নিজস্ব সংবাদদাতা • বৈদ্যবাটি |
তাঁর দল ছাড়া নিয়ে জল্পনা চলছিলই। রবিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে সোমেন মিত্র নিজের মুখে ঘোষণা করলেন, আগামী ১৫ জানুয়ারি তিনি তৃণমূল ছাড়ছেন। তার পরে যোগ দেবেন কংগ্রেসে।
২০০৮ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন সোমেনবাবু। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরেই তাঁর দল ছাড়া নিয়ে নানা জল্প শুরু হয়েছিল। তাঁকে কংগ্রেসের নানা অনুষ্ঠানে দেখা যাচ্ছিল। রবিবার কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যকে পাশে নিয়ে বৈদ্যবাটির বিএস পার্ক মাঠে ওই দল আয়োজিত ‘সংহতি ফুটবল প্রতিযোগিতা’র মঞ্চে সোমেনবাবু বলেন, “১৫ জানুয়ারি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেব। ওই দিনই তৃণমূলের সঙ্গে সব রকম সম্পর্ক ছিন্ন করব।” তবে, দল ছাড়ার পিছনে তাঁর রাগ বা ক্ষোভ-অভিমান নেই এবং তিনি অসম্মানিতও হননি বলে দাবি করেছেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। তা হলে কেন দল ছাড়ছেন, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমি তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলাম, মনে হচ্ছে তা করতে পারছি না। মানুষের মঙ্গলের জন্য এই দলে থেকে যে ভাবে কাজ করার ইচ্ছা ছিল, তা হচ্ছে না। কংগ্রেস আমার আঁতুরঘর। তাই কংগ্রেসেই যোগ দেব।” |
পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে সোমেন মিত্র। রবিবার ছবিটি তুলেছেন প্রকাশ পাল। |
তবে, ১৫ জানুয়ারিই তিনি কংগ্রেসে যোগ দেবেন কি না, তা স্পষ্ট করেননি সোমেনবাবু। তিনি বলেন, “১৬ জানুয়ারি সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে আমার পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপের কথা জানাব।”
সোমেনবাবুর দল ছাড়ার ঘোষণাকে গুরুত্ব দিতে চাননি তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “উনি ছ’মাস ধরেই দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছেন। ডায়মন্ড হারবারের বাইরে বেরোতেন না। ওঁর দলত্যাগ নিয়ে দলে কোনও প্রভাব পড়বে না।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “উনি প্রবীণ নেতা। যে সময়ে কংগ্রেসের সাইনবোর্ড উঠে যেতে বসেছে, সেই সময়ে ওই দলে যোগ দিয়ে উনি কী করবেন? সাইনবোর্ডটা কি বাঁচাতে পারবেন?”
এ দিন দুপুরে সোমেনবাবু দিল্লি রোডের পিয়ারাপুর মোড়ে পৌঁছতেই কংগ্রেস সমর্থকদের শ’দেড়েক মোটরবাইকের একটি বিশাল মিছিল তাঁকে অভ্যর্থনা জানিয়ে খেলার মাঠে নিয়ে আসে।
রাস্তায় তাঁর নামে বড় বড় হোর্ডিংও লাগানো হয়েছিল কংগ্রেসের তরফে। সোমেনবাবুর কংগ্রেসে যোগদানের অনুষ্ঠান বড় ভাবে করা হবে জানিয়ে প্রদীপবাবু ‘বিবেকবান’ তৃণমূল নেতাদেরও দলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “সোমেন মিত্রের কংগ্রেসে ফেরা তৃণমূলের কাছে একটা বার্তা। তৃণমূলে অনেক বিবেকবান নেতা আছেন। আপনারা ভাবুন তৃণমূলে থেকে রাজ্যের উন্নয়ন আদৌ সম্ভব কি না। সোমেনের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে আপনারাও বেরিয়ে আসুন। কংগ্রেসে আপনারা স্বাগত।” সোমেনবাবুর কংগ্রেসে ফেরার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন অধীর চৌধুরী এবং কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানও। অধীরবাবু বলেন, “সোমেনদার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। তাঁর কাছে আমি ঋণী।” |