ইউসেবিও বেঁচে থাকলে বোধহয় খুশি হতেন। পর্তুগালের ফুটবল-কিংবদন্তির মৃত্যুর দিন দু’য়েকের মধ্যে এক বিরল কৃতিত্বের মালিক হয়ে গেলেন আর এক পর্তুগিজ মহাতারকা।
দেশ ও ক্লাব ফুটবল মিলিয়ে সোমবার গভীর রাতে নিজের কেরিয়ারের চারশোতম গোল করে ফেললেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। শুধু তাই নয়, রেকর্ডের গোল উৎসর্গ করে দিলেন প্রয়াত ইউসেবিওকেই। এক নয়, একজোড়া গোল।
“আমি এই দু’টো গোল আপনাকেই উৎসর্গ করছি, ইউসেবিও। বলা ভাল, আমি নয়। আপনিই গোল দু’টো করলেন! আমার হৃদয়ে আপনি চিরদিন থাকবেন,” সেল্টা ভিগার বিরুদ্ধে জয়ের পর বলে দেন রোনাল্ডো।
লা লিগায় সোমবার যে ম্যাচে ৩-০ শেষ পর্যন্ত জিতল রিয়াল মাদ্রিদ। তবে জিতলেও সেল্টা ভিগাকে রোনাল্ডোরা উড়িয়ে দিয়েছেন বলা যাবে না। বরং বিতর্ক হয়েছে অ্যাঙ্খেল দি’মারিয়াকে তুলে নেওয়ার সময়। কার্লো আন্সেলোত্তি তাঁকে তুলে গ্যারেথ বেলকে নামানোর সময় দেখা যায় যে, দি’মারিয়া অশ্লীল ইঙ্গিত করছেন কাউকে উদ্দেশ্য করে। |
চারশোতম গোল করে রোনাল্ডো। |
সিআর সেভেনও নিজের সেরা ফর্মে ছিলেন না। যদিও তাতে রেকর্ড সৃষ্টি আটকায়নি। ম্যাচে নিজের দু’নম্বর গোলটা করার সঙ্গে সঙ্গে চারশো গোলের মালিক হয়ে যান রোনাল্ডো। কিন্তু সেটা হলেও গোল সংখ্যার বিচারে প্রয়াত পর্তুগিজ কিংবদন্তির চেয়ে কয়েকশো মাইল পিছিয়ে। নিজের ফুটবল কেরিয়ারে সাতশো তেত্রিশ গোল আছে ইউসেবিওর! রোনাল্ডো সেখানে সবে চারশো। সিআর সেভেন বলেও দিয়েছেন“উনি আমাদের কাছে উদাহরণ।”
রোনাল্ডোর কৃতিত্ব যেমন বিশ্বজোড়া রিয়াল-সমর্থককে খুশি করেছে, তেমন বার্সা-সমর্থকরাও স্বস্তি পেতে পারেন একটা খবরে। লিওনেল মেসি কামব্যাক করছেন। বুধবার কোপা দেল রে-তে গেটাফের বিরুদ্ধে নামছে বার্সেলোনা। যে ম্যাচে বার্সেলোনা লাইন আপে রাখা হয়েছে আর্জেন্তিনীয় মহাতারকাকে। অর্থাৎ, স্প্যানিশ ফুটবলে মেসি বনাম রোনাল্ডোর চিরপরিচিত যুদ্ধ আবার ফিরতে চলেছে। যে যুদ্ধ গত ১০ নভেম্বরের পর থেকে আর দেখা যায়নি।
এবং যে যুদ্ধ ব্রাজিল বিশ্বকাপে দেখার সম্ভাবনা নিয়ে ফুটবলমহল ইতিমধ্যেই গরম!
সেটা কী ভাবে সম্ভব?
ব্রাজিল বিশ্বকাপে যা গ্রুপ পড়েছে, এবং ফেভারিটরা যদি ঠিকঠাক ওঠে, তা হলে বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে মেসি বনাম রোনাল্ডো হওয়ার একটা সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। বিশ্বকাপে গ্রুপ ‘এফ’-এ আছে আর্জেন্তিনা। যে গ্রুপের বাকি তিন দল ইরান, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা এবং নাইজেরিয়া। যদি আর্জেন্তিনা গ্রুপ শীর্ষে শেষ করে তা হলে তারা খেলবে গ্রুপ ‘ই’-র দ্বিতীয় টিমের সঙ্গে। যে গ্রুপে আছে ফ্রান্স, সুইৎজারল্যান্ড, ইকুয়েডর ও হন্ডুরাস। শক্তির বিচারে যে গ্রুপে ফ্রান্সের এক এবং সুইৎজারল্যান্ডের দুই হওয়া উচিত। |
শেষবারের জন্য। তিনি চেয়েছিলেন, তাঁর মরদেহ যেন বেনফিকার লুজ স্টেডিয়ামে
একবার নিয়ে আসা হয়। সেই ইচ্ছা অনুযায়ী মাঠে আনা হচ্ছে ইউসেবিও-র কফিন। |
উল্টো দিকে, পর্তুগাল আবার রয়েছে জার্মানির গ্রুপে। গ্রুপ ‘জি’-তে। যে গ্রুপকেও অনেকে গ্রুপ অব ডেথ বলছেন। কারণওই গ্রুপে জার্মানি-পর্তুগাল ছাড়াও রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ঘানা। ফিলিম লামের টিমের যা ফর্ম তাতে জার্মানিরই গ্রুপ টপ করার সম্ভাবনা। এবং রোনাল্ডোর পর্তুগাল যদি দ্বিতীয় হয়, তা হলে তারা রাউন্ড অব সিক্সটিন ম্যাচ খেলবে গ্রুপ ‘এইচ’-র দ্বিতীয় টিমের সঙ্গে। যা শক্তির বিচারে বেলজিয়াম বা রাশিয়া হতে পারে।
অর্থাৎ, সব ঠিকঠাক চললে শেষ ষোলোর যুদ্ধ দাঁড়াতে পারে আর্জেন্তিনা বনাম সুইৎজারল্যান্ড। পর্তুগাল বনাম বেলজিয়াম বা রাশিয়া।
আর কোয়ার্টার পর্ব যে ভাবে সাজানো হয়েছে, তাতে উপরোক্ত যুদ্ধ আর্জেন্তিনা এবং পর্তুগাল জিতলেই স্বপ্নের ম্যাচ।
আর্জেন্তিনা বনাম পর্তুগাল।
এলএমটেন বনাম সিআর সেভেন।
ব্রাজিল বিশ্বকাপের ‘দ্য ম্যাচ।’ |