বাসচালক বীরবল দাসকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুললেন তাঁর পরিজনেরা। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি থানায় গিয়ে তাঁরা অভিযোগ দায়ের করেন। সোমবার রাতে শিলিগুড়ি প্রধান ডাকঘরের কাছে একটি বাসে বীরবলবাবুর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ এটিকে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা ধরেই তদন্ত শুরু করেছে। শিলিগুড়ি পুলিশের এডিসি কে সাভারি রাজকুমার বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত না করে কিছু বলা সম্ভব নয়।” এ দিন বীরবলের মৃতদেহটি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্ত করানো হয়। যে বাস থেকে দেহটি উদ্ধার হয়, সেই বাসটিকে আজ রাস্তায় নামার অনুমতি দেওয়া হয়নি। বাসের মালিক অবশ্য বিস্তারিত কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন। |
নিহত বীরবলের দিদি ও পরিজনেরা। শিলিগুড়িতে মঙ্গলবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি। |
বীরবলের মৃত্যুতে শোকে এখনও স্তব্ধ কোর্ট মোড়ের প্রমোদনগর ও বাগরাকোটের চাকুপট্টি। এক জায়গায় বীরবলের দিদির বাড়ি, অন্য জায়গায় মামার বাড়ি। দু’জায়গায় পালা করে থাকতেন তিনি। ছোট থেকেই মামার বাড়ি প্রমোদনগরে মানুষ। তাঁর দিদির বিয়ে হয়েছে চাকুপট্টিতে। সকলেরই মত, বীরবলের মত প্রাণোচ্ছল ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। দিদি সুনিতা সরকারকে সামলানো মুশকিল হয়ে পড়ছিল। তিনি কাঁদতে কাঁদতেই বললেন, “সোমবার বিকেলে শেষ বার আমার সঙ্গে কথা হয়েছিল। আমাদের দেশের বাড়ি বিহারে। আমাকে জমির ভাগ নিতে দেশের বাড়ি যেতে বলল। নতুন সিনেমা এলে আর কেউ আমাকে ডেকে বলবে না দিদি চল নতুন সিনেমা এসেছে।”
কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কী ভাবে কি হয়ে গেল তা বুঝতে পারছিলেন না কেউই। রাত ১০টা নাগাদ পাড়ার লোকের মুখে ঘটনার কথা শোনেন তাঁরা। বীরবলের মামাবাড়ি প্রমোদনগর থেকে বড় জোর পঞ্চাশ মিটার হবে। ঘটনার আগের দিন রাতে মামির কাছে ছিলেন বীরবল। মামি দেনুবালাদেবী বলেন, “সকালে আমার সঙ্গে বসে চা খেয়ে পিকনিকে গেল। তারপরে আর দেখা হয়নি। পিকনিকে যাদের সঙ্গে গিয়েছিল তাদের সঙ্গে কথা বলেও কিছু পাওয়া গেল না। এ দিকে পুলিশ একে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করছে।” মৃতের দাদা প্রাণকৃষ্ণ ঘটনার পরেই অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। এ দিন কিছুটা সামলে উঠলেও কথা বলতে পারেননি তিনি।
যে বাসে ঝুলন্ত অবস্থায় বীরবলকে উদ্ধার করা হয়েছে, তার মালিক সুভাষ সাহা বলেন, “আমরা বাস সিন্ডিকেটে ছিলাম। আমার বাসের খালাসি রাতে বাসেই ঘুমায়। রাত ৯টা নাগাদ শুতে গিয়ে সেই প্রথম ঘটনাটি দেখে। আমি পুলিশে খবর দিই।” ছেলেটি কোথায় কাজ করত তা জানাতে পারেননি কেউই। বাড়ির লোকের কাছেও তা পরিষ্কার নয়। পরিজনেরা জানান, একটি বাসে চালকের কাজ করার কথা বীরবল বাড়িতে জানিয়েছিলেন। |