|
|
|
|
সদস্য সংগ্রহে নামল আপ, জোটে আগ্রহী জেভিএম
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • রাঁচি
৭ জানুয়ারি |
সকাল সাড়ে দশটা। রাঁচির কাছারি চকের কাছে অফিসমুখী বাইকের মুখ ঘুরে গেল রাস্তায় দাঁড়ানো সাদা ট্যাবলোটির সামনে। মানিব্যাগ খুলে দু’টি কড়কড়ে একশো টাকার নোট বার করে এগিয়ে এলেন বিজ্ঞাপন সংস্থার কর্মী সুখবিন্দর। ইচ্ছে ‘আম আদমি পার্টি’-র সদস্য হওয়া। খাতায় তাঁর নাম লিখলেন দলের নেতারা। আর জোড় হাতে জানালেন আপাতত সদস্য হতে পয়সা লাগবে না।
বেলা আড়াইটা। সুজাতা চকেও প্রায় একই রকম ছবি। সাদা ট্যাবলো আর মিছিল দেখে এগিয়ে এলেন ভ্যানচালক দুখুয়া ওঁরাও। রাঁচি শহরের ফুটপাথই তাঁর ঠিকানা। নিজের পরিচয় দিতেই সঙ্গে সঙ্গে তাঁর নামও খাতায় লিখে নেওয়া হল।
আজ সারাদিন রাঁচির বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে এমনই ছবি দেখা গিয়েছে। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ছবি দেওয়া সাদা ট্যাবলো আর ঝাঁটা ও তেরঙা পতাকা নিয়ে আপের লোকজনকে হাঁটতে দেখে সাধারণ মানুষ উৎসাহ নিয়ে তাঁদের দিকে এগিয়ে এসেছেন। সাধারণ মানুষের নামে জয়ধ্বনি দিতে থাকা আপ নেতাদের কাছে এসে অনেকেই খোঁজ নিচ্ছেন, সদস্যপদ নিতে গেলে কী করতে হবে? অনেকের প্রশ্ন, লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য কী ভাবে আবেদন পত্র অরবিন্দ ভাইয়ের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়—তা নিয়েও। সকালে মাত্র এক ঘন্টার মধ্যেই রাঁচি শহরে অন্তত তিনশো মানুষ আপ-এর সদস্য হয়েছেন বলে দলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। |
রাঁচির রাস্তায় সদস্য-সংগ্রহ অভিযানে আপ। —নিজস্ব চিত্র। |
লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য পরশু দিনই সারা দেশের মানুষের কাছ থেকে আবেদন পত্র চেয়েছেন আপ প্রধান তথা দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তার আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যেই রাঁচিতে দলীয় সদস্য পদ সংগ্রহ করতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন এখানকার আপ পার্টির নেতারা। উল্লেখ্য, রাঁচির রেডিয়াম রোডের কাছে দিন কুড়ি আগে দলীয় কার্য্যালয় খুলেছে আপ। আর সেটির উদ্বোধনও করা হয়েছিল এক রিকশা চালককে দিয়ে।
দলের তরফ থেকে অবশ্য ঘোষণা করা হয়েছে: ১০ তারিখ থেকে সদস্যপদ সংগ্রহের কাজ শুরু হবে। কিন্তু এখানে তিন দিন আগেই সেই কাজ করতে নেমে পড়েছেন আপ নেতারা। তাঁরা জানান, হাতে সময় নেই। অল্প সময়ের মধ্যে অনেকের কাছে পৌঁছতে হবে। ফলে তাঁরা আগে থেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন। আপ-এর রাঁচি জেলার আহ্বায়ক অজয় চৌধুরি বলেন, “সদস্য পদের জন্য কোনও মূল্য নেই। তবে অনেকেই স্বেচ্ছায় অনুদান দিয়েছেন। যাঁরা সদস্য হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে নিম্নবিত্ত মানুষই বেশি। কুড়ি শতাংশ মধ্যবিত্ত।”
দিল্লিতে আপের জয়যাত্রা এ রাজ্যের রাজনৈতিক মহলেও প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। এ রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল বাবুলাল মারাণ্ডির ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চা লোকসভা নির্বাচনে আপের সঙ্গে যৌথভাবে লড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এমনকী শহরের সব আসন আপের নেতাদের জন্য তাঁরা ছাড়তে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে মোর্চা। ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির প্রধান তথা প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ সালখান মুর্মু গত কাল সরাসরি বলেছেন, “আপ রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে অন্য ছাঁচে ফেলে দিয়েছে। আমরা ওদের সঙ্গে যৌথভাবে নির্বাচন লড়ার সব ধরনের চেষ্টা করব।”
তবে আপের আহ্বায়ক অজয়ের কথায়, “কে কী চাইছেন আমরা জানি না। আমরা জাতীয় স্তরের রাজনৈতিক দলগুলিকেই এখন গুরুত্ব দিচ্ছি না। এই সব আঞ্চলিক দল নিয়েও আমাদের এখন কোনও ভাবনা নেই। দিল্লির নির্বাচনের আগে জামশেদপুরের জেভিএমের সাংসদকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল আমাদের দলে আসার জন্য। কিন্তু তিনি তখন রাজি হননি। আজ আমাদের ভাবার পালা।”
|
পুরনো খবর: প্রার্থী বাছতে আবেদন চাইছে আপ |
|
|
|
|
|