|
|
|
|
টানাটানি পদ নিয়ে, বোর্ড গঠন বহু দূর
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
১৬ ডিসেম্বর পুরপ্রধান নির্বাচন হয়েছে মেদিনীপুরে। নিয়ম মতো, তার এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ বোর্ড গঠন করতে হয়। কিন্তু দিন কুড়ি কেটে গেলেও পূর্ণাঙ্গ পুরবোর্ড তো দূরের কথা উপপুরপ্রধানই ঠিক করে উঠতে পারল না তৃণমূল।
শোনা যাচ্ছে, উপপুরপ্রধান এবং পুরপ্রধান পারিষদের পদ নিয়ে দলের অন্দরে দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে। পছন্দের পদ পেতে একাংশ কাউন্সিলর নেতৃত্বের কাছে দরবারও করছেন। কারও পছন্দ পূর্ত দফতর, কারও জল, কারও বা জঞ্জাল। এই পরিস্থিতিতে নাম চূড়ান্ত করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন নেতৃত্ব। রাজ্য নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ না করলে যার সমাধান হওয়া কঠিন। দলের এক সূত্রের দাবি, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের হস্তক্ষেপে চলতি সপ্তাহে এ সমস্যার সমাধান হতে পারে। চলতি সপ্তাহে মুকুলবাবুর ঝাড়গ্রামে আসার কথা রয়েছে। তখনই তাঁর সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ বোর্ড গঠন নিয়ে আলোচনা করতে পারেন জেলা নেতৃত্ব। প্রকাশ্যে অবশ্য এই নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ নেতারা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি দীনেন রায় সংক্ষেপে বলেন, “এই নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা চলছে।” দলের মেদিনীপুর শহর সভাপতি আশিস চক্রবর্তী বলেন, “দ্রুত নাম চূড়ান্ত হবে। তারপরই নতুন উপপুরপ্রধান এবং পুরপ্রধান পারিষদেরা নিজেদের দায়িত্ব বুঝে নেবেন।”
এ বার মেদিনীপুরে তৃণমূল একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হয়েছে ঠিকই, তবে ফল খুব ভাল হয়নি। কোনও মতে মান রক্ষা হয়েছে। ২৫টি আসনের মধ্যে ১৩টি পেয়েছে তৃণমূল। যেখানে ২০০৮ সালের পুরভোটে তৃণমূল ১০টি আসন পেয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে সরতে হয়েছে দলের শহর সভাপতি সুকুমার পড়্যাকে। সুকুমারবাবুর জায়গায় নতুন শহর সভাপতি হয়েছেন আশিস চক্রবর্তী। শহর সভাপতি পদে দ্রুত রদবদল হয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ বোর্ড গঠন করতে সময় লাগছে কেন, পরিষ্কার নয় লোকজনের কাছে। কংগ্রেস কাউন্সিলর কৌস্তভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা মেলার পরও পূর্ণাঙ্গ বোর্ড গঠন করতে দীর্ঘ সময় লাগছে কেন বুঝতে পারছি না। বোর্ড গঠন না-হওয়ায় বৈঠক হচ্ছে না। সমস্যা হচ্ছে শহরবাসীর।”
দীর্ঘসূত্রতার দু’টি কারণ সামনে এসেছে এখনও। প্রথমটা, পদ নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে দড়ি টানাটানি। দ্বিতীয়টা, কংগ্রেস কাউন্সিলরদের দলে টানার চেষ্টা। অন্দরের খবর, পুরবোর্ডে সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও পাল্লা ভারী করতে ইতিমধ্যে মেদিনীপুরে দল ভাঙাতে তৎপর হয়েছে তৃণমূল। পুরভোটের পর থেকে শহরে জল্পনা চলছে, একাধিক কংগ্রেস কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন। গেল সপ্তাহে শহরে এসে এক প্রশ্নের উত্তরে মুকুল রায়ও জানান, ‘কয়েকজন কাউন্সিলর যোগাযোগ করেছেন। প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছে।’ তাঁরা কারা, তা অবশ্য ভেঙে বলেননি তিনি। রাজনৈতিক মহলের গুঞ্জন, কংগ্রেস কাউন্সিলরদের দলে টানতে গেলে কোনও না-কোনও পদের টোপ দিতে হবে। তাই দলবদল হওয়ার আগে পূর্ণাঙ্গ বোর্ড গঠন করতে চাইছে না তৃণমূল।
এই প্রেক্ষিতে আবার তৃণমূলের অন্দরে অসন্তোষ দানা বাধতে শুরু করেছে। কংগ্রেসের কোনও কাউন্সিলর দলে এলে তাঁকে পদ দেওয়া যাবে না বলে একাংশ তৃণমূল কাউন্সিলর স্পষ্ট জানিয়ে রেখেছে। ওই কাউন্সিলরদের বক্তব্য, কংগ্রেসের কেউ তৃণমূলে এসে সরাসরি উপপুরপ্রধান বা পুরপ্রধান পারিষদের পদে বসবেন, এটা হতে পারে না।
ক্ষমতার টানাপেড়েনে ফুরিয়ে আসছে সময়। দিন দশেক মাত্র হাতে আছে আর। তার মধ্যে তৃণমূল কী ভাবে ঘর গোছায়সেটাই এখন দেখার। |
পুরনো খবর: বিরোধী প্রার্থী নেই, বিনা-যুদ্ধে পুরপ্রধান প্রণব |
|
|
|
|
|