পিছু ফিরে প্রৌঢ়কে পিষে মারল হাতি
গ্রামে ঢোকা হাতি দেখতে গিয়ে হাতির হানাতেই মৃত্যু হল এক প্রৌঢ়ের। বৃহস্পতিবার সকালে সিমলাপাল থানার শালডাঙার জঙ্গলের ঘটনা। মৃতের নাম মঙ্গল মাহাতো (৫৫)। সিমলাপাল থানার হাতিবাড়ি গ্রামে তাঁর বাড়ি। কয়েকদিন আগেই বড়জোড়ায় হাতির হানায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবাবু পেশায় কৃষিজীবী ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রাম লাগোয়া শালডাঙার জঙ্গলে হাতি এসেছে খবর পেয়ে দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় একটি হাতি তাঁকে তাড়া করে ধরে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছাড় মারে। তারপর পা দিয়ে তাঁকে পিষে দেয় হাতিটি। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। বাঁকুড়ার ডিএফও (দক্ষিণ) দেবাংশু মল্লিক বলেন, “বিষ্ণুপুর রেঞ্জের জঙ্গল থেকে এ দিন ভোরে হাতির দলটি শিলাবতী নদী পেরিয়ে সারেঙ্গা রেঞ্জের শালডাঙার জঙ্গলে ঢুকে পড়েছে। এলাকার বহু মানুষ হাতি দেখতে জঙ্গলে ঢুকে পড়েন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন মঙ্গলবাবুও। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তিনি একটি হাতির কাছাকাছি চলে যান। তখন হাতিটি তাঁকে ধরে ফেলে আছড়ে ও পিষে মারে।” ডিএফও-র দাবি, হাতির দলকে খুব কাছ থেকে দেখতে গিয়েই ওই প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছে। হাতিদের উত্যক্ত না করার জন্য গ্রামবাসীদের বনকর্মীরা সতর্ক করেছিলেন। তারপরেও গ্রামের মানুষ বনকর্মীদের কথায় আমল না দেওয়ায় এই ঘটনা ঘটল। তিনি জানান, বনকর্মীদের নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
বন দফতর সূত্রের খবর, ওই দলে রয়েছে তিনটি শাবক-সহ ৯ টি হাতি। দলটি বড়িচ্যা বিটের জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। হাতিদের দেখেই গ্রামবাসীরা তাদের পিছু নেয়। সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ খয়েরগেড়িয়া মৌজার শালডাঙার জঙ্গলে একটি হাতি হঠাৎ পিছন ঘুরে লোকজনের দিকে তেড়ে আসে। অনেকে পালাতে পারলেও মঙ্গলবাবু হাতিটির নাগাল এড়াতে পারেননি। তখনই হাতিটি তাঁকে আক্রমণ করে। এরপর হাতির দল জঙ্গলে গা ঢাকা দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সুদেব মাহাতো, শান্তিরাম মণ্ডল বলেন, “সাত সকালে লোকালয়ের কাছে হাতি চলে আসার খবরে এলাকায় হইচই পড়ে যায়। ছেলে বুড়ো সকলেই হাতির পিছনে পিছনে দৌড়াচ্ছিল। সেই সময় মঙ্গলবাবু হাতির কাছাকাছি চলে যেতেই ঘটে এই বিপত্তি ঘটে।”
মঙ্গলবাবুর স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছেন। তাঁর ছেলে বিশ্বজিত মাহাতো মাসখানেক আগে সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য বেঙ্গালুরুতে। মৃতের স্ত্রী সন্ধ্যা মাহাতো বলেন, “হাতি এসেছে শুনেই ও বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল। এমন অঘটন ঘটবে জানলে আমি যেতে নিষেধ করতাম। হাতি দেখতে গিয়েই আমার স্বামীর বেঘোরে প্রাণটা গেল।” এ দিকে, হাতির হানায় প্রৌঢ়ের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। অবিলম্বে হাতির দলটিকে অন্যত্র সরানোর দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। সারেঙ্গার রেঞ্জ আধিকারিক শুকদেব মাহাতো বলেন, “হুলাপার্টি আর পুলিশের সাহায্যে হাতির দলটিকে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা চলছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.