ঝড়-জল-বন্যার আড়ালে কেটে গিয়েছে গোটা উৎসবের মরসুম। তবু মুক্তি নেই ব্রিটেনের। আবহাওয়া দফতর বলছে, খুব শীঘ্রই অতলান্তিক পেরিয়ে ব্রিটেনের দক্ষিণ এবং পশ্চিম উপকূলে আছড়ে পড়বে ঝড় ‘হারকিউলিস’। উত্তাল হবে সমুদ্র, সঙ্গে বৃষ্টি এবং বন্যার আশঙ্কাও প্রবল। অতলান্তিকের ও পারে আমেরিকায় আবার খলনায়কের ভূমিকা নিতে চলেছে তুষারপাত। মার্কিন আবহাওয়া দফতরের হুঁশিয়ারি, কোনও কোনও এলাকায় শূন্যের থেকে ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে পৌঁছবে তাপমাত্রা।
তবে এ মরসুমে আগেও ঝড়-বৃষ্টি-তুষারপাত দেখেছে ব্রিটেন ও আমেরিকা। কিন্তু অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আসার আগেই ব্রিটেনে ফের হারকিউলিসের অশনি সঙ্কেত। এবং এ বারও এই ঝড়ের অভিঘাত মূলত উপকূল এলাকার বাসিন্দাদেরই সইতে হবে। পরিবেশ সংস্থা জানিয়েছে, দেশে ইতিমধ্যেই ৩৪০টি বন্যা সতর্কতা জারি হয়েছে। |
ওয়েলসের উপকূল এলাকায় আছড়ে পড়ছে বিশাল ঢেউ। সোমবার। ছবি: এ পি। |
এর মধ্যে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি হয়েছে দক্ষিণ পশ্চিম ইংল্যান্ডের ডরসেট ‘কাউন্টিতে’। সেখানে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানিয়েছে পরিবেশ দফতর। একই সঙ্গে পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে প্রতি ঘণ্টায় ৭০ মাইল বেগে হাওয়া বইতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ঢেউয়ের উচ্চতা ৫০ ফুট হতে পারে বলেও আশঙ্কা। সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিও হতে পারে। পশ্চিম ওয়েলসের আবেরিসটুইথে বন্যার আশঙ্কা প্রবল। তাই সেখানের বাসিন্দাদের ইতিমধ্যেই ওই এলাকা ছেড়ে চলে আসতে বলেছে প্রশাসন।
অন্য দিকে, আমেরিকার অবস্থাও শোচনীয়। আবহবিদেরা জানিয়েছেন, পোলার ভর্টেক্স বা এক ধরনের মেরু ঘূর্ণবাত্যার জেরে তীব্র শীত জাঁকিয়ে বসতে চলেছে আমেরিকার ‘মিডওয়েস্ট’ অঞ্চলের রাজ্যগুলিতে। তার মধ্যে সব চেয়ে খারাপ অবস্থা হতে পারে মিনেসোটা ও নর্থ ডাকোটার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এ দিনই মিনেসোটার সব স্কুল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন গভর্নর মার্ক ডেটন। বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে বেরোতেও নিষেধ করা হচ্ছে।
তবে আবহবিদ্দের মূল আশঙ্কা অন্য জায়গায়। আসলে, এ ধরনের মেরু-ঘূর্ণিঝড়ের ফলে কোনও কোনও অঞ্চলের তাপমাত্রা শূন্যের থেকে ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে নেমে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ‘প্রাণঘাতী’ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। সময় থাকতে খাবার ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে বাড়িতেই থাকার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন। বিপদঘণ্টি শুনতে পাচ্ছে ‘উষ্ণ’ দক্ষিণের রাজ্যগুলিও। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বুধবারের মধ্যে ২০ বছরের শীতলতম দিন কাটাবেন আমেরিকার বেশির ভাগ অঞ্চলের বাসিন্দারা।
|