রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’ এবং সম্প্রতি নরেন দে’র উপর হামলার প্রতিবাদ জানাতে বৃহস্পতিবার বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ধনেখালিতে এসেছিলেন। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শুক্রবার একই জায়গায় সভা করে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় দাবি করলেন, “ওঁরা সন্ত্রাসের বাজনা বাজিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের সরকারের উন্নয়নের অভিমুখ কৌশলে ঘুরিয়ে দিয়ে সন্ত্রাসের গল্প প্রচার করছেন। যেখানেই ওরা সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলবে, আমরা এক ইঞ্চি জমি ছাড়ব না। সেখানেই যাব।”
গত ৮ ডিসেম্বর কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ধনেখালিতে দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক করার সময়ে প্রহৃত হন প্রাক্তন কৃষিমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা নরেন দে-সহ ১১ জন। অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব প্রথম থেকেই ওই ঘটনা ফরওয়ার্ড ব্লকের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের বলে দাবি করে আসছেন। এ দিন ওই ঘটনাকে ‘নিন্দনীয়’ বলে দুঃখপ্রকাশের পরে পার্থবাবুও দাবি করেন, “ওঁরাই তদন্ত করে দেখুন না, উনি কেন মার খেলেন! জমি এবং আলুর বন্ড সংক্রান্ত নিজেদের দলের অন্দরের সমস্যা ধামাচাপা দিতে মিথ্যা প্রচার শুরু করেছে ওরা। তৃণমূলকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছে।” |
ধনেখালির সভায় পার্থ। —নিজস্ব চিত্র। |
জেলা সিপিএম সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরীর দাবি, “ মেয়েদের উপরে নির্যাতন এবং সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠছে। সেই দিক থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই বামফ্রন্টের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের গল্প ফাঁদা হচ্ছে। উনি (পার্থবাবু) দয়া করে মিটিংয়ের স্থান বদলান। তিনি আজ গোঘাটে সভা করতে পারতেন। সেখানে তাঁর দলের লোকেরাই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।”
এ দিন দুপুরে ধনেখালির মদনমোহনতলায় সভা করেন পার্থবাবু। ছিলেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না, তৃণমূল যুবার রাজ্য সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের পরিষদীয় সচিব তথা স্থানীয় বিধায়ক অসীমা পাত্র এবং জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত। তপনবাবুও এ দিন রাজ্যের নতুন পরিষদীয় সচিব হিসেবে শপথ নেন। দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, “পতাকা নিয়ে নিজের উপকারে মন দিলে চলবে না। দল সতর্ক আছে। ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না।” তবে, এই সভাকে বিমানবাবুদের পাল্টা হিসেবে মানতে চাননি বিধায়ক অসীমা পাত্র। তপনবাবু বলেন, “ধনেখালিকে কেন্দ্র করে সিপিএম হুগলি-সহ রাজ্যে অশান্তি ছড়াতে চাইছে। আমরা তা হতে দেব না।” আজ, শনিবার ভদ্রেশ্বরেও পার্থবাবুর সভা করার কথা। |