|
|
|
|
আপকে রুখতে মোদীর অস্ত্র রামদেব-কিরণ
নিজস্ব প্রতিবেদন
৫ জানুয়ারি |
এক সময়ে তাঁকে দেখা গিয়েছে অণ্ণা হজারে, অরবিন্দ কেজরিওয়ালদের দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলনে সামিল হতে। এখন নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে সেই যোগগুরু রামদেবই বললেন, “মোদী যদি মওত কা সওদাগর হন, তবে পণ্ডিত নেহরু মওত কা মহা সওদাগর।” কেজরিওয়ালদের ঠেকাতে বিজেপি এ বার যোগগুরু ও অণ্ণার আর এক সহযোগী কিরণ বেদীকে ব্যবহার করতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আজ দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে রামদেবের একটি ট্রাস্টের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয় মোদী, অরুণ জেটলি, রাজনাথ সিংহের মতো শীর্ষ বিজেপি নেতাদের। আগেই মোদীকে সমর্থনের কথা জানিয়ে দিয়েছেন রামদেব। শনিবার জানান, মোদীকে সমর্থন করতে তিনি রাজি। তবে বিজেপি ও মোদীকে বিদেশে থাকা কালো টাকা ফেরাতে হবে। |
|
রামদেবের মঞ্চে হাজির মোদী। পেলেন যোগগুরুর সমর্থনও। রবিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: এএফপি। |
আজ রামদেবের মঞ্চ থেকে প্রাসঙ্গিক সব বিষয়ই ছুঁয়ে গিয়েছেন মোদী। জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোট গণ আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। এই ভোটে মূল ইস্যু উন্নয়ন। তাঁর কথায়, “রামদেবও এই গণ আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। তিনি জানেন রাজনীতিকরা কী ভাবে তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানিয়ে রাতে হিংসার আশ্রয় নেন।” দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলনের সময়ে রামলীলা ময়দানে রামদেব ও তাঁর সহযোগীদের উপরে হামলা চালায় দিল্লি পুলিশ। তা নিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিল কেন্দ্র তথা কংগ্রেস। সেই স্মৃতি উস্কে দিয়ে মোদীর বক্তব্য, “টেপ রেকর্ডের মতো কথা শুনে কাউকে বিচার করবেন না। মানুষের কাজ দিয়ে তাঁকে বিচার করুন।” মোদীর মতে, ২০১৪ সালের ভোট অতীতের সব রেকর্ড-ঐতিহ্যকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে।
সম্প্রতি একটি সাংবাদিক বৈঠকে গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গার প্রসঙ্গ তুলে মোদীকে নজিরবিহীন আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। মোদীর বক্তব্য, “যখন আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয় তখন আমি ভাবি দেশের মানুষ এক জন চা বিক্রেতাকে বিশাল উচ্চতায় তুলে নিয়ে গিয়েছেন। আমি আশাবাদী। নিরাশা শব্দটি আমার অভিধানে নেই।” নাম না করে রাহুল গাঁধীকেও এক হাত নিয়েছেন তিনি। বিভিন্ন অঞ্চলে গরিব মানুষের কাছে পৌঁছনোর কর্মসূচি নিয়েছিলেন রাহুল। মোদীর বক্তব্য, “যে নিজে যন্ত্রণার মধ্যে মানুষ হয়েছে তাকে এ ভাবে ঘুরে বেড়াতে হয় না।”
কিন্তু রামদেবকে গুরুত্বই বা দিচ্ছেন কেন মোদী? রাজনৈতিক সূত্রের খবর, অরবিন্দ কেজরিওয়ালদের আম আদমি পার্টি (আপ) আপাতত চিন্তায় রেখেছে মোদীকে। লোকসভা ভোটে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে চায় আপ। দিল্লি বিধানসভা ভোটে মোদী ঝড়ের প্রভাব কিছুটা হলেও কমিয়ে দিয়েছেন কেজরিওয়াল। কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে আপাতত তিনিই রাজধানীর মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে। সারা দেশে আপ-ঝড়ের প্রভাবে তাদের কতটা ক্ষতি হবে সেই হিসেব কষতে বাধ্য হচ্ছে বিজেপি। তাই কেজরিওয়ালের প্রাক্তন সহযোগী রামদেবকে পাশে এনে পাল্টা চাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন মোদী।
মোদীকে অস্বস্তিতে ফেলতে ইতিমধ্যেই গুজরাতে তাঁর ঘনিষ্ঠ মন্ত্রী আনন্দীবেন পটেলের স্বামী মফৎলালকে দলে টেনেছে আপ। বিজেপি-বিরোধী মুখ মল্লিকা সারাভাইয়ের সঙ্গেও তাদের কথাবার্তা চলছে বলে আপ সূত্রে খবর। এই পরিস্থিতিতে রামদেব ছাড়াও অণ্ণার সহযোগী কিরণ বেদীকে পাশে চাইছেন মোদী। আজ মোদীর সভার পরে বেদী টুইট করেছেন, “মোদীর কথা শুনছিলাম। সরাসরি প্রশাসন চালানোর বিষয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা অতুলনীয়। দ্রুত এগোতে গেলে এই অভিজ্ঞতারই প্রয়োজন।” বিজেপি সূত্রে খবর, বেদীর সঙ্গে কথাবার্তাও চালাচ্ছে দলের একটি অংশ।
কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার মতে, বিষয়টি নতুন কিছু নয়। রামদেব অনেক দিন
ধরেই বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। কিরণ বেদীও চাঁদনি চক কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রার্থী হতে চান। তাই কেজরিওয়ালদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।
|
পুরনো খবর: আসন ধরে ধরে জয়ের অঙ্ক কষছে বিজেপি |
|
|
|
|
|