ছাত্র সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র তোলাকে কেন্দ্র করে শনিবার উত্তেজনা ছড়াল জলপাইগুড়ি জেলার চারটি কলেজে। ফালাকাটা, ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার কলেজে গত শুক্রবারের মতো শনিবারেও ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে দাবি-পাল্টা দাবিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সব ক্ষেত্রেই মনোনয়ন পত্র তুলতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। আগামী ১৭ জানুয়ারি জলপাইগুড়ি জেলার সব কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে। গত শুক্রবার এবং এ দিন শনিবার ছিল মনোনয়ন পত্র সংগ্রহের দিন। এই দুই দিনে ডুয়ার্সের ফালাকাটা ও ধুপগুড়ি কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বাধার মুখে পড়ে এসএফআই-এর কোনও প্রার্থী মনোনয়ন পত্র তুলতে পারেননি বলে অভিযোগ। গত শুক্রবার ওই দুই কলেজে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। |
শনিবার ধূপগুড়ি কলেজে কোনও সংঘর্ষের ঘটনা না ঘটলেও ফালাকাটায় সিপিএম নেতা তথা জেলা পরিষদের প্রাক্তন বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ ঈশ্বর রায়কে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ এসএফআই-এর সমর্থক এক ছাত্রীকে বাইকে চাপিয়ে তিনি জটেশ্বর থেকে ফালাকাটা মনোনয়নপত্র তোলার জন্য যাচ্ছিলেন বলে দলীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে। সে সময়ে কলেজের কাছে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে তাঁর মোটরবাইক আটকে হামলার অভিযোগ ওঠে। এসএফআই-এর দাবি, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা ঈশ্বরবাবুর উপর হামলা চালায়, লাঠির আঘাতে তাঁর মাথা ফেটে যায়। ঈশ্বরবাবুকে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
আলিপুরদুয়ারের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বিশ্বচাঁদ ঠাকুরের কথায়, “মারধরের কোনও অভিযোগ জমা পনেনি। গতকালের তুলনায় কলেজ চত্বরে পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মনোনয়ন পত্র তোলাকে কেন্দ্র করে কোনও গোলমাল হয়নি।”
এসএফআই-এর ধূপগুড়ি জোনাল সম্পাদক নূর আলম অভিযোগ করে বলেন, “তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সন্ত্রাসের কারণেই নির্বাচনে অংশ নেইনি। এ ধরণের ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। আমাদের কলেজে অন্তত হয়নি।” ধূপগুড়ির তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা দেবদুলাল ঘোষের পাল্টা দাবি, “বাধা দেওয়ার কোনও প্রশ্ন ওঠে না। এ ধরণের অভিযোগ ভিত্তিহীন।” ধূপগুড়ি কলেজের অধ্যক্ষ নীলাংশু শেখর দাস বলেছেন, “প্রার্থীপদের তুলনায় অনেক বেশি মনোনায়নপত্র দেওয়া হয়েছে। শনিবার মনোনায়নপত্র নিয়ে কোনও গোলমালের অভিযোগ আমার কাছে আসেনি।”
অন্য দিকে, আলিপুরদুয়ার কলেজের ছাত্র সংসদের ৪৯টি আসনের মধ্যে পৃথক ভাবে এসএফআই ২৬টি ও ছাত্র পরিষদ ২২টি মনোনয়ন পত্র তোলে। এসএফআইয়ের অভিযোগ, কলেজে বহিরাগতদের ঢুকিয়ে মনোয়নয়ন তুলতে বাধা দিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নেতা রাজীব সাহা ওই অভিযোগ ভিত্তিবীন বলে দাবি করেছেন।
|