শীতে পর্যটক টানছে ডুয়ার্স
শীত জাঁকিয়ে পড়তেই ডুয়ার্সের ছবি পাল্টাতে শুরু করেছে। গরুমারা জঙ্গল সংলগ্ন ময়নাগুড়ির রামসাই এলাকায় পর্যটকের যেন ঢল নেমেছে। ঠাঁই নেই রব। পানবাড়ির কদমবাড়ি ঘাট থেকে জলঢাকা নদীতে নৌকা বিহারে খুশি মাঝি থেকে বন পথে মোষের গাড়ি চালক সকলেই। ঘন কুয়াশার চাদরে পাহাড়-জঙ্গল আরও মুখ ঢাকলে ভিড় আরও বাড়বে আশা তাঁদের।
গাড়োয়ান প্রদীপ রায়, শ্যামল সরকার জানান, পর্যটকদের অনেকে কুয়াশায় ঢেকে থাকা সুন্দরী ডুয়ার্সকে উপভোগ করতে বেশি পছন্দ করেন। এত দিন জঙ্গলে ঘোরার জন্য দূষণমুক্ত মোষের গাড়ি ছিল। এ বার নতুন সংযোজন নৌকাবিহার। নৌকায় কেমন দেখতে লাগে ডুয়ার্সকে সেই হিসেব মেলাতে ব্যস্ত অনেকে। ভোর থেকে ক্যামেরায় চোখ রেখে অপরূপ দৃশ্য ধরে রাখতে কত জন ঘুরে বেড়াচ্ছে কালীপুর ইকো ভিলেজে। অথবা খয়েরের জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানোর পথে গণ্ডার, হরিণ অথবা হাতি যাই পাওয়া যাক ফ্রেম বন্দি করা চাই। নীল আকাশে ভেসে ওঠা কাঞ্চনজঙ্ঘা তো আছেই।
ওই দেখো কাঞ্চনজঙ্ঘা।
ঝলমলে দুপুরে আকাশের নীল ক্যানভাসে সূর্যের আলোতে লালচে সাদা পাহাড়ের চূড়া দেখে চিত্‌কার জুড়লেন দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বাটানগরের বাসিন্দা বিশ্বনাথ চক্রবর্তী। গাড়িতে বসা অন্যদের ডাকলেন। তাঁর সেকি উল্লাস। বন দফতরের রামসাই বুকিং কাউন্টারের সামনে তখন ভিড় করে কেউ সবুজ চা বাগিচার ছবি তুলতে ব্যস্ত কেউ জলঢাকা নদী পাড়ে রাইনো ক্যাম্প বনবাংলো ফ্রেম বন্দি করলেন।” মতিঝিলের বাসিন্দা ব্যাঙ্ক কর্মী শতদ্রু চট্টোপাধ্যায় বললেন, “কংক্রিট জঙ্গলে ঢাকা পরিবেশ ভাল লাগে না। ঢের ভাল রামসাই মেদলা নজর মিনার, জলঢাকা-ডায়না-মূর্তির পাড়ে খয়ের জঙ্গল, পাখির কলতান, চা বাগান, আদিবাসীদের বাজার এক সঙ্গে কোথায় পাব এত সব!”
মেদলা নজর মিনারের কাছে কুনকিদের আস্তানা। কিছুটা দূরে টিলা থেকে নেমেছে সবুজ ঘাসে ভরা খাদ। বিরাট জলাভূমি। বন কর্মীরা জানান, এটাই গন্ডারের বিচরণ ভূমি। নদীপাড়ে রকমারি ঘাসের জঙ্গল। খাবার লোভে প্রতি রাতে হাতির দল নাগরাকাটা, ধূপগুড়ির গধেয়াকুঠি, নাথুয়া থেকে নদী পার হয়ে চর এলাকায় ঢুকে পড়ে সেখান থেকে কদমবাড়ির জঙ্গল হয়ে গ্রামে ঢুকে ধান খেত। জলপাইগুড়ির ডিএফও (বন্যপ্রাণ) সুমিতা ঘটক এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমরও চাই জঙ্গলের বাইরেও যে এত সৌন্দর্য ছড়িয়ে তা প্রত্যেকে উপভোগ করুন। আর সেটা হলে জঙ্গলে কিছুটা চাপ কমবে।”
বুধুরাম বনবস্তির বাসিন্দা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য জয়ন্তী ওঁরাও, ফুলমতি ওঁরাও জানান, “শীত জাঁকিয়ে না পড়লে ডুয়ার্সে কলকাতা ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকদের তেমন ভিড় দেখা যায় না। বেশিরভাগ সিকিমে চলে যান এ বার পাহাড়ে ঝামেলা নেই শীতের তেজও প্রতিদিন বাড়ছে।” সেই কারণেই পর্যটকের সংখ্যাও বেড়েছে বলে তাঁদের দাবি।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.