|
|
|
|
রাস্তা বন্ধ, বিমান ভাড়া দ্বিগুণ, পথ খুঁজছে কাশ্মীর
নিজস্ব সংবাদদাতা • জম্মু ও কাশ্মীর
২ জানুয়ারি |
বরফ-ঢাকা কাশ্মীর দেখতে গত কয়েক দিন ধরেই ভিড় জমিয়েছেন দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকেরা। মনের আশ মিটিয়ে তুষারপাত দেখে এ বার তাঁদের ঘরে ফেরার পালা। যা দেখতে এত সাধ করে কাশ্মীর ছুটে আসা এ বার বিপত্তি বাধিয়েছে সেই তুষারপাতই। এই ক’দিনে এত বরফ পড়েছে যে, তিন দিন ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়েছে শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়কে। গোটা দেশের সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরের যোগসূত্র এই একটি মাত্র রাস্তা। সেটি এ ভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাশ্মীর এখন কার্যত সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন।
নিশ্চিতভাবেই এই পরিস্থিতিতে বাড়ি ফিরতে মরিয়া পর্যটকেরা রাস্তা ছেড়ে খোঁজ করছেন আকাশপথের। একই পথ বেছে নিচ্ছেন এখন যাঁরা কাশ্মীর যেতে চাইছেন তাঁরাও। আর এই সময়েই দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে কাশ্মীরের বিমানগুলির ভাড়া। এমনিতে দিল্লি থেকে কাশ্মীর যাওয়ার বা ফেরার বিমানের ভাড়া ৩০০০ থেকে ৪০০০ টাকা। তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০০০ থেকে ৯০০০ টাকা পর্যন্ত। বিমান পরিবহণ সংস্থাগুলির এ হেন আচরণে কার্যত স্তম্ভিত পর্যটকেরা। দিল্লি বা অন্য রাজ্য থেকে যাঁরা এই সময় কাশ্মীর যাওয়ার কথা ভেবেছিলেন তাঁরা হয় যাত্রা শুরুর তারিখ পিছিয়ে দিচ্ছেন, নয়তো ঘুরতে যাওয়াটাই বাতিল করে দিচ্ছেন। কাশ্মীরে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্তরা মেনে নিচ্ছেন এই সিদ্ধান্ত প্রভাব ফেলবে রাজ্যের অর্থনীতির উপর। |
দু’দিন ধরে তুষারপাতে অনন্তনাগে বন্ধ ট্রেন চলাচল। ছবি: পিটিআই। |
কী ভাবে?
রাজ্যের ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ট্যুর অপারেটর্সের চেয়ারম্যান আব্দুল খালিদ ওয়াঙ্গনু জানালেন, তাইল্যান্ড থেকে একটা বড় দলের কাশ্মীর আসার কথা ছিল। কিন্তু এখন বিমানের ভাড়া এতটা বেড়ে গিয়েছে দেখে তাঁরা আর আসতে চাইছেন না। এই ছুটিতে কাশ্মীরের বদলে সুইৎজারল্যান্ড যাচ্ছে তাইল্যান্ডের দলটি। আবদুলের কথায়, “আমরা সারা বছর ধরে চেষ্টা করি যাতে পর্যটকদের কাশ্মীর নিয়ে আসা যায়। তার ফলও মিলছে। প্রচুর ভিড় হচ্ছে। কিন্তু বিমান ভাড়া বেড়ে যাওয়ার জন্য এখন যদি পর্যটকেরা কাশ্মীর ছেড়ে অন্য জায়গা চলে যান, তা হলে সারা বছর ধরে আমাদের খাটনিটাই ব্যর্থ হয়ে যায়।” তিনি আরও জানালেন, “প্রতি বছরই এই ধরনের সমস্যা হয়। অসামরিক বিমান মন্ত্রকের সঙ্গে যাতে রাজ্য সরকার এই বিষয়ে আলোচনা করেন, জানানো হয়েছে তার দাবিও। কিন্তু এখনও পর্যন্ত
তাতে কোনও লাভ হয়নি। তাই হয়রানিও চলছে”।
শুধু পর্যটকেরাই নয়। বিমানের ভাড়া বেড়ে যাওয়ার ফলে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। যেমন, মহম্মদ রমজান। তাঁর দিল্লি আসার কথা ছিল চিকিৎসার জন্য। কিন্তু এখন বিমান ভাড়ার এই অবস্থা দেখে তাঁর মত, “বিমানের ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। এ তো চুরি নয়, ডাকাতি। রাস্তা না খোলা পর্যন্ত দিল্লির যাওয়ার চেষ্টাও করব না। আমার কথা না হয় বাদ দিন। কিন্তু এখন যদি আচমকা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন? তাঁকে চিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে যাওয়াটা পর্যন্ত সম্ভব নয়।” |
|
|
|
|
|