গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে যাত্রী ভেসেল ও গাড়ি পারাপারের জন্য বার্জ চলাচলের সুবিধার্থে মুড়িগঙ্গার চর কাটার জেরে ভেঙে পড়েছিল জেটিঘাট। অনন্ত প্রাথমিক ভাবে প্রশাসনের সেটাই অভিমত। কিন্তু ভাঙা জেটিঘাট যে ভাবে মেরামত করা হয়েছে তাতে ফের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে স্থানীয় মানুষের আশঙ্কা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের লট-৮ ঘাটের পাশে এলসিটি জেটিঘাট নিয়েই এই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি অনেক আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে। মেলারও আর বেশিদিন বাকি নেই। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বাস, লরি, মালবোঝাই ট্রাক সাগরদ্বীপে পাঠানোর জন্য বার্জে করে মুড়িগঙ্গা পার করানো হয়। নামানো হয় সাগরের কচুবেড়িয়া ঘাটে। কাকদ্বীপের লট-৮ ঘাটের কাছে এলসিটি জেটিঘাট দিয়েই ছোট-বড় সমস্ত গাড়ি বার্জে তোলা হয়। |
বহুবছর ধরে এ ভাবেই গাড়ি পারাপার হয়ে আসছে। কিন্তু গত পয়লা জানুয়ারি সকালে ওই ঘাট দিয়ে বার্জে তোলার জন্য মালবোঝোই লরি নিয়ে যাওয়ার সময় ঘাটের প্রায় ৫০ ফুট অংশ ভেঙে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় বার্জে করে গাড়ি পারাপার। তিনদিন বন্ধ থাকার পরে ভেঙে পড়া জেটিঘাট মেরামতির জন্য তোড়জোড় শুরু করে পূর্ত ও সড়ক বিভাগ। ভেঙে পড়া ঘাটের দু’ধারে বোল্ডার ফেলে তার উপর বালিমাটি ও ইট দিয়ে আপাতত রবিবার থেকে বার্জে গাড়ি ওঠানো-নামানোর কাজ শুরু হলেও ফের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই গিয়েছে। কারণ মেলার জন্য ইতিমধ্যেই গাড়ির ভিড় শুরু হয়েছে। অস্থায়ী ভাবে মেরামত করা ওই জেটিঘাট গাড়ির চাপ সামলাতে পারবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
প্রশাসন ও স্থানrয় সূত্রের খবর, এলসিটি ঘাট ভেঙে পড়ার মূল কারণ ঘাটচত্বর জুড়ে পড়ে যাওয়া নদীর চর কেটে ফেলা। প্রতি বছর মেলার আগে ভেসেল, বার্জ চলাচলের সুবিধার জন্য লট-৮ ঘাটের কাছে মুড়িগঙ্গা নদীতে পড়া চর কাটার কাজ হয়। এ বারও সেই কাজ চলার সময় এলসিটি ঘাটের নীচের অংশ থেকে প্রায় তিরিশ ফুট এলাকা জুড়ে চরের মাটি কেটে ফেলা হয়। এর ফলে ঘাটের ভিত দুর্বল হয়েই এই ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিক ভাবে প্রশাসন মনে করছে। |
ঘাটের ভাঙা অংশ মেরামতির দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার সংস্থার মালির অনিল পাল বলেন, “দ্রুত ঘাটের নীচে বালিমাটি ফেলে অস্থায়ীভাবে মেরামতির কাজ করা হচ্ছে। আশা করা যায় দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে।” আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যম্ত ওই ঠিকাদার সংস্থা ঘাট দেখভালের দায়িত্বে থাকবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।
কিন্তু কংক্রিটের মজবুত স্তম্ভের পরিবর্তে বোল্ডার, বালিমাটি ও ইট মেলায় আসা শ’য়ে শ’য়ে গাড়ির ধকল কতটা সইতে পারবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এমনকী ফের দুর্ঘটনার আশঙ্কাও করছেন অনেকে। যদিও কাকদ্বীপ হাইওয়ে সাবডিভিশনের সহকারী বাস্তুকার নিমাই চন্দ্র পাল বলেন, “ওই ঘাটটি নজরে রাখার জন্য সর্বক্ষণই আমাদের কর্মী রয়েছে। কোনও দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য সমস্ত রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” |