দশ বছর আগে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারত ও দশ বছর পরে ধোনির ভারত— এক দশকে ভারতীয় ক্রিকেটের আসল রোগটা সারেনি বলেই মনে করেন রাহুল দ্রাবিড়। সমস্যা মানে, ধারাবাহিকতার অভাব।
দশ বছর আগে ঠিক এই সময়েই ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের অস্ট্রেলিয়া থেকে বুক চিতিয়ে ঘরে ফেরা। অ্যাডিলেড টেস্টে স্টিভ ওয়দের হারানোর পর সিডনিতে তাদের চাপে ফেলে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের দিকেই এগিয়ে গিয়েছিল সৌরভের ভারত। কিন্তু জীবনের শেষ টেস্ট ইনিংসে স্টিভের ৮০ রানের ইনিংসই অস্ট্রেলিয়াকে সেই হার থেকে বাঁচিয়ে দেয়।
সেই সফরের সবচেয়ে সফল ভারতীয় ব্যাটসম্যান রাহুল দ্রাবিড় যখন ধোনির ভারতীয় দলের সাম্প্রতিক দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ময়নাতদন্ত করতে বসলেন, তখন এই দলকে দশ বছরের আগের সেই দলের চেয়ে খুব একটা এগিয়ে রাখতে পারলেন না। তাঁর বক্তব্য, “বিদেশে গিয়ে ভাল পারফরম্যান্স দেখানোর মধ্যে বাহাদুরি আছে নিশ্চয়ই। অচেনা পরিবেশ, অজানা আবহাওয়ায় ভাল খেলে দেখানো সব সময়ই কৃতিত্বের ব্যাপার। অস্ট্রেলিয়ায় দশ বছর আগে আমরা যেটা করতে পেরেছিলাম, এ বার ধোনিরাও সেটাই করে দেখাল। কিন্তু শেষরক্ষা হল না, একই রোগের জন্য। ধারাবাহিকতার অভাব।”
সে বার ব্রিসবেনে ড্র হওয়ার পর অ্যাডিলেডে ভারত চার উইকেটে জেতে। মেলবোর্নে হেরে যাওয়ার পর সিডনিতে প্রথম ইনিংসে ভারত ৭০৫-৭ স্কোরে ইনিংস ডিক্লেয়ার করে এবং অস্ট্রেলিয়াকে ৪৭৪ অল আউট করে দিয়ে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বপ্ন চোখে নিয়ে ফের ব্যাট করে ২১১-২ তুলে অজিদের ৪৪৩ রানের টার্গেট দিয়ে দান ছেড়ে দেয়, তার পরই অজিদের মাটি কামড়ে পড়ে থাকার লড়াইয়ে হার মানতে হয় সৌরভদের। স্টিভের ৮০ ও সাইমন কাটিচের ৭৭ রানে বেঁচে যায় তাঁদের হার। এত বছর পর সেই সিরিজ নিয়ে রাহুলের বক্তব্য, “সে সব অসাধারণ স্মৃতি। সেই দলের সদস্য হতে পারাটা আমার কাছে যথেষ্ট সম্মানের ব্যাপার ছিল। অস্ট্রেলিয়ায় একটা টেস্ট জেতা আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল সে বার। কিন্তু সে অনেক দিন আগের কথা।”
এখনকার টেস্ট দল নিয়ে রাহুলের বক্তব্য, “সাফল্যের সরণিতে হাঁটতে গেলে ভারতীয় ক্রিকেটের দরকার ধারাবাহিকতা। সেটা করতে গেলে আগামী সফরগুলোতে ভাল খেলে ঘুরে দাঁড়াতে হবে কোহলিদের। দলগত ভাবে পারফর্ম করে গেলে ধারাবাহিকতা আসতে বাধ্য। আশা করি সেটা দেশের তরুণ ক্রিকেটাররা করতে পারবেই। কারণ, কিছু ইতিবাচক ছাপ ওরা কিন্তু ইতিমধ্যেই রেখেছে।” |