|
|
|
|
বিপজ্জনক দশম জলপ্রপাতে নামতে পারবেন না পর্যটকেরা
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • রাঁচি
২ জানুয়ারি |
রাঁচির দশম জলপ্রপাতকে আগেই ‘বিপজ্জনক’ ঘোষণা করেছিল পর্যটন দফতর। একের পর এক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর জেরে এ বার জলপ্রপাতের কাছে যাওয়াও নিষিদ্ধ করল প্রশাসন। রাজ্যের পর্যটন সচিব সজল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, দশম জলপ্রপাতে জলের কাছে যেতে পারবেন না পর্যটকেরা। পাহাড়ের উপরে দাঁড়িয়েই তা দেখতে হবে।
বড়দিনে হাজারিবাগের এক কিশোর দশমে ডুবে মারা গিয়েছিল। নতুন বছরের প্রথম দিন, গতকালও সেখানে রাঁচির বাসিন্দা এক যুবক তলিয়ে যান। জল যেখানে আঁছড়ে পড়ছে, সেখানকার একটি জায়গা ‘বিপজ্জনক’ বলে চিহ্নিত করে কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে দিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। তাতেও লাভ হয়নি।
পর্যটন সচিব বলেন, “ওই জলপ্রপাতের কাছাকাছি যাওয়ার সিঁড়ি বন্ধ করে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ যাতে নীচে নামতে না-পারেন সে দিকে পুলিশ নজর রাখবে। এরপরও দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় নিতে হবে স্থানীয় প্রশাসনকেই।”
রাজ্য প্রশাসনের হিসেব, ২০০০ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত দশমে শ’খানেক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গত বছর মৃত্যু হয়েছে আট জনের। ২০১৩ সালের প্রথম দিনও ওই জলপ্রপাতে একজনের প্রাণহানি হয়েছিল। |
দশম জলপ্রপাত। —নিজস্ব চিত্র। |
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, দশম জলপ্রপাতে প্রায় দেড়শো ফুট উপর থেকে জল নীচে পড়ে। জলপ্রপাতের নীচে কমপক্ষে ৩০ ফুট গভীর একটি গর্ত রয়েছে। আশপাশে রয়েছে কয়েকটি পাথর। কিছুটা উঁচু থেকে প্রপাতের নীচে লাফ দিলেই বিপদে পড়তে পারেন কেউ। জলের নীচের পাথরের উপরে পড়তে পারেন তাঁরা। জলের স্রোতে গর্তে তলিয়েও যেতে পারেন। গর্তটি এমনই আকারের, যে সেখানে তলিয়ে গেলে সাঁতরে উঠে আসারও উপায় থাকবে না।
কয়েক মাস আগে পর্যটন দফতর বিপজ্জনক ওই জায়গাটি ঢালাই করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল। দশম প্রপাতের নীচে জমে থাকা জল বের করে দেওয়ার কাজও শুরু হয়। কিন্তু বিভিন্ন মহল থেকে বাধা পাওয়ায় তা আর এগোয়নি।
পর্যটন দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, দশমের কাছে পানসাকাম নামে একটি গ্রাম রয়েছে। দশমের জলে কোনও পর্যটক তলিয়ে গেলে, ওই গ্রামেরই লোকদের মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য ডাকা হয়। অভিযোগ, দেহ তোলার জন্য মৃতের পরিবারের থেকে মোটা টাকা আদায় করে উদ্ধারকারীরা। ৫ থেকে শুরু করে ১১-১২ হাজার টাকা পর্যন্তও দর ওঠে। ঢালাই করে জলপ্রপাতের ওই গর্ত ভরাট করে দিলে রোজগার বন্ধের আশঙ্কায় গ্রামের কয়েকজন কাজে বাধা দেয়। ওই সমস্যার জন্য গতকাল দশমে ডুবে যাওয়া যুবকের দেহ আজও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
সজলবাবু জানিয়েছেন, পুলিশ পাহারায় দশম জলপ্রপাতের ওই বিপজ্জনক গর্ত ভরাট করা ও সেখানকার পরিবেশের উন্নয়নের কাজ শুরু করার জন্য পর্যটন দফতরের তরফে রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে চিঠি পাঠানো হবে। |
|
|
|
|
|