ওয়ার্ড-সংখ্যার নিরিখে হাওড়া পুরসভা কলকাতার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। কিন্তু মেয়র পারিষদের সংখ্যার নিরিখে এ বার কলকাতাকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলছে হাওড়া। আনুপাতিক বিচারে যা পিছনে ফেলে দেওয়া।
কলকাতা পুরসভায় ওয়ার্ড-সংখ্যা ১৪৪। মেয়র, ডেপুটি মেয়র-সহ পারিষদ ১৪ জন। সেখানে হাওড়ায় ৫০টি ওয়ার্ডের জন্য মেয়র, ডেপুটি মেয়র ছাড়াও ১০ জন পারিষদ।
শুক্রবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তৃণমূল-পরিচালিত হাওড়া পুরসভায় মেয়র পারিষদের সংখ্যা বাড়ছে। বাম আমলে ছিলেন পাঁচ জন, এ বার হলেন দশ। মেয়র, ডেপুটি মেয়র মিলিয়ে পুরবোর্ডে থাকছেন ১২ জন।
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে তৃণমূল সরকার যেমন মন্ত্রিসভার কলেবর কমাতে পারেনি, তেমনই হাওড়ায় ক্ষমতায় আসার পরে পুরবোর্ডে সদস্যও এক ধাক্কায় দ্বিগুণ করা হল। সেই সঙ্গে বাড়ানো হল বরোর সংখ্যা। ফলে বাড়ছে বরো চেয়ারম্যানের সংখ্যাও।
হাওড়া পুরসভায় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরেই জানা গিয়েছিল, কাজে অগ্রগতি আনার জন্য এ বার মেয়র পারিষদের সংখ্যা দ্বিগুণ করা হবে। সেই মতো এ দিন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এ কথা ঘোষণা করেন।
রাজ্যের এক পুরকর্তা জানান, এত দিন ওই পুরসভায় এক জন মেয়র পারিষদের হাতে একাধিক দফতর ছিল। তাতে নজরদারিতে ফাঁক পড়ে যাচ্ছিল। তা ভরাট করতেই মেয়র পারিষদের সংখ্যা বাড়ানো হল।
হাওড়া পুরবোর্ডে ডেপুটি মেয়র-সহ মেয়র পারিষদ পদে যাঁদের আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তাঁরা হলেন: মিনতি অধিকারী, বাণী সিংহরায়, বিনোদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভাস হাজরা, ব্রতেন দাস, মহম্মদ রুস্তম, নাসরিন খাতুন, তন্দ্রা বসু, সীমা নস্কর, অরুণ রায়চৌধুরী এবং বিনয় সিংহ অথবা শৈলেশ রাই।
মেয়র পরিষদ বৃদ্ধির বিষয়টিকে ‘পাইয়ে দেওয়ার’ রাজনীতি আখ্যা দিচ্ছেন বিরোধীরা। হাওড়ার বামফ্রন্টের আহ্বায়ক বিপ্লব মজুমদার বলেন, “মেয়র পারিষদের সংখ্যা বাড়ালেই কাজ বেশি হবে, সেই তত্ত্বে বিশ্বাস করলে তো এত দিনে কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদের সংখ্যা অনেক বাড়ানো হত। এতে শুধুমাত্র পুরসভার খরচই বাড়বে।”
হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী পাল্টা বলেন, “পরিষদ বাড়লে খরচ বাড়বে, এটা ঠিক নয়। কারণ দফতর ভাগ হলে রাজস্বও বেশি আদায় হবে। মৃত হাওড়াকে চাঙ্গা করতেই রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” |