ভারতীয় দলের নতুন পেস অস্ত্র তিনি, নিয়মিত জাতীয় দলের হয়ে খেলছেন, সদ্য শেষ হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ভারতীয় পেসারদের মধ্যে তাঁর বোলিং নিয়েই আলোচনা চলেছে বেশি। আলোচনা চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকায় হাসিম আমলাকে তাঁর বারবার আউট করা নিয়ে।
কিন্তু মহম্মদ শামি তবু তৃপ্ত কোথায়?
শনিবার বাংলার প্র্যাকটিস সেশন শেষে যে শামি কথাবার্তা বলছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়ে, তিনি নিজের পারফরম্যান্সে খুব বেশি খুশি নন। জানিয়ে দিচ্ছেন, যে রকম পারফর্ম করবেন ভেবেছিলেন, তার আশি শতাংশ হয়েছে। বাকিটা হয়নি।
“টেস্ট সিরিজে দশ-বারোটা উইকেট পাব মনে হয়েছিল। কিন্তু পেয়েছি শেষ পর্যন্ত ছ’টা। যদিও ডারবান টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে বল করার তেমন সুযোগ ছিল না,” এ দিন লক্ষ্মীরতন শুক্ল-র বাংলার সঙ্গে প্র্যাকটিস শেষে বলে দিলেন শামি। আর হাসিম আমলাকে সিরিজে ছ’বারের মধ্যে পাঁচবার আউট করার রসায়ন? “আমি প্রতিপক্ষ নিয়ে আলাদা করে ভাবি না। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বড় বড় ব্যাটসম্যানদের নিয়ে কিছু প্ল্যান করে গিয়েছিলাম। সেগুলো ঠিকঠাক লেগে গিয়েছে,” বলে দিচ্ছেন শামি। ভারতের হয়ে খেলার তৃপ্তি আছে, তবু কিছুটা আফশোস করছেন বাংলার ড্রেসিমরুমে থাকতে না পারার জন্য। |
বাংলার হয়ে খেলতে পারবেন না। তবু শনিবার লক্ষ্মীদের
সঙ্গে ইডেনের নেটে শামি। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস। |
আসন্ন নিউজিল্যান্ড সফরে উড়ে যাওয়ার জন্য যিনি কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে পারছেন না। এবং যাঁকে খেলানো নিয়ে একপ্রস্থ নাটকও হল।
সিএবি কর্তাদের একটা অংশ চাইছিলেন, শামিকে যে করে হোক কোয়ার্টার ফাইনালে নামিয়ে দিতে। শামি নিউজিল্যান্ডের জন্য রওনা হচ্ছেন আগামী ১১ জানুয়ারি রাতে। আর রেলের বিরুদ্ধে বাংলার কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ শেষ হওয়ার নির্ধারিত দিন ১২ জানুয়ারি। শোনা গেল, কোনও কোনও কর্তা শামিকে খেলানোর জন্য এতটাই মরিয়া হয়ে পড়েন যে, বলাবলি হতে থাকে ম্যাচ চার দিনে শেষ হয়ে যাবে! পাঁচ দিনে যাবে না মোটেও। শামি সেক্ষেত্রে ১১ জানুয়ারি রাতেই ফ্লাইট ধরতে পারবেন। বোর্ডের কাছে শামিকে খেলানোর অনুমতি চেয়ে দেখা হোক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা ফলপ্রসূ হয়নি। কারণ কেউ কেউ পাল্টা বলেন, রঞ্জি যদি চার দিনে শেষ না হয়, আর শামিকে যদি চলে যেতে হয়, তা হলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে বাংলা পেসারকে। সেটা কতটা গ্রহণযোগ্য?
পাশাপাশি মনোজ তিওয়ারির নাম এ দিন আবার রঞ্জি ট্রফির জন্য রেজিস্ট্রেশন হল। রঞ্জির জন্য প্রত্যেক টিমের পঁচিশ জন করে ক্রিকেটারের নাম রেজিস্টার করতে হয়। মনোজের নাম এত দিন ছিল না। এ দিন হল। কিন্তু তাঁর কোয়ার্টার ফাইনালে নামা বেশ অনিশ্চিত। এ দিন বাংলা ফিটনেস স্টাফেরও কাউকে কাউকে বলতে শোনা গেল যে আরও দিন সাতেক সময় লাগবে মনোজের। টিমও ঝুঁকি নিতে চাইছে না। তবে মনোজ এ দিনও ছিলেন প্র্যাকটিসে।
ঠিক যেমন ছিলেন মহম্মদ শামি। দীর্ঘক্ষণ বাংলা নেটেও বল করলেন। পরে বলছিলেন, “আমি আমার ভুলত্রুটি নিয়ে টিমমেট, কোচের সঙ্গে কথা বলেছি। আবার ওরাও বলেছে। আমি তো ভেবেছিলাম নিউজিল্যান্ড সফরের আগে প্র্যাকটিসই পাব না।” শামি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, নিউজিল্যান্ড তাঁর কাছে নতুন নয়। আগেও গিয়েছেন। “দক্ষিণ আফ্রিকার মতো এখানেও আমাকে লেংথটা ঠিক রাখতে হবে। তবে নিউজিল্যান্ডের হাওয়ার ব্যাপারটা মাথায় রাখতে হবে,” বলে দেন শামি। যিনি আরও বলে গেলেন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ইদানীং কথাবার্তা না হয়েও সৌরভ যে তাঁকে শুভেচ্ছাবার্তা আগে পাঠিয়েছেন, তার মর্যাদা দেওয়ার চেষ্টা করবেন বরাবর।
আর জাহির খান? টিম ইন্ডিয়া ড্রেসিংরুমে একসঙ্গে থেকে জাহিরের থেকে কী শিখলেন? বোলিংয়ে যোগ হল কিছু? “জাহির ভাইয়ের থেকে অনেক কিছু শেখার চেষ্টা করছি। কিন্তু আমি যদি বোলিংয়ে বদল আনতে যাই, আমার বোলিং খারাপও হয়ে যেতে পারে। তার চেয়ে জাহির ভাই কী বলতে চাইছে, সেটা বোঝার চেষ্টা করেছি। অ্যাপ্লিকেশনটা তার পর নিজের উপর।” |