এক দল শিক্ষক আপত্তি তুলেছেন। তাই রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাময়িক ভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব জুরিডিক্যাল সায়েন্সেস। তবে এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ তাঁদের সব শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে চান। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পি ঈশ্বর ভট্ট বৃহস্পতিবার এ কথা জানান। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পরেই অশোকবাবুকে যা জানানোর জানানো হবে।
জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয় (এনইউজিএস) সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২-র অগস্টে এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিল বা ইসি-র সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় অতিথি শিক্ষক হিসেবে ওই প্রতিষ্ঠানে পড়াতে শুরু করেন। এক ইন্টার্ন সম্প্রতি অশোকবাবুর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তোলায় ওই প্রাক্তন বিচারপতির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিতে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেন এক দল শিক্ষক। তাঁদের বক্তব্য, এনইউজিএস সুবিচারের শিক্ষা দেয়। বিচারের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষকে সমান দৃষ্টিতে দেখা তার অন্যতম মূল কথা। ওই শিক্ষকেরা মনে করছেন, যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠার পরে অশোকবাবু যুক্ত থাকলে তাঁদের প্রতিষ্ঠানের আদর্শ ক্ষুণ্ণ হবে। আপত্তি ওঠায় অশোকবাবুর বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ না-হওয়া পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়েছে বলে সপ্তাহখানেক আগে জানিয়ে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র রুচিরা গোস্বামী।
শীতের ছুটির পরে বৃহস্পতিবার আইন বিশ্ববিদ্যালয় ফের খুলেছে। উপাচার্য ভট্ট এ দিন বলেন, “ওই ইন্টার্ন ব্লগে অভিযোগ জানানোর পর থেকে এমনিতেই অশোকবাবু ক্লাস নিতে বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেননি। এক দল শিক্ষক দাবি তুলেছেন, ওঁর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। তবে বাকিরা কী বলেন, সেটাও তো শোনা দরকার। সোমবার সকলের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।” তার পরে জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে ইসি-র বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান উপাচার্য।
প্রাক্তন বিচারপতির বিরুদ্ধে যে-ইন্টার্ন যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তুলেছেন, তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্রী। উপাচার্য আগেই বলেছিলেন, ইন্টার্নশিপ সেরে ফেরার পরে প্রত্যেক ছাত্রীর কাছে তাঁর অভিজ্ঞতা জেনে নেওয়া হবে। এ দিন তিনি বলেন, “এই বিষয়ে একটি খসড়া নিয়মবিধি তৈরি করা হয়েছে। প্রত্যেক ছাত্রীকে ছ’মাসের মধ্যে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানাতে হবে। যাঁরা তার পরে জানাবেন, তাঁদের দেরি করার কারণও জানাতে হবে।” উপাচার্য জানান, শিক্ষক সংসদে নিয়মবিধির এই খসড়া তৈরি করা হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তা অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে পেশ করা হবে। |