যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে বৃহস্পতিবার দিনভর বন্ধ রইল বর্ধমানের মুখ্য ডাকঘর। ফলে স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পের এজেন্ট, পেনশনভোগী, কর্মপ্রার্থী থেকে সাধারণ গ্রাহক সকলেরই ভোগান্তির শেষ ছিল না। মুখ্য ডাকঘর সূত্রে জানানো হয়েছে সার্ভারের সংযোগ ছিন্ন হয়ে যাওয়াতেই এই বিপত্তি। বুধবার বিকেল থেকেই সার্ভারের সমস্যা শুরু হয়। রাতভর কাজ করেও তা সারানো সম্ভব হয়নি। তাই ডাকঘর বন্ধ রাখা হয়েছে।
ডাকঘরের স্বল্পসঞ্চয় এজেন্ট নীলাদ্রীশেখর চন্দ্রের অভিযোগ, সারাদিন ভুগতে হয়েছে তাঁদের। নজিরবিহীন ভাবে এই প্রথম মূল দরজা বন্ধ হয়ে যায়। টাকা জমা দিতে আসা প্রচুর গ্রাহকও ফিরে যান বলে তাঁর দাবি। শহরের ভাতছালার বাসিন্দা জগন্নাথ নন্দী বলেছন, “মেয়ের বিয়ে ক’দিন পরেই। বাজার করতে ৬০ হাজার টাকা তোলার দরকার ছিল। এসে দেখি ডাকঘরের দরজা বন্ধ। কোনও কাজই করতে পারলাম না। কেন ডাকঘর বন্ধ তাও জানতেও পারলাম না।” ছোটনীলপুরের বাসিন্দা শম্ভুনাথ চক্রবর্তীরও অভিযোগ, “মাসিক আয় প্রকল্পে প্রতি বার চার হাজার টাকা পাই। সেই টাকা দিয়েই সংসার চলে। কিন্তু এ দিন টাকা না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছি। জানিনা কী করে দিন চলবে।” শহরের প্রবীণ বাসিন্দা, ডাকঘরের দীর্ঘদিনের গ্রাহক দেবাশিস চৌধুরীও বলেন, “সংযোগ বিচ্ছিন্ন তো হতেই পারে। কিন্তু অনেক কাজই তো হাতে করা হয়। যেমন, খাম বা ডাকটিকিট বিক্রি। সেটাও কেন বন্ধ রইলো, জানি না।” |
ডাকঘর খোলার অপেক্ষায়। —নিজস্ব চিত্র। |
মুখ্য ডাকঘরের সিনিয়র পোস্টমাস্টার সলিলকুমার গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “বুধবার দুপুরের দিকে আমাদের কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক বিকল হয়ে পড়ে। ফলে কম্পিউটার চালু করাই সম্ভব হয়নি। যে সংস্থা আমাদের ওই হার্ড ডিস্ক সরবরাহ করেছে, কলকাতার সেই সংস্থাকে আমরা ততক্ষণাৎ মেল পাঠাই। কিন্তু তারা আসতে পারেনি। স্থানীয় টেকনিশিয়ান দিয়ে সার্ভার ও হার্ড ডিস্ক মেরামতের কাজ শুরু করি। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যম্ত কাজ শুরু করা যায়নি। আশা করি শুক্রবার সকাল থেকে ফের পরিষেবা দিতে পারব।”
কিন্তু যে কাজগুলি হাতে করা সম্ভব তাও হয়নি কেন? সলিলবাবুর দাবি, “প্রতিদিনের সমস্ত লেনদেনের তথ্য কম্পিউটারে নথিভুক্ত না করে কাজ শুরু করা যায়না।” |