আগুনে পুড়ে মৃত্যুর পরেও রাতদিন ঘুরে মরতে হয়েছিল মধ্যমগ্রামের ধর্ষিতা কিশোরীকে। তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিল তিন বারের চেষ্টায়। শুক্রবার দুপুরে নিমতলায় গঙ্গার ঘাটে তার শ্রাদ্ধাদি ক্রিয়াকর্মকে কেন্দ্র করেও ফের কিছুটা অশান্তির সৃষ্টি হল।
এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ ওই কিশোরীর শ্রাদ্ধ-শান্তির কাজ করতে যান আত্মীয়স্বজন। ছিলেন মেয়েটির মা-বাবা, অন্যান্য পরিজন এবং সিপিএমের সুধাংশু শীল-সহ কয়েক জন নেতা। ক্রিয়াকর্ম চলতে চলতেই সেখানে হাজির হন বড়বাজার এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল যুব কংগ্রেস নেতা এবং বর্তমানে মিথিলা সমাজ নামে একটি সামাজিক সংগঠনের সম্পাদক অশোক ঝা। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, অশোকবাবু সেখানে গিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এই নিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিও হয় তাঁর।
অভিযোগ অস্বীকার করে অশোকবাবু অবশ্য বলেন, “ওই কিশোরীর বাড়ি বিহারের মিথিলায়। আমি মিথিলা সংগঠনের সভাপতি। তাই সাহায্য করার জন্যই এগিয়ে এসেছিলাম। ওই পারিবারকে কলকাতায় বাড়ি ঠিক করে দেওয়া থেকে শুরু করে আর্থিক সাহায্য, এমনকী মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার কথাও বলেছিলাম। এটা বলতেই সিপিএমের লোকেরা আমার উপরে চড়াও হন।” সিপিএমের পাল্টা দাবি, মেয়েটির বাড়ির লোকজন নিমতলা ঘাটে শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠানে অশোকবাবুর আসাটা পছন্দ করেননি। তাঁরা এবং স্থানীয় বাসিন্দারাই সেখানে তাঁর উপস্থিতির প্রতিবাদ করেন।
এ দিনও ধর্ষিতার পরিবার সিটু অফিসেই ছিল। মেয়েটির বাবা বলেন, “এয়ারপোর্ট আড়াই নম্বর গেটের মতিলাল কলোনিতে নিরাপত্তা নেই। আমরা কলকাতাতেই একটা ভাড়াবাড়ি খুঁজে নিয়েছি। দু’-এক দিনের মধ্যে সেখানে চলে যাব।” তিনি জানান, মতিলাল কলোনির বাড়িতে তাঁদের সামান্য যে-জিনিসপত্র রয়েছে, পুলিশ সেগুলো নতুন আস্তানায় পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করলে ভাল হত। কিন্তু পুলিশকে অনুরোধ করা সত্ত্বেও পাঠায়নি। তাই তাঁরাই শনি বা রবিবার জিনিসপত্র নিয়ে আসবেন।
কিশোরীর দেহ নিয়ে নাটক প্রসঙ্গে লালবাজারের এক কর্তা এ দিন বলেন, “কলকাতা পুলিশের গাড়ি মৃতার গাড়িকে টালা সেতু থেকে এসকর্ট করেছিল মাত্র। তাদের অন্য কোনও ভূমিকা ছিল না। কলকাতা পুলিশের গাড়ি মৃতার গাড়ি নিয়ে পিস হেভনের দিকে না-গিয়ে জোর করে নিমতলা শ্মশানে গিয়েছে বলে যে-অভিযোগ উঠেছে, তা ঠিক নয়।” |