বাবা-মায়ের সঙ্গে সীমান্তে নিজেদের জমিতে গরু চরাতে গিয়েছিল এক কিশোরী। ফেরার পথে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফের এক কনস্টেবল তার শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এক বছর আগেকার সেই ঘটনায় ওই কনস্টেবলকে বুধবার বরখাস্ত করা হয়েছে। বিএসএফ বৃহস্পতিবার জানায়, ওই কনস্টেবলের নাম বনদেপ্পা। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জেনারেল সিকিওরিটি ফোর্স কোর্ট তাঁকে ‘কোর্ট মার্শাল’-ও করেছে।
বাহিনী সূত্রের খবর, বছর পঁয়ত্রিশের ওই কনস্টেবল পূর্বাঞ্চলের ৬৯ নম্বর ব্যাটেলিয়নে ছিলেন। বছর পঁয়ত্রিশের ওই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১২ সালের ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ বামনগোলা সীমান্তে ১৬ নম্বর গেটের কাছে ১২ বছরের এক নাবালিকার শ্লীলতাহানি করেন তিনি। মালদহের বাংলাদেশ সীমান্তে ওই গেট পাহারার দায়িত্বে ছিলেন বনদেপ্পা।
এক বিএসএফ-কর্তা জানান, মেয়েটি বামনগোলা থানার বারতোলি গ্রামের বাসিন্দা। ওই কিশোরী ঘটনার দিন বাবা-মা এবং দিদির সঙ্গে কাঁটাতারের বেড়া এবং মূল সীমান্তের মধ্যে নিজেদের জমিতে গরু-ছাগল চরাতে গিয়েছিল। বিকেলে বাবা-মা বড় মেয়েকে পশুদের নিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলেন। তার একটু পরে ছোট মেয়েকে নদী থেকে জল আনতে বলেন বাবা। মেয়ে জল নিয়ে একাই ফিরছিল। অভিযোগ, গেট পেরিয়ে এ-পারে পা দেওয়ার পরেই তার শ্লীলতাহানি করেন বনদেপ্পা। প্রথমে মেয়েটির হাত ধরে টানাটানি করেন তিনি। পরে কিশোরীর শ্লীলতাহানি করা হয় বলে নাবালিকা এবং তার বাবা-মা অভিযোগ জানান।
ঘটনার পরেই মেয়ের বাবা-মা বিএসএফের স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে পুরো বিষয়টি জানান। অভিযোগ পেয়ে ওই কনস্টেবলকে নিজেদের হেফাজতে নেন কর্তারা। শুরু হয় তদন্ত। তদন্তের সময় আশপাশের লোকজনও ওই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্যি বলে জানান। মামলা চলে বিএসএফের কোর্টে। প্রায় এক বছরের তদন্তে প্রমাণিত হয়, বনদেপ্পার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্য।
বিএসএফের স্পেশ্যাল ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) বংশীধর শর্মা জানান, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই কনস্টেবলকে কোর্ট মার্শাল করা হয়েছে। শর্মা বৃহস্পতিবার বলেন, “বনদেপ্পাকে বাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এই অপরাধের জন্য বিএসএফের নিজস্ব কোর্ট তাঁকে দু’বছরের জেল দিয়েছে। বিএসএফের জেলে ইতিমধ্যেই এক বছর কাটিয়ে ফেলেছেন তিনি। কোর্ট মার্শাল এবং বরখাস্ত করার পরে এ বার তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে। কারাদণ্ডের বাকি এক বছর তিনি থাকবেন সাধারণ জেলে।” |