নিজস্ব সংবাদদাতা • সিউড়ি |
বছর দুই আগে নিজের চোখের সামনে বাবার হাতে মাকে খুন হতে দেখেছিল বছর এগারোর মেয়েটি। মূলত তার সাক্ষ্যেই বাবার যাবজ্জীবন সাজা হল বৃহস্পতিবার। সিউড়ির ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক প্রিয়ব্রত দত্ত এই সাজা শোনান। সাজাপ্রাপ্ত সদাইপুর থানার সেলারপুরের বাসিন্দা শেখ শরিফুল। মামলার সরকারি আইনজীবী বিকাশ পৈতণ্ডী জানান, বুধবার শরিফুলকে বিচারক দোষী সাব্যস্ত করেন। এ দিন সাজা শোনানোর পাশাপাশি দোষীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করেন বিচারক। ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী, মেয়ে রুকসানার সাক্ষ্যেই মূলত সাজা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে শ্বশুরবাড়িতে খুন হন রেজিনা বিবি। অভিযোগ উঠেছিল, মেয়ে পড়শির বাড়িতে টিভি দেখতে গিয়েছিল। তাই নিয়ে বচসার জেরে কোদালের কোপ মারেন স্বামী শরিফুল। পেশায় তিনি লোহা ও প্লাস্টিকের ভাঙাচোরা জিনিসের কারবারি ছিলেন। মারাত্মক জখম অবস্থায় ওই বধূকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য তোড়জোনড় করছিলেন পড়শিরা। তখনই মারা যান ওই বধূ। পড়শিরা জানান, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিত্য অশান্তি লেগেই থাকত। ঘটনার পরে রেজিনার বাবা দুর্গাপুরের বাসিন্দা শেখ নিজু জামাই-সহ মেয়ের শ্বশুরবাড়ির ছয় সদস্যের নামে বধূ নির্যাতন ও খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সদাইপুর থানায়। বাকিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি বলে তাঁরা ছাড়া পেয়ে যান। কিন্তু পড়শি ও মেয়ে রুকসানার সাক্ষ্যে দোষী সাব্যস্ত হন শরিফুল।
দাদুর কাছে থেকে দুর্গাপুরের একটি স্কুলে এখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে সে। বাবার সাজা শোনার পর রুকসানার প্রতিক্রিয়া, “আমি খুশি। যে অন্যায় বাবা করেছে তাতে এমনটাই হওয়ার ছিল।” |