জোড়া খুনের ঘটনার আঠারো দিন পরে পুলিশের জালে ধরা পড়ল মূল অভিযুক্ত। এই নিয়ে গত এক মাসে বসিরহাট শহরে চারজনকে খুনের ঘটনায় জড়িত দুই সুপারি কিলার-সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জোড়া খুনের অন্যতম অভিযুক্ত সঞ্জয় মণ্ডলকে সোমবার রাতে কেন্দুয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মোটর সাইকেলে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ধাওয়া করে তাকে ধরে ফেলে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, একাধিক খুন, আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তোলাবাজি, ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে। বসিরহাটের ধলতিথা বাসিন্দা সঞ্জয়কে বাড়িতে না পেয়ে তার ছবি দিয়ে পোস্টার করে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিয়ে হুলিয়া জারি করা হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ১৮ ডিসেম্বর মাছ ব্যবসায়ী ভুবন মণ্ডল খুন হন। তার পাল্টা হিসাবে ১৯ ডিসেম্বর রাতে মাছ ব্যবসায়ী প্রিয়ব্রত পাল ও কাপড় ব্যবসায়ী সমীর বিশ্বাসকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। আতঙ্ক ছড়ায় ব্যবসায়ী মহলে। শহরে পর পর খুনের ঘটনায় নড়েচড়ে বসে পুলিশ। দুষ্কৃতীদের নিয়মিত ভয় দেখিয়ে তোলাবাজির পাশাপাশি ব্যবসায়ী খুনের প্রতিবাদে সরব হয় স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল। দুষ্কৃতীদের ধরতে তাদের ছবি সংবলিত পোস্টার তৈরি করে ছড়িয়ে দেয় পুলিশ। কিন্তু তার পরেও দুষ্কৃতীরা অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে। ঘটনার গুরুত্ব আঁচ করে উত্তর ২৪ পরগনরা পুলিশ সুপার অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে নির্দেশ দেন। বসিরহাটের ১০ জন দাগি দুষ্কৃতী-সহ ১৪৪ জন দুষ্কৃতীর একটি তালিকাও তৈরি করে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত ভুবন মণ্ডল খুনের ঘটনায় জড়িত রাইয়ান আহমেদ কুরেশিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে জেরা করে তিন নম্বর কলোনির বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মণ্ডল ওরফে ভীষ্মের জড়িত থাকার কথা জানতে পারে পুলিশ। সোনারপুর থেকে বিশ্বজিৎকে গ্রেফতার করা হয়। যাদের নামে পোস্টার তৈরি হয়েছিল বিশ্বজিঞ তাদের অন্যতম। জোড়া খুনে ব্যবহৃত গাড়ি ও তার চালক লুৎফার মণ্ডলকে গ্রেফতারের পর পুলিশ জানতে পারে মূলত জমি কেনা-বেচা এবং মেছো ভেড়ির ব্যবসা নিয়ে গোলমালে দুষ্কৃতীদের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়েই জোড়া খুন।
সোমবার রাতে গোপন সূত্রে পুলিশ জানতে পারে হাড়োয়ার গোপালপুরের কেন্দুয়ার কাছে একটি মোছোভেড়ির আলাঘরে লুকিয়ে রয়েছে সঞ্জয়। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী মেছোভেড়ি ঘিরে ফেললে সঞ্জয় একটি মোটর সাইকেলে চেপে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ ধাওয়া করে তাকে ধরে ফেলে। |