|
|
|
|
রঞ্জি ট্রফি |
অপেক্ষা এনসিএ ছাড়পত্রের,
তবু সংশয়ে মনোজের কোয়ার্টার-ভাগ্য নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রেলওয়েজের বিরুদ্ধে রঞ্জি কোয়ার্টার ফাইনালে মনোজ তিওয়ারি খেলছেন? না, খেলছেন না?
শুক্রবার দীর্ঘ দিন পর মনোজকে বাংলার নেটে ব্যাট করতে দেখে, রেলওয়েজ ম্যাচের সতেরো জনের স্কোয়াডে থাকতে দেখে প্রশ্নটা যেমন জোরালো হল। তেমনই মনোজকে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমি থেকে ফিট ঘোষণা করে দেওয়া হলেও কোয়ার্টারেই তাঁর প্রত্যাবর্তন ঘটবে কি না, তা নিয়ে টিমে সংশয়ও দেখা গেল।
বহু দিন চোটের কারণে ক্রিকেটের বাইরে থাকা মনোজ তিওয়ারির এনসিএ-তে চূড়ান্ত ফিটনেস পরীক্ষা আগামী ৬ জানুয়ারি। আর ইডেনে রেলওয়েজের বিরুদ্ধে শেষ আটের যুদ্ধে বাংলা নামছে ৮ জানুয়ারি, অর্থাত্ বুধবার থেকে। সিএবি যুগ্ম-সচিব সুজন মুখোপাধ্যায়ের মতো কেউ কেউ চাইছেন, এনসিএ ফিট ঘোষণা করে দিলে কোয়ার্টারেই মনোজকে নামানোর একটা চেষ্টা করে দেখতে। শোনা গেল মনোজ নিজেও কাউকে কাউকে বলেছেন যে, ফিট সার্টিফিকেট পেয়ে গেলে, বোর্ড ‘নি-ব্রেস’ পরে নামার অনুমতি দিলে, তিনিও কোয়ার্টারে নামার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন। পায়ের শক্তি তাঁর এখন আগের চেয়ে অনেক ভাল জায়গায়। নেটে শুক্রবার ব্যাট করতে কোনও অসুবিধে হয়নি।
কিন্তু টিম থেকে আবার বলা হচ্ছে যে, মনোজকে ফিট ঘোষণা করা হলেও কোয়ার্টারেই তাঁকে নামিয়ে দেওয়াটা ঝুঁকি হয়ে যাবে। যেমন বাংলা কোচ অশোক মলহোত্র। এ দিন সন্ধেয় বলছিলেন, “মনোজকে নিয়ে কী করব না করব, এখনই বলা যাবে না। ওর সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। মনোজ নিজে যেমন কোনও ঝুঁকি নিতে চায় না, তেমন আমরাও চাই না ওকে নিয়ে কোনও রকম ঝুঁকির রাস্তায় যেতে।” শুধু অশোক নন, টিমেরও কেউ কেউ বলে দিলেন যে, ফিট হলেও যে মনোজ ম্যাচ ফিট হয়ে যাবেন, সেটা নিশ্চিত করে কে বলবে? পাঁচ দিন ধরে ম্যাচ চলবে। আবার চোট লেগে গেলে? দীর্ঘ দিন তিনি ক্রিকেটের বাইরে। নেটে মনোজকে নাকি দেখে কারও কারও মনে হয়েছে যে, এখনও কয়েকটা দিন সময় দরকার। রেলকে হারিয়ে সেমিফাইনালে বাংলা গেলে তখন মনোজকে নামানোর কথা ভাবা ভাল। বর্তমানে ঝুঁকি সহ নয়। |
প্র্যাকটিসে নেমে পড়লেন মনোজ। সঙ্গে বাংলা অধিনায়ক। শুক্রবার ইডেনে। —নিজস্ব চিত্র। |
এ দিন পর্যন্ত রেল ম্যাচের যে সম্ভাব্য টিমের খোঁজ পাওয়া গেল, সেই ব্লু প্রিন্টেও মনোজ নেই। অরিন্দম দাস এবং ঋদ্ধিমান সাহাকে কোয়ার্টার ফাইনালে পাচ্ছে বাংলা। অরিন্দম ফিট। ওপেন করবেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর ফেরত ঋদ্ধিমান সম্ভবত যাচ্ছেন পাঁচে। চারে এখনও পর্যন্ত যা ঠিক, সুদীপ চট্টোপাধ্যায় যাচ্ছেন। তবে বোলিং কম্বিনেশন কী হবে, সেটা নিয়ে কিছুটা ধন্ধে রয়েছে বাংলা। আজ পিচ দেখে টিম ম্যানেজমেন্টের মনে হয়েছে, উইকেট থেকে পেসাররাই সুবিধে পাবে। তিন পেসার খেলানো ঠিক আছে। অশোক দিন্দার সঙ্গে বাকি দুই সৌরভ সরকার এবং শিবশঙ্কর পাল। মহম্মদ শামি এ দিন টিমের সঙ্গে সকালে প্র্যাকটিসে ছিলেন বটে, কিন্তু তাঁকে কোয়ার্টার ফাইনালে পাওয়া যাবে না। ১২ জানুয়ারি ভোরে তাঁর ভারতীয় দলের সঙ্গে নিউজিল্যান্ড উড়ে যাওয়ার কথা। রোহিত শর্মা বা ভুবনেশ্বর কুমারদের যেমন মুম্বই-উত্তরপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থারা চাইছিল, তেমনই সিএবি কর্তারাও বোর্ডকে অনুরোধ করে দেখেছিলেন যে শামি কোয়ার্টার ফাইনালটা খেলে নিউজিল্যান্ডের ফ্লাইট ধরতে পারবেন কি না। কিন্তু শোনা গেল, ভারতের কোচ ডানকান ফ্লেচার বলে দিয়েছেন সম্ভব নয়।
বাংলার প্রতিপক্ষ টিম আবার অন্য ‘রোগে’ ভুগছে। ‘রোগ’ স্বয়ং টিমের অধিনায়ক— মুরলী কার্তিক!
চলতি রঞ্জিতে রেলওয়েজের সঙ্গে আবার বাংলার ম্যাচ নিয়ে ইতিমধ্যেই উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। গ্রুপ লিগ খেলতে গিয়ে মুরলী কার্তিকের টিমের সঙ্গে বঙ্গ ক্রিকেটারদের তীব্র ঝামেলার ঘটনা এখনও পুরনো হয়নি। যে ম্যাচে বাংলার সন্দীপন দাসকে ‘মানকাডেড’ করে কার্তিকের আউট করা থেকে শুরু করে অশোক দিন্দাকে কার্তিকদের অকথ্য গালাগাল, বাংলার পাল্টা ম্যাচ শেষে রেল ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত না মিলিয়ে চলে আসা, কোচ অশোক মলহোত্র-র বিস্ফোরণ— কোনও কিছু বাদ ছিল না রেলের ঘরের মাঠে গ্রুপ ম্যাচে। সেই রেল এ বার কোয়ার্টারে, আবার বাংলার সামনে, বাংলার ঘরের মাঠে। এবং দিল্লিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, কার্তিককে নিয়ে অশান্তি রেলের সংসারেই। যুদ্ধটা মূলত কার্তিক বনাম মহেশ রাওয়াত। মহেশ এখন পর্যন্ত রেলের সর্বোচ্চ স্কোরার। এবং তিনি সেঞ্চুরির মুখে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় কার্তিকের ডিক্লেয়ার করা থেকে শুরু করে রেল ক্যাপ্টেনের ইচ্ছেমতো ওপেন করতে যাওয়া, পেস বোলিং করা— সবই নাকি বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে টিমে। চলতি রঞ্জিতে কার্তিকের পারফরম্যান্সও খুব খারাপ। ৬ ম্যাচে ৪৬ ওভার বল করে পেয়েছেন এক উইকেট। তাই তাঁর এমন কাজকর্মও নাকি সহ্য হচ্ছে না বাকি টিমের।
‘শত্রু’-দের আগাম দশা দেখে কেমন লাগছে?
বাংলা কোচ অশোক মলহোত্র দিল্লির ‘কাসুন্দি’ নতুন করে ঘাঁটতে চাইলেন না। শুধু বললেন, “ওটা পাস্ট। ওদের কুকীর্তি নিয়ে ভাবলে আমাদের ফোকাস নড়ে যাবে। ম্যাচটা আমরা জিততে পারলেই বোধহয় সবচেয়ে ভাল উত্তরটা দেওয়া যাবে।” |
পুরনো খবর: চিপকে বাংলার লক্ষ্মীলাভ
|
|
|
|
|
|