছে। ফি মাসে শুধু তেল খরচ বাবদ গড়ে ১৮ লক্ষ টাকা খরচ হয়। এর উপরে আবার বেহাল রাস্তার জন্য গত কয়েক মাস বিভিন্ন রুটে চালু ট্রিপ বন্ধ। |