সারদা গোষ্ঠীর ভরাডুবিতে আমানতকারীদের কিছু কিছু টাকা ফেরতের ব্যবস্থা হয়েছে। এ বার অন্যান্য অর্থ লগ্নি সংস্থায় টাকা জমা রেখে যাঁরা প্রতারিত হয়েছেন, একই ভাবে তাঁদেরও টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি তুলল চিটফান্ড সাফারার্স ইউনিটি ফোরাম।
মঙ্গলবার সারদা কমিশনে চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি শ্যামলকুমার সেনের কাছে ফোরামের পক্ষে ওই দাবি করেন শিক্ষাবিদ সুনন্দ সান্যাল, বামপন্থী নেতা সুজন চক্রবর্তী, সমীর পুততুণ্ড, অসীম চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। তাঁদের বক্তব্য, সারদা কাণ্ডে ভুক্তভোগীরা অনেকেই টাকা ফেরত পাচ্ছেন। অন্য সংস্থায় টাকা রেখে যাঁরা প্রতারিত হয়েছেন, তাঁদের টাকা ফেরতের ব্যাপারেও কমিশনের নজর দেওয়া জরুরি। কমিশন অবশ্য তাঁদের জানিয়ে দিয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যে-সব আমানতকারী তথ্য ও নথি দিয়ে টাকা ফেরতের আবেদন করেছেন, তাঁদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করা হবে। আপাতত সারদা সংস্থার প্রতারিতদের দিয়ে ওই কাজ শুরু হলেও পরে অন্য সংস্থার আবেদনকারীরাও এই সুযোগ পাবেন।
বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে এ দিন প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেন ফোরামের সদস্যেরা। পরে ফোরামের আহ্বায়ক অসীম চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সারদা নিয়ে কমিশন গঠনের পর সরকার যে-বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল, অনেকেই সেটা দেখেননি। তাই অন্য সংস্থার আমানতকারীদের জন্য ফের বিজ্ঞপ্তি জারি করার অনুরোধ করা হয়েছে কমিশনকে।” এ ব্যাপারে কমিশন তাঁদের জানিয়ে দিয়েছে, ওই বিজ্ঞপ্তিতে অন্য সংস্থার প্রতারিতদের কমিশনের কাছে আবেদন করতে বলা হয়েছিল। অনেকে করেওছেন। এর পরে আর বিজ্ঞপ্তি জারি অসম্ভব।
ফোরামের পক্ষ থেকে বলা হয়, কেউ যদি নিজে থেকে এখন কমিশনে আবেদন জানান, তা গ্রহণ করা হোক। জবাবে কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, আবেদন নেওয়ার শেষ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। তাই এর মধ্যে কেন ওই আবেদন জমা পড়েনি, তা জানাতে হবে। কমিশন যদি ওই জবাবে সন্তুষ্ট হয়, তা হলে আবেদন গ্রাহ্য করার কথা ভাবা হবে।
ফোরামের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়, জনগণের করের টাকায় এ ভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া ঠিক হচ্ছে কি? কমিশনের জবাব, কল্যাণমূলক কাজ হিসেবে সরকার এটা করতেই পারে। ফোরামের পক্ষে সুজন চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, “সারদার বেশ কিছু সম্পত্তি বেহাত হয়ে যাচ্ছে। দ্রুত তা বিক্রি করে আমানতকারীদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করার কথাও বলেছি কমিশনকে।” কমিশন তাঁদের জানিয়েছে, ওই কাজ চলছে।
এ দিন সারদার একটি সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা জমা না-দেওয়ার মামলায় সাংসদ কুণাল ঘোষকে তিন দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে বিধাননগর আদালত।
|