বীরেন্দ্র সহবাগ আর গৌতম গম্ভীরের চেয়েও খারাপ ফর্ম এই দুই তারকা ওপেনারের রাজ্য দলের! সহবাগ জাতীয় দলের হয়ে শেষ খেলেছেন গত বছরের মার্চে। তারও দু’মাস আগে ভারতীয় টিমে শেষ দেখা গিয়েছে গম্ভীরকে। কিন্তু রঞ্জিতে টানা তিন বছর নক আউটের মুখ দেখছে না দিল্লি।
কর্নাটকের কাছে বৃহস্পতিবার ঘরের মাঠ কোটলায় আট উইকেটে হেরে রঞ্জির গ্রুপ পর্যায় থেকেই ছিটকে গেল বহু বারের জাতীয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়ন দিল্লি। ২০০৭-০৮ রঞ্জি মরসুমের পর যেমন ঘরোয়া ক্রিকেটে বড় সাফল্য নেই দিল্লির, তেমনই দলের দুই মহাতারকা ক্রিকেটারের জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের সরণিতেও আলোর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
দিল্লি অধিনায়ক গম্ভীরের ঝুলিতে তবু একটা সেঞ্চুরি ও গোটা চারেক হাফসেঞ্চুরি-সহ পাঁচশোর বেশি রান (৭ ম্যাচে ৫৭৮ রান, গড় ৪৮.১৬) আছে। কিন্তু সহবাগের অবস্থা শোচনীয়। ওপেনিং স্লট ছেড়ে দিয়ে মিডল অর্ডারে নেমে এসেও বিদর্ভ ম্যাচে একটা ৫৬ ছাড়া বলার মতো ইনিংস নেই। ৭ ম্যাচে আড়াইশো রানও পেরোননি। গড় (১৯.৫০) কুড়ির নীচে।
কোটলায় এ দিন দু’জনকে দেখা গেল দুই মেজাজে। ম্যাচ হারার মুখে দাঁড়িয়েও ফিল্ডিং করার সময়েও গম্ভীরকে দেখা গেল মাঝেমাঝেই ব্যাটিং শ্যাডো করছেন। যার মানে, নিজের পুরনো ফর্মে পুরোপুরি ফিরতে মরিয়া চেষ্টায় আছেন। কিন্তু মাঠে সহবাগের শরীরীভাষাই যেন বলে দিচ্ছিল, খেলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন। |
দুই ব্যর্থ তারকা
রাজ্য দলকেও টিকিয়ে রাখতে পারলেন না রঞ্জি ট্রফিতে।
কর্নাটকের বিরুদ্ধে কোটলায়। ছবি: পিটিআই। |
দিল্লির প্রাক্তন জাতীয় ওপেনার চেতন চৌহান যা দেখে রীতিমতো শঙ্কিত। বলছিলেন, “গত বছর দেশের মাঠে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের পর প্রতিটা প্রথম শ্রেণির ম্যাচেও সহবাগ ব্যর্থ। এর পর রঞ্জি ওয়ান ডে ম্যাচগুলোতে খুব ভাল না করলে ওর আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা খুবই মুশকিল। এ বার আইপিএলেও সহবাগ কতটা কী করবে সন্দেহ রয়েছে।”
সহবাগ-গম্ভীর পারতপক্ষে মিডিয়ার মুখোমুখি হচ্ছেন না। এমনকী এ দিন কর্নাটকের কাছে হারার পর দিল্লির অধিনায়ক হওয়া সত্ত্বেও সাংবাদিক সম্মেলনে আসেননি গম্ভীর। মোবাইলও বন্ধ। গম্ভীর ধরা না দিলেও অবশ্য তাঁর কোচ সঞ্জয় ভরদ্বাজ এ দিন আনন্দবাজার-কে বললেন, “গম্ভীর ভারতীয় দলে ফিরবেই। কয়েক মাস পর ইংল্যান্ডে ভারতীয় দলের দীর্ঘ সফরে ওর অভিজ্ঞতার দরকার পড়বেই।”
সহবাগের কোচ অমরনাথ শর্মা-র কথাবার্তায় অবশ্য শিষ্য সম্পর্কে অতটা আশাবাদ পাওয়া গেল না। বলেই ফেললেন, “আন্তর্জাতিক, ঘরোয়া সব ম্যাচ মিলিয়ে প্রায় এক বছর হতে চলল সহবাগের ব্যাটে রান নেই। আর যার ব্যাটে রান নেই, তার সম্পর্কে কোন মুখে বলি, জাতীয় দলে ফিরবে? তা ছাড়া ইদানীং সহবাগ আমার কাছেও আসে-টাসে না।”
সঞ্জয় বরং বললেন, “নিউজিল্যান্ডের দলেও গম্ভীর জায়গা না পাওয়ার পর আমি ওকে বলেছি, ভেঙে পড়ো না। রঞ্জি ওয়ান ডে আর আইপিএল পাবে। চাপ না নিয়ে ওই ম্যাচগুলো উপভোগ করো। সেরাটা বেরিয়ে আসবেই। তখন দেখবে জাতীয় নির্বাচকরা ঠিক তোমাকে ইংল্যান্ড সফরের দলে ডাকবে।” সঙ্গে আরও জানালেন, রঞ্জির মধ্যে না এলেও গম্ভীর কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁর কাছে আসবেন বলে জানিয়েছেন। “আমি ওর ভিতরের খিদেটাকে মরতে দিইনি। ও নিজেও সেই ব্যাপারে ফোকাসড্।”
|