হাসপাতালের সুপারের ঘরের সামনে থেকে এক যুবকের হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হল। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে রাজ্যের দ্বিতীয় সংক্রামক ব্যাধির হাসপাতাল হাওড়ার সত্যবালা আই ডি হাসপাতালে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম কালীপদ শী (২৯)। বাড়ি স্থানীয় ভৈরব গাঙ্গুলি লেনে।
পুলিশ জানায়, বছর দশেক আগে কালীপদর বিরুদ্ধে অপরাধমলূক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। এমনকী ওই সময় পুলিশের তাড়ায় তাকে এলাকা ছেড়ে মুম্বই পালাতে হয়েছিল। সম্প্রতি পরিবার নিয়ে এলাকায় ফিরে এসে জমি-বাড়ির দালালির কাজ শুরু করেছিল সে। পুলিশের ধারণা, রাতে হয়তো হাসপাতালের মধ্যে বন্ধুদের সঙ্গে মদ খাচ্ছিল কালীপদ। তখনই নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে গোলমাল হয়। এর পর হাত-পা বেঁধে সুপারের ঘরের সামনেই কালীপদকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের সন্দেহ, ওই ব্যক্তি যেখানে পড়ে ছিল, তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে প্রথমে সেখানেই খুন করা হয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারাল অস্ত্র দিয়ে গলা, বুক ও পেটে আঘাত করা হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। মৃতদেহটি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। |
এ দিকে, সরকারি হাসপাতালের মধ্যে এই ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রোগীর আত্মীয়স্বজন ও এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, এমনিতেই রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে হাসপাতালের চারদিক ঝোপঝাড়ে ভর্তি। কোনও নিরাপত্তাকর্মী না থাকায় রাতে সম্পূর্ণ অরক্ষিত থাকে হাসপাতাল চত্বর। রাত বাড়লেই যা হয়ে ওঠে দুষ্কৃতীদের আখড়া, মদ-জুয়া-সাট্টার ঠেক।
এলাকার বাসিন্দা বিমল দে বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতালটি রাতে সম্পূর্ণ অরক্ষিত। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেও কোনও লাভ হয়নি।” হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগীর আত্মীয়ের অভিযোগ, পর্যাপ্ত আলো না থাকায় রাতে হাসপাতাল চত্বর ভয়াবহ হয়ে ওঠে। কোনও নিরাপত্তারক্ষী না থাকায় খোলা গেট দিয়ে সারাদিন বহিরাগতদের যাতায়াত লেগেই থাকে।
সত্যবালা আইডি হাসপাতালের পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তা-ও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন? হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা দেবাশিস রায় বলেন, “রাজ্য সরকারের কাছে নিরাপত্তাকর্মী দেওয়ার জন্য আবেদন করেছি। হাসপাতালটির কলেবর খুব ছোট থাকায় নজরদারি যে কম হচ্ছে, তা মানছি। হাসপাতালটি আরও উন্নত করার চেষ্টা হচ্ছে। রাতে যে ওখানে বহিরাগতেরা আড্ডা বসায় সেই অভিযোগ শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।” |